নতুন উচ্চতায় বিদ্যুৎ-চালিত গাড়ি
নতুন উচ্চতায় বিদ্যুৎ-চালিত গাড়ি

চীনা বিদ্যুৎ–চালিত গাড়ি নিয়ে তদন্ত শুরু ইউরোপীয় ইউনিয়নের

ইউরোপীয় ইউনিয়ন চীনের বিদ্যুৎ-চালিত গাড়ি নির্মাতা কোম্পানির বিরুদ্ধে তদন্ত করবে। ইউরোপের বিদ্যুৎ-চালিত গাড়ি নির্মাতাদের সুরক্ষা দিতে চীনের গাড়িতে শাস্তিমূলক শুল্ক আরোপ করা হবে কি না, তা খতিয়ে দেখতে ইউরোপীয় কমিশন এ তদন্ত কার্যক্রম হাতে নিচ্ছে। বিষয়টির সঙ্গে সম্পৃক্ত তিনটি সূত্র রয়টার্সকে এ খবর জানিয়েছে।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের তদন্তকারীরা চীনের কোম্পানি বিওয়াইডি, গিলি ও সাইকের কার্যালয় সফর করবে। কিন্তু অন্যান্য দেশের যেসব ব্র্যান্ড চীনে গাড়ি উৎপাদন করছে, যেমন টেসলা, রেনো ও বিএমডব্লিউ, তাদের কার্যালয় সফর করবে না ইউরোপীয় কমিশনের তদন্তকারী কর্মকর্তারা।

গত অক্টোবর মাসে এ কর্মসূচি শুরু হয়েছে। এ নিরীক্ষা চলবে আগামী ১৩ মাস। এর লক্ষ্য হচ্ছে, চীনের গাড়ি কোম্পানিগুলো সরকারের অন্যায্য ভর্তুকি পেয়ে প্রতিযোগিতায় এগিয়ে থাকছে কি না, তা খতিয়ে দেখা। চীন ইউরোপীয় ইউনিয়নের এই তদন্তকে সুরক্ষাবাদী অবস্থান হিসেবে আখ্যা দিয়েছে। যথারীতি এ তদন্তের কারণে চীনের সঙ্গে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সম্পর্কে টানাপোড়েন সৃষ্টি হয়েছে।

তবে যা-ই হোক না কেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন বলেছে, তারা এ তদন্ত কার্যক্রম চালিয়ে যাবে।

ইউরোপীয় কমিশনের মুখপাত্র ওলোফ গিল বলেছেন, কমিশন চীনা ও ইউরোপীয় উৎপাদকদের প্রতিনিধিদের একটি তালিকা তৈরি করেছে। ইতিমধ্যে তাদের কাছে প্রশ্নমালা পাঠানো হয়েছে, এমনকি তারা সেটার জবাবও দিয়েছে। কমিশন জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসে তাদের কার্যালয় সফর করবে।

এ বিষয়ে চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, বিওয়াইডি ও সাইকের সঙ্গে রয়টার্স যোগাযোগ করলেও তারা তাৎক্ষণিকভাবে প্রশ্নের জবাব দেয়নি। গিলি জবাব দিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে বলে, অক্টোবর মাসে তারা যে বিবৃতি দিয়েছিল, সেখানে তারা বলেছে যে সব আইনকানুন যথাযথভাবে প্রতিপালন করা হয়েছে।

ইউরোপীয় কমিশন বলেছে, বিদ্যুৎ-চালিত গাড়িতে চীন সরকারের ভর্তুকি দেওয়ার বিষয়টি এখন যাচাইয়ের প্রাথমিক পর্যায়ে আছে। প্রশ্নমালার জবাব যাচাই-বাছাই করার জন্য তদন্ত কমিটি আগামী ১১ এপ্রিল চীনে যাবে।

এদিকে পাল্টা জবাব দিতে শুরু করেছে চীন। ইউরোপ থেকে আমদানি করা ব্র্যান্ডিতে অ্যান্টি ডাম্পিং শুল্ক আরোপ করা যায় কি না, গত সপ্তাহেই তারা তা খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছে। এটা মূলত ফ্রান্সের উদ্দেশে করা হয়েছে। কারণ, বিদ্যুৎ-চালিত গাড়ির বিষয়ে তদন্ত করার ক্ষেত্রে এ দেশই সবচেয়ে আগ্রহী।

চীনে তৈরি বিদ্যুৎ-চালিত গাড়ির বাজার হিস্যা ইউরোপে এখন ৮ শতাংশ, ২০২৫ সালের মধ্যে যা ২৫ শতাংশে উঠে যেতে পারে।

চীনের অর্থনৈতিক অবস্থা খারাপ হলেও গত কয়েক বছরে দেশটির অর্থনীতির সবচেয়ে উজ্জ্বল খাত হচ্ছে গাড়িশিল্প। এমনকি ২০২৩ সালে গাড়ি রপ্তানিতে তারা জাপানকেও ছাড়িয়ে গেছে। ইউরোপীয় কোম্পানিগুলো এখন শঙ্কিত, পাছে চীনের গাড়ির কাছে বাজার না হারাতে হয়। বিশ্লেষকেরা মনে করেন, সে কারণেই ইউরোপীয় ইউনিয়নের এতটা তোড়জোড়।

বিশ্লেষকেরা মনে করেন, প্রযুক্তি খাতের মতো গাড়ি খাতেও চীনের উত্থান ঠেকিয়ে রাখতে উঠেপড়ে লেগেছে পশ্চিমারা।