যুক্তরাষ্ট্রে গত ডিসেম্বরের তুলনায় জানুয়ারি মাসে মূল্যস্ফীতি কিছুটা বেড়েছে। এ কারণে দেশটিতে বার্ষিক মূল্যস্ফীতি কমার প্রত্যাশা পূরণ হয়নি। প্রত্যাশিত হারের চেয়ে মূল্যস্ফীতি এখনো বেশি থাকায় উদ্বেগ ছড়িয়েছে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে। এর জেরে গতকাল মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান কয়েকটি শেয়ারবাজার সূচক কমেছে, দীর্ঘমেয়াদি বন্ডের বিক্রি বেড়েছে এবং জাপানি মুদ্রা ইয়েনের বিপরীতে ডলার আরও শক্তিশালী হয়েছে।
রয়টার্স জানিয়েছে, জানুয়ারি মাসে যুক্তরাষ্ট্রে মূল্যস্ফীতি দশমিক ৩ শতাংশ বেড়েছে। এতে জানুয়ারি মাসে দেশটির বার্ষিক মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৩ দশমিক ১ শতাংশ। বিশ্লেষকেরা অনুমান করেছিলেন, জানুয়ারিতে বার্ষিক মূল্যস্ফীতি কমে অন্তত ২ দশমিক ৯ শতাংশ হবে।
বিনিয়োগকারীদের আশঙ্কা, মূল্যস্ফীতি মোকাবিলায় যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভ সুদের হার আরও বাড়িয়ে দিতে পারে কিংবা প্রত্যাশিত সময়ের চেয়ে বেশি সময়ের জন্য উচ্চ সুদহার ধরে রাখবে। এর সরাসরি প্রভাব পড়েছে দেশটির শেয়ারবাজারের সূচকে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান তিনটি শেয়ারবাজার সূচক—ডাও জোন্স ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যাভারেজ, এসঅ্যান্ডপি ৫০০ ও নাসডাক কম্পোজিট প্রতিটিই ১ শতাংশের বেশি কমেছে। আর গত ১১ মাসের মধ্যে এক দিনের হিসাবে ডাও জোন্সের সূচকের সবচেয়ে বেশি অবনমন হয়েছে। ডাও জোন্স ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যাভারেজ ১ দশমিক ৩৫ শতাংশ কমেছে। আর এসঅ্যান্ডপি ১ দশমিক ৩৭ শতাংশ ও নাসডাক ১ দশমিক ৮ শতাংশ কমেছে।
মিনেসোটার সম্পদ ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠান বিএমও ফ্যামিলি অফিসের প্রধান বিনিয়োগ কর্মকর্তা ক্যারল শ্লেইফ বলেন, মূল্যস্ফীতির হারকে শেয়ারবাজার বেশ কঠোরভাবে নিচ্ছে। আগামী মার্চ নাগাদ ফেডের নীতি সুদহার কমানোর যে সম্ভাবনা ছিল, সেই সম্ভাবনা এখন কমে গেছে। ফলে ধারণা করা হচ্ছে, আগামী ১১-১২ জুন অনুষ্ঠেয় সভার আগপর্যন্ত দেশটিতে সুদহার আর কমবে না।
এদিকে সুদহার বেশি থাকায় মার্কিন ডলারের দামেও প্রভাব পড়েছে। মঙ্গলবার জাপানি ইয়েনের বিপরীতে ডলারের দাম গত তিন মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ অবস্থানে পৌঁছেছে। সাধারণত উচ্চ সুদহার থাকলে অর্থঋণ দিয়ে বেশি রিটার্ন পাওয়া যায়। এ কারণে উচ্চ সুদহার বিদেশি বিনিয়োগকারীকে আকর্ষণ করে। আর বিদেশি বিনিয়োগকারীরা এলে মুদ্রার (এ ক্ষেত্রে মার্কিন ডলার) দামও বৃদ্ধি পায়।