ঢাকা ওয়াসাকে নির্মাণাধীন ভবনের জন্য পানির পৃথক দর নির্ধারণের অনুরোধ জানিয়েছেন আবাসন ব্যবসায়ীদের সংগঠন রিহ্যাব। সংগঠনটি বলেছে, কোনো ট্যারিফ নির্ধারিত না থাকায় নির্মাণাধীন প্রকল্পে পানির বিল বাণিজ্যিক হিসেবে পরিশোধ করতে হয়। নির্মাণাধীন প্রকল্প ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের পানির ব্যবহার একধরনের নয়। তাই এ রকম প্রকল্পের জন্য আবাসিক ও বাণিজ্যিকের মাঝামাঝি একটি রেট বা দর নির্ধারণ করা প্রয়োজন।
রিহ্যাবের সভাপতি মো. ওয়াহিদুজ্জামান গত সপ্তাহে ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. ফজলুর রহমানকে দেওয়া এক আবেদনে পানির পৃথক দর নির্ধারণের অনুরোধ জানান। এতে তিনি পানির মিটার ও পয়োনিষ্কাশন নালা নিয়ে একাধিক অভিযোগ করেন।
আবেদনে মো. ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, আবাসিক বাড়ি ভেঙে নির্মাণকাজ শুরু করলে ওয়াসা কর্তৃপক্ষ স্বয়ংক্রিয়ভাবে বাণিজ্যিক রেটে পানির বিল ইস্যু করে। তবে নির্মাণকাজ শেষে আবাসিক হিসেবে ব্যবহার শুরু হলেও স্বয়ংক্রিয়ভাবে আবাসিক বিল ইস্যু করা হয় না। এ ক্ষেত্রে আবাসিকে রূপান্তরের জন্য আবেদন করলে ছাদ মাপে প্রতি বর্গফুট হিসেবে বিল করে গ্রাহককে হয়রানি করা হয়। অবৈধ সুবিধা দাবিও করেন কোনো কোনো কর্মকর্তা। দাবি পূরণ না করলে মাসের পর মাস বাণিজ্যিক হিসেবে বিল পরিশোধ করতে হয়। তাই নির্মাণকাজ শেষে ভবনের ছাদের মাপে প্রতি বর্গফুট হিসাবে বিল করার ব্যবস্থা বাতিল করা হোক।
রিহ্যাব সভাপতি বলেন, ওয়াসার সরবরাহ করা পানির মিটারগুলো খুবই নিম্নমানের। ছয় মাস না যেতেই মিটারের ডিসপ্লে নষ্ট হয়ে যায়; কিছু অসাধু রিডিংম্যান ইচ্ছেমতো বিল ধরিয়ে দেন। আবার অনৈতিক সুবিধার বিনিময়ে রিডিং কম দেখিয়ে বিল ইস্যুর ঘটনা ঘটে। এতে সরকার যেমন রাজস্ব হারাচ্ছে, তেমনি গ্রাহকেরা ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। এসব বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানান তিনি।
মো. ওয়াহিদুজ্জামান অভিযোগ করে বলেন, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) যেসব এলাকায় ওয়াসার পানির লাইন নেই, সেখানে সাবমার্সিবল পাম্প বসিয়ে নির্মাণকাজ করলেও ওয়াসা কর্তৃপক্ষ বিল ইস্যু করে। সেই বিল পরিশোধ করতে হয়। যেহেতু ওয়াসার কোনো লাইনই নেই, সেহেতু কোনোভাবেই বিল করা যুক্তিযুক্ত নয়। যেসব এলাকায় ওয়াসার লাইন নেই, সেখানে ওয়াসার বিল না করার নির্দেশ দেওয়ার জন্য অনুরোধ জানান রিহ্যাব সভাপতি।
নির্মাণাধীন ভবনের পয়োনিষ্কাশন বিল দেওয়ার অনুরোধ করে রিহ্যাব সভাপতি বলেন, খালি প্লটে ভবন নির্মাণকাজ চলাকালে পয়োনিষ্কাশন নালা থাকে না। আবার পুরোনো স্থাপনা ভেঙে নতুন ভবন নির্মাণকালে পয়োনিষ্কাশন নালা বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। ওই সময়ে অস্থায়ী টয়লেট তৈরি করে নির্মাণকাজ পরিচালনা করা হয়। তার পরও ওয়াসাকে দ্বিগুণ হারে পয়োনিষ্কাশন বিল পরিশোধ করতে হয়, যা কোনোভাবেই যুক্তিযুক্ত নয়।