তাজরীনে অগ্নিকাণ্ড

আট বছরেও বিচার হয়নি

  • আজ মঙ্গলবার তাজরীন ফ্যাশনসের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার আট বছর পূর্তি ।

  • ২০১২ সালের এই দিনে আশুলিয়ার নিশ্চিন্তপুরের তাজরীন ফ্যাশনসে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ১১১ জন পোশাকশ্রমিক পুড়ে মারা যান।

  • আগুন লাগার পরপরই কারখানার তৃতীয় তলার ফটকে তালা মেরে দেওয়া হয়েছিল। সেই ঘটনার মামলার কোনো অগ্রগতি গত এক বছরে হয়নি।

২০১২ সালের এই দিনে আশুলিয়ার নিশ্চিন্তপুরের তাজরীন ফ্যাশনসে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ১১১ জন পোশাকশ্রমিক পুড়ে মারা যান।

তাজরীন ফ্যাশনসের অগ্নিকাণ্ডে ১১১ জন শ্রমিকের প্রাণহানির পেছনে মালিকপক্ষের বড় রকমের গাফিলতি ছিল। আগুন লাগার পরপরই কারখানার তৃতীয় তলার ফটকে তালা মেরে দেওয়া হয়েছিল। সেই ঘটনার আট বছর হতে চললেও বিচার শেষ হয়নি। গত এক বছরে মামলার কোনো অগ্রগতি নেই। মূল আসামি তাজরীনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন বর্তমানে জামিনে আছেন।

এদিকে তাজরীনের আহত বেশ কয়েকজন শ্রমিক প্রেসক্লাবের সামনে ন্যায্য ক্ষতিপূরণ, পুনর্বাসন ও সুচিকিৎসার দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন। ৬৭ দিন ধরে শ্রমিকেরা এই কর্মসূচি পালন করলেও শ্রম মন্ত্রণালয় কোনো আশ্বাস দেয়নি। মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএও কোনো খোঁজ নেয়নি।

এমনই এক পরিস্থিতিতে আজ মঙ্গলবার তাজরীন ফ্যাশনসের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার আট বছর পূর্তি হতে যাচ্ছে। ২০১২ সালের এই দিনে আশুলিয়ার নিশ্চিন্তপুরের তাজরীন ফ্যাশনসে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ১১১ জন পোশাকশ্রমিক পুড়ে মারা যান। শতাধিক শ্রমিক আহত হন। অনেকেই এখনো স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারেননি।

তাজরীনের অগ্নিদুর্ঘটনার পরের বছর সিআইডি অভিযোগপত্র দেয়। আসামিরা হলেন তাজরীনের এমডি মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন, তাঁর স্ত্রী ও প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান মাহমুদা আক্তার, প্রকৌশলী এম মাহবুবুল মোর্শেদ, প্রশাসনিক কর্মকর্তা দুলাল, স্টোর ইনচার্জ হামিদুল ইসলামসহ ১৩ জন। বর্তমানে আসামিরা সবাই জামিনে আছেন। মামলার সাক্ষী ১০৪ জন। তাজরীনের ঘটনায় ২০১৫ সালের ৩ সেপ্টেম্বর প্রতিষ্ঠানটির এমডিসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ধার্য করা হয়। তবে সাক্ষী হাজির না করতে পেরে বারবার সময় নেয় রাষ্ট্রপক্ষ।

জানতে চাইলে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মো. মোর্শেদ উদ্দিন খান গতকাল বলেন, ‘আগামী বছরের জানুয়ারি মধ্যে শুনানিতে সাক্ষীদের হাজির করানোর জন্য জোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি আমরা।’ গত বছরও একই আশ্বাস দিয়েছিলেন তিনি।

বিচার না হওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে সম্মিলিত গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি নাজমা আক্তার প্রথম আলোকে বলেন, তৈরি পোশাকশিল্পে নব্বইয়ের দশক থেকে মালিকদের গাফিলতিতে অগ্নিকাণ্ড ও ভবনের ধসের ঘটনায় অনেক শ্রমিক মারা গেছেন। তবে একটি ঘটনারও বিচার হয়নি। তবে ন্যায্য দাবিতে শ্রমিকেরা আন্দোলন করলেই কালো তালিকাভুক্ত, চাকরিচ্যুত, মামলা, হামলার মতো ঘটনা ঘটে। মালিকপক্ষ প্রভাবশালী হওয়ার কারণেই তাজরীন ফ্যাশনসের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার বিচার হয়নি।