হুমায়রা আজম, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, ট্রাস্ট ব্যাংক
হুমায়রা আজম, ব্যবস্থাপনা পরিচালক,
ট্রাস্ট ব্যাংক

ডিজিটালাইজেশন একটা যাত্রা, গন্তব্য নয়

সাম্প্রতিক বছরগুলোয় আর্থিক খাত ডিজিটাল বিপ্লবের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। প্রায় সব আর্থিক প্রতিষ্ঠান ডিজিটাল রূপান্তরের উদ্যোগ নিয়ে কাজ করছে। অনলাইন ব্যাংকিং, মুঠোফোন অ্যাপ ও ডিজিটাল ওয়ালেট দ্রুত ও সহজ লেনদেনের সুযোগ করে দিচ্ছে। উদ্দেশ্য হলো বিশাল ও দ্রুত বর্ধনশীল তথ্যপ্রযুক্তিতে দক্ষ গ্রাহকের প্রত্যাশা পূরণ করা। 

এই ধারাবাহিকতায় ক্রেডিট কার্ড, ডেবিট কার্ড, ই-কমার্স লেনদেন আগের চেয়েও নিরাপদ ও নিরবচ্ছিন্ন হয়েছে। কিউআর কোড প্রযুক্তি ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী পর্যায়ে ছোট ছোট লেনদেন সম্ভব করেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের বাংলা কিউআর কোড উদ্যোগ আর্থিক অন্তর্ভুক্তির ক্ষেত্রে বিশেষভাবে প্রশংসনীয়। 

সামগ্রিকভাবে আর্থিক খাত ডিজিটালাইজেশনের দিকে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করছে। এটি একটি যাত্রা, গন্তব্য নয়। আমরা আশা করতে পারি, আগামী বছরগুলোয় অব্যাহত উদ্ভাবন ও নতুন নতুন ডিজিটাল সেবা চালুর মাধ্যমে এ ক্ষেত্রে ব্যাপক প্রসার হবে। 

প্লাস্টিক কার্ড থেকে মুঠোফোন অ্যাপে রূপান্তর ডিজিটাল সেবাক্ষেত্রে একটি উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন। তথ্যপ্রযুক্তিতে দক্ষ ও তরুণ জনগোষ্ঠীর মধ্যে মুঠোফোন অ্যাপ ব্যবহারের স্পষ্ট আগ্রহ রয়েছে। কারণ, অ্যাপগুলো কার্ডের চেয়ে বেশি সুবিধাজনক ও সহজলভ্য এবং যেকোনো সময়, যেকোনো জায়গা থেকে লেনদেন করা সম্ভব।

অবশ্য এখনো কিছু গ্রাহক ব্যাংক কার্ড ব্যবহার করতে পছন্দ করেন এবং নিরাপদ মনে করেন। কিন্তু ধারণা করা যায়, ভবিষ্যতে অ্যাপ ব্যবহারকারীর সংখ্যা আরও বাড়বে। মুঠোফোন অ্যাপ ব্যবহার করে গ্রাহকেরা ঘরে বসেই বিল পরিশোধ, টাকা পাঠানোসহ সব ধরনের লেনদেন করতে পারছেন। আমাদের প্রায় তিন লাখ অ্যাপ ব্যবহারকারী রয়েছেন, যাঁরা নিয়মিত ডিজিটাল লেনদেন করেন। পবিত্র ঈদুল ফিরতের আনন্দকে আরও বাড়িয়ে দিতে ট্রাস্ট ব্যাংক কার্ডধারীদের জন্য নিয়ে এসেছে আকর্ষণীয় অফার। 

ক্রেডিট কার্ড জীবনযাত্রার মান উন্নত করেছে। এটি কেবল ঋণ নয়, বরং আর্থিক লেনদেনে সুবিধা। ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারকারীরা বিভিন্ন সুবিধা পান। যেমন কেনাকাটায় ছাড়, কিস্তিতে কেনাকাটা, বিভিন্ন লাউঞ্জে প্রবেশাধিকার ও বিশেষ সুবিধা। সারা বছর বিভিন্ন অফার থাকে। এটি গ্রাহকদের আরও বেশি লেনদেন করতে উৎসাহিত করে। 

ডিজিটাল সেবা উন্নয়নে সরকারের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। তাদের উচিত ডিজিটাল সেবার সুবিধা সম্পর্কে জনগণকে সচেতন করতে প্রচারণা চালানো। গ্রামীণ জনগণের কাছে পৌঁছানোর জন্য স্থানীয় ভাষা ও মাধ্যম ব্যবহার করা জরুরি।