লোকসানের বোঝা বইতে না পেরে ২৪ হাজার ৮৮৬ জন স্থায়ী শ্রমিককে স্বেচ্ছা অবসরে (গোল্ডেন হ্যান্ডশেক) পাঠানোর ঘোষণা দিয়ে ২০২০ সালের ১ জুলাই রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলগুলো বন্ধ করে সরকার। এরপর গত ২৩ মাসে শ্রমিকদের পাওনার বড় অংশ পরিশোধ করেছে বাংলাদেশ পাটকল করপোরেশন (বিজেএমসি)।
অন্যদিকে রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলগুলো বন্ধ হওয়ার ছয় বছর আগে থেকে যেসব কর্মকর্তা-কর্মচারী অবসরে গেছেন, তাঁরা কিন্তু গ্রাচ্যুইটি, ভবিষ্য তহবিলসহ অন্যান্য পাওনা পাচ্ছিলেন না। এ জন্য আন্দোলন–সংগ্রাম করে আসছেন তাঁরা।
অবশেষে অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অপেক্ষার প্রহর ফুরাচ্ছে, এমনটাই ইঙ্গিত দিয়েছে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়। বুধবার মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বন্ধ রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলগুলোর অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পাওনা, কাঁচা পাট সরবরাহকারীদের বকেয়া এবং অন্যান্য পাওনা (স্টোর সরবরাহ ও ক্যারিং–সংশ্লিষ্ট সরবরাহকারী) মেটাতে বিজেএমসিকে ৫৭৪ কোটি ১৪ লাখ টাকা বরাদ্দ দিয়েছে সরকার। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিষয়টি জানিয়েছে মন্ত্রণালয়।
মন্ত্রণালয় জানায়, চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের অর্থ বিভাগের সংশোধিত বাজেটে ‘পরিচালন ঋণ’ খাত থেকে বিজেএমসিকে ‘পরিচালন ঋণ’ হিসেবে ৫৭৪ কোটি ১৪ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ১ হাজার ৯৮০ জন অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীর পাওনা পরিশোধে ৩২৭ কোটি ৭ লাখ টাকা, ২ হাজার ২১৭ জন কাঁচা পাট সরবরাহকারীর পাওনা বাবাদ ২৩৪ কোটি ৯১ লাখ টাকা এবং ১ হাজার ১১৯ জন স্টোর সরবরাহ বা ক্যারিং–সংশ্লিষ্ট সরবরাহকারীদের পাওনা বাবদ ১২ কোটি ১৬ টাকা। তবে এই টাকা অন্য কোনো খাতে ব্যয় করা যাবে না।
অর্থ মন্ত্রণালয় ১০ মে এক চিঠিতে বিজেএমসিকে নতুন করে টাকা দেওয়ার বিষয়টি জানায়। এতে বলা হয়, আগামী ২০ বছরে (৫ বছরের গ্রেস পিরিয়ডসহ) ৫ শতাংশ সুদে ষাণ্মাসিক কিস্তিতে ৫৭৪ কোটি ১৪ লাখ টাকা অর্থ পরিশোধ করতে হবে। এ জন্য অর্থ বিভাগের সঙ্গে বিজেএমসিকে একটি ঋণ চুক্তি সম্পাদন করতে হবে।