বাজারে বেড়েছে কাঁচা মরিচের দাম। সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ ৪০-৬০ টাকা বেশি দামে কিনছেন গ্রাহকেরা। এর পাশাপাশি বেড়েছে বিভিন্ন প্রকার সবজির দাম। তবে কয়েক ধরনের মাছ, ব্রয়লার ও সোনালি মুরগি এবং ফার্মের মুরগির ডিমের দাম সামান্য কমেছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর শেওড়াপাড়া, মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেট ও টাউন হল বাজারে সরেজমিন ঘুরে ও বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জিনিসপত্রের দরদামের এসব তথ্য জানা গেছে।
বিক্রেতারা জানান, বাজারে নিত্যব্যবহার্য পণ্যের সরবরাহ পরিস্থিতি তুলনামূলক স্বাভাবিক হয়েছে। এর আগে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন ও সরকার পরিবর্তনের পর সৃষ্ট সহিংস পরিস্থিতিতে এক মাস ধরে জিনিসপত্রের দামে বেশ ওঠানামা ছিল। এখন অধিকাংশ পণ্যের ক্ষেত্রে দাম অনেকটা ‘স্থিতিশীল’ পর্যায়ে এসেছে।
বাজারে দীর্ঘ সময় ধরে উচ্চ দামে বিক্রি হচ্ছে পেঁয়াজ ও আলু। প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ এখন ১১০-১২০ টাকা ও আলু ৬০-৬৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সরকারি সংস্থা টিসিবির তথ্য অনুসারে, গত এক বছরের ব্যবধানে আলুর দাম ৫০ শতাংশ ও পেঁয়াজের দাম ৩০ শতাংশ বেড়েছে।
বন্যা ও খরার কারণে উৎপাদন কমায় কোরবানি ঈদের সময় খুচরা বাজারে কাঁচা মরিচের দাম উঠেছিল ৪০০-৫০০ টাকা কেজি। এরপর জুলাই মাসে দেশজুড়ে সহিংস পরিস্থিতির মধ্যেও মরিচের দাম ৩৫০ টাকা ছাড়ায়; যা চলতি মাসের শুরুতে কমে আসে। গত সপ্তাহে প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ বিক্রি হয়েছিল ১৮০-২০০ টাকায়। তবে গতকাল সেই দাম আবার বেড়েছে; ২৪০-২৬০ টাকা দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে।
বাজারে দীর্ঘ সময় ধরে উচ্চ দামে বিক্রি হচ্ছে পেঁয়াজ ও আলু। প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ এখন ১১০-১২০ টাকা ও আলু ৬০-৬৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সরকারি সংস্থা টিসিবির তথ্য অনুসারে, গত এক বছরের ব্যবধানে আলুর দাম ৫০ শতাংশ ও পেঁয়াজের দাম ৩০ শতাংশ বেড়েছে।
এদিকে সপ্তাহের ব্যবধানে বাজারে কয়েক ধরনের মাছ এবং ব্রয়লার ও সোনালি মুরগির দাম কমেছে। গতকাল প্রতি কেজি রুই ৩২০-৩৫০ টাকা, তেলাপিয়া ২২০-২৫০ টাকা ও পাঙাশ মাছ ২০০-২২০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। আগের দুই সপ্তাহে এসব মাছে কেজিতে ৩০-৫০ টাকা বাড়তি দাম ছিল। ইলিশ মাছ ও গরুর মাংসের দামও কিছুটা কমেছে। এ ছাড়া ফার্মের মুরগির বাদামি ডিমের দাম ডজনে ৫ টাকা কমে ১৪৫ টাকা হয়েছে।
গতকাল বিভিন্ন প্রকার সবজিও আগের সপ্তাহের তুলনায় কিছুটা বেশি দামে বিক্রি হয়েছে। যেমন গতকাল বাজারভেদে প্রতি কেজি পটোল, ঢ্যাঁড়স, ঝিঙে ও চিচিঙ্গা ৫০ থেকে ৭০ টাকায় বিক্রি হয়েছে; আর বরবটি, বেগুন, করলা ও কাঁকরোল বিক্রি হয়েছে ৭০-৮০ টাকায়। এসব সবজির দাম সাত দিন আগে অন্তত ১০-২০ টাকা কম ছিল।
সবজির আড়তদারেরা জানান, সহিংসতা ও ডাকাতির আশঙ্কায় গত সপ্তাহে সবজি পণ্যের সরবরাহ কম ছিল। এতে বিভিন্ন উৎপাদন স্থল বা পাইকারি মোকামে কম দামে সবজি বিক্রি হয়েছিল। এখন সবজির সরবরাহ ঠিক হয়েছে এবং সড়কে চাঁদাবাজিও নেই। এ কারণে বাজারে বর্তমানে ‘স্বাভাবিক দামে’ সবজি বিক্রি হচ্ছে।
তবে সাধারণ ভোক্তারা এ ধরনের কথা মানতে নারাজ। যেমন মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটে কথা হয় গৃহিণী আফরোজা বেগমের সঙ্গে। তিনি বলেন, আগের সরকার চলে যাওয়ার পর গত সপ্তাহে সবজির দাম অনেকটাই কম ছিল। ব্যবসায়ীরা এত সবজি লোকসানে তো বিক্রি করেননি; কিন্তু এখন আবার দাম বাড়ছে। বাজারে তদারকি থাকলে এই দাম বাড়ানো আটকানো যেত।