টেকনো ড্রাগসের প্রাথমিক গণপ্রস্তাব বা আইপিওতে যাঁরা ১০ হাজার টাকার আবেদন করেছেন, তাঁরা পাবেন মাত্র ১১টি শেয়ার আর যাঁরা ১ লাখ টাকার শেয়ারের জন্য আবেদন করেছিলেন, তাঁরা পাবেন ১১০টি শেয়ার। যেসব বিনিয়োগকারী সর্বোচ্চ ১০ লাখ টাকার শেয়ারের জন্য আবেদন করেছিলেন, তাঁরা পাবেন ১ হাজার ১৬৬টি শেয়ার।
তবে প্রবাসী বাংলাদেশিরা একটু বেশি শেয়ার বরাদ্দ পাবেন কোম্পানিটির আইপিওতে। প্রবাসী বাংলাদেশিদের মধ্যে যাঁরা ১০ হাজার টাকার আবেদন করেছেন, তাঁরা পাবেন ২০টি শেয়ার আর সর্বোচ্চ ১০ লাখ টাকার একেকজন আবেদনকারী পাবেন ২ হাজার ১৬টি শেয়ার।
কোম্পানিটির আইপিও শেয়ারের জন্য রেকর্ড পরিমাণ আবেদন জমা পড়াতে আবেদনকারীরা তাঁদের আবেদনের বিপরীতে হাতে গোনা কিছু শেয়ার পাবেন। আজ মঙ্গলবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) কোম্পানিটির আইপিওতে আবেদনকারীদের মধ্যে আনুপাতিক হারে এ শেয়ার বরাদ্দের তথ্য মিলেছে। আইপিও লটারি প্রথা বাতিলের পর বর্তমানে শেয়ারবাজারে আইপিওর ক্ষেত্রে শেয়ার বরাদ্দ করা হয় আবেদনের আনুপাতিক হারে।
বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে শেয়ারবাজারে আসা টেকনো ড্রাগস সাধারণ বিনিয়োগকারীদের জন্য যে শেয়ার বরাদ্দ রেখেছিল, তার বিপরীতে প্রায় ২৫ গুণ বেশি আবেদন জমা পড়ে। পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) শর্ত অনুযায়ী, এটির শেয়ারে একজন বিনিয়োগকারী সর্বনিম্ন ১০ হাজার থেকে সর্বোচ্চ ১০ লাখ টাকার শেয়ারের জন্য আবেদনের সুযোগ ছিল। ব্যক্তিশ্রেণির সাধারণ বিনিয়োগকারীদের জন্য প্রতিটি শেয়ারের দাম ছিল ২৪ টাকা। সেই হিসাবে ১০ হাজার টাকার আবেদন যিনি করেছিলেন, তিনি মূলত ৪১৭টি শেয়ারের জন্য টাকা জমা দেন। তার বিপরীতে পাবেন মাত্র ২৬৪ টাকা সমমূল্যের ১১টি শেয়ার আর যিনি ১০ লাখ টাকার আবেদন করেছিলেন তিনি ৪১ হাজার ৬৬৭টি শেয়ারের জন্য টাকা জমা দিয়েছিলেন। তার বিপরীতে ওই বিনিয়োগকারী পাচ্ছেন প্রায় ২৮ হাজার টাকার সমমূল্যের ১ হাজার ১৬৬টি শেয়ার।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, সাধারণ বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আইপিওতে কোম্পানিটির শেয়ার পেতে দেশে বসবাসকারী ও প্রবাসী মিলিয়ে প্রায় ১ লাখ ১২ হাজার ২৩৯ জন বিনিয়োগকারী আবেদন করেন। এসব আবেদনকারী কোম্পানিটির শেয়ার কিনতে সম্মিলিতভাবে জমা দিয়েছেন ২ হাজার ৩৯৮ কোটি টাকা। এর মধ্যে দেশে বসবাসকারী ১ লাখ ১০ হাজার ৬৩৬ জন বিনিয়োগকারী জমা দিয়েছেন ২ হাজার ৩২২ কোটি টাকা আর ১ হাজার ৬০৩ জন প্রবাসী বাংলাদেশি জমা দিয়েছেন প্রায় ৭৬ কোটি টাকা।
বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে টেকনো ড্রাগস শেয়ারবাজার থেকে ১০০ কোটি টাকা সংগ্রহের উদ্যোগ নেয়। এই ১০০ কোটি টাকার মধ্যে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে সংগ্রহ করা হবে ২৬ কোটি টাকা, সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে ৫৬ কোটি টাকা আর কোম্পানির কর্মকর্তা–কর্মচারীদের জন্য বরাদ্দ ছিল ১৮ কোটি টাকার সমমূল্যের শেয়ার। তবে কোম্পানির কর্মকর্তা–কর্মচারীদের জন্য বরাদ্দকৃত ১৮ কোটি টাকার শেয়ারের বিপরীতে আবেদন পড়েছে ৫ কোটি টাকার শেয়ারের। ফলে বাকি ১৩ কোটি টাকার সমমূল্যের শেয়ার নিয়ম অনুযায়ী সাধারণ বিনিয়োগকারীদের মধ্যে বরাদ্দ করা হয়।
বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে দরপ্রস্তাবের মাধ্যমে কোম্পানিটির শেয়ারের বিক্রয়মূল্য বা অফার প্রাইস নির্ধারিত হয় ৩৪ টাকা। প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা ওই দামেই কোম্পানিটির শেয়ার কিনেছেন। তবে ব্যক্তিশ্রেণির সাধারণ বিনিয়োগকারীদের জন্য কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ারের দাম ছিল ২৪ টাকা।