চাল রপ্তানি সীমিত করতে একের পর এক ব্যবস্থা নিচ্ছে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। সেই ধারাবাহিকতায় এবার বাসমতী চাল রপ্তানিতে টনপ্রতি ন্যূনতম মূল্য বেঁধে দিয়েছে তারা। ফলে ভারতের ব্যবসায়ীদের বাসমতী চাল রপ্তানি করতে হবে টনপ্রতি কমপক্ষে ১ হাজার ২০০ ডলার দরে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের সংবাদে বলা হয়েছে, সামনে ভারতের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ রাজ্য নির্বাচন, তার আগে স্থানীয় বাজারে চালের দাম যেন না বাড়ে, তা নিশ্চিত করতেই বিজেপি সরকার নানা পদক্ষেপ নিচ্ছে।
ইকোনমিক টাইমসের খবরে বলা হয়েছে, বাসমতী চালের চালানের মূল্য টনপ্রতি ১ হাজার ২০০ ডলারের নিচে হলে তা স্থগিত করে অ্যাগ্রিকালচারাল অ্যান্ড প্রসেসড ফুড প্রোডাক্টস এক্সপোর্ট ডেভেলপমেন্ট অথরিটির (এপিইডিএ) কাছে পাঠাতে পারে, যাদের হাতে বাসমতী চালের রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ।
ভারতের ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফরেন ট্রেডের তথ্যানুসারে, ভারতে চালের দাম গত এক বছরে ১১ শতাংশ বেড়েছে, আর এক মাসে বেড়েছে ৩ শতাংশ। এ অবস্থায় পর্যাপ্ত সরবরাহ নিশ্চিত করা এবং দাম নিয়ন্ত্রণে রাখার উদ্দেশ্যে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার রপ্তানি নীতিতে এ পরিবর্তন আনছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।
ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার বাসমতী ছাড়া অন্যান্য সাদা চালের রপ্তানি আগেই নিষিদ্ধ করেছিল। এরপর গত শুক্রবার সেদ্ধ চালের রপ্তানিতেও ২০ শতাংশ শুল্কারোপ করে মোদি সরকার।
কিন্তু কোনো কোনো ব্যবসায়ী সাদা চালকে বাসমতী চাল হিসেবে মোড়কজাত করে রপ্তানির চেষ্টা করছিলেন বলে অভিযোগ ওঠে। ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার মনে করছে, এবার বাসমতী চালের রপ্তানিমূল্য বেঁধে দেওয়ার কারণে সেই প্রবণতা কমবে।
এদিকে সামনে ভারতের উৎসবের মৌসুম। বিশেষজ্ঞদের মতে, এ সময় দ্রুত খাদ্যপণ্যের দাম না কমানো গেলে মানুষের ক্ষোভ বাড়তে পারে। তাই ১৫ আগস্ট ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে দামের বোঝা কমানোর আশ্বাস দিয়েছেন।
এ অবস্থায় শুক্রবার রাতে ভারতের অর্থ মন্ত্রণালয় সেদ্ধ চালে ২০ শতাংশ রপ্তানি শুল্ক বসানোর বিজ্ঞপ্তি জারি করে, যার মেয়াদ ১৬ অক্টোবর পর্যন্ত। এতে তখন বাসমতী বাদে বাকি সব ধরনের চাল রপ্তানি সীমিত হয়েছে। এরপর সরকার বাসমতী চালের রপ্তানিমূল্য বেঁধে দিয়ে চাল রপ্তানি কার্যত অসম্ভব করে তুলেছে। এর আগে গত বছরের সেপ্টেম্বরে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার খুদ রপ্তানি নিষিদ্ধ করেছিল।
বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, ভোটের মুখে কেন্দ্রের সামনে দ্রুত জোগান বাড়িয়ে দাম কমানোর অন্যতম পথ এটাই। তবে এতে বিশ্ববাজারে সরবরাহ কমায় খাদ্যসংকট বৃদ্ধির আশঙ্কাও থাকছে।