সমুদ্রপথে পণ্য পরিবহন

চট্টগ্রামে ভাটার টান, জোয়ারের ঢেউ মোংলা-পায়রায়

পদ্মা সেতুর কারণে সড়কপথে যোগাযোগ সহজ হওয়ায় দক্ষিণাঞ্চলের মোংলা বন্দর দিয়ে পণ্য পরিবহনে নতুন সুযোগ তৈরি হয়েছে। তাতে সমুদ্রপথে পণ্য পরিবহনে চট্টগ্রামের বৃহৎ অংশীদারিতে কিছুটা ভাটা পড়ছে। অংশীদারি বাড়ছে মোংলা ও পায়রা বন্দরে।

সমুদ্রপথে দেশের আমদানি-রপ্তানি পণ্য পরিবহন হয় তিনটি সমুদ্রবন্দর দিয়ে। এই তিন সমুদ্রবন্দরের মধ্যে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি পণ্য আনা-নেওয়া হয়। তবে ৯ বছরের ব্যবধানে সমুদ্রপথে পণ্য পরিবহনে চট্টগ্রামের একচেটিয়া অংশীদারি সামান্য কিছু কমেছে। চট্টগ্রামের এই অংশীদারি নিতে শুরু করেছে মূলত মোংলা বন্দর। সমুদ্রপথের বাণিজ্যের অংশীদারিতে যুক্ত হয়েছে নতুন সমুদ্রবন্দর পায়রাও। 

পদ্মা সেতুর কারণে সড়কপথে যোগাযোগ সহজ হওয়ায় দক্ষিণাঞ্চলের মোংলা বন্দর দিয়ে পণ্য পরিবহনে নতুন সুযোগ তৈরি হয়েছে। সদ্য বিদায়ী ২০২২-২৩ অর্থবছরে ঢাকার মিরপুর, গাজীপুর ও সাভার থেকে শতাধিক পোশাক চালান মোংলা দিয়ে রপ্তানি হয়েছে। যেগুলো একসময় চট্টগ্রাম বন্দর দিয়েই রপ্তানি হতো। আবার মোংলা বন্দর দিয়ে পণ্য পরিবহনের তালিকায় নতুন যুক্ত হয়েছে বিদ্যুৎকেন্দ্র ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কয়লা আমদানি। এতে পণ্য পরিবহনে মোংলার অংশীদারি বাড়ছে। আবার এক দশক আগে প্রতিষ্ঠিত পটুয়াখালীর পায়রা সমুদ্রবন্দরের বহির্নোঙরে স্থানান্তরের মাধ্যমে এখন তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রের কয়লা আমদানি হচ্ছে। এর বাইরে আছে পাথর আমদানি। মোংলা ও পায়রায় নতুন দুটি টার্মিনাল নির্মাণের কাজ চলছে। টার্মিনাল দুটি নির্মাণ হলে সমুদ্রপথে পণ্য পরিবহনে মোংলা ও পায়রার অংশীদারি আরও বাড়বে বলে বন্দর দুটির কর্মকর্তারা আশা করছেন।   

বন্দর খাতের অভিজ্ঞজনেরা বলছেন, একক বন্দরনির্ভরতা বৈদেশিক বাণিজ্যে সব সময় ঝুঁকি তৈরি করে। বাংলাদেশে এই ঝুঁকি আরও বেশি। কারণ, কর্ণফুলী নদীর সরু নৌপথ অতিক্রম করে চট্টগ্রাম বন্দরে পণ্য আনা-নেওয়া করতে হয়। কোনো কারণে এই নৌপথে বড় দুর্ঘটনা হলে বৈদেশিক বাণিজ্য বিশেষ করে কনটেইনারে পণ্য আমদানি-রপ্তানিতে বড় ধরনের ব্যাঘাত তৈরি করবে। এ জন্য কারখানার কাঁচামাল আমদানি ও রপ্তানি পণ্য পরিবহনের জন্য বড় বড় শিল্পাঞ্চলের কাছাকাছি বন্দর সুবিধা দরকার। চট্টগ্রামের মতো অন্য জায়গায় বন্দর সুবিধা বাড়লে দেশের শিল্পায়নেও তা সহায়ক হবে। বিশেষ করে রপ্তানিমুখী শিল্পকারখানাগুলো কাঁচামাল দ্রুত এনে তা দিয়ে পণ্য তৈরি করে কাছাকাছি বন্দর দিয়ে রপ্তানির মাধ্যমে বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় বাড়তি সুবিধা পাবে। 

জানতে চাইলে তৈরি পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর সভাপতি ফারুক হাসান প্রথম আলোকে বলেন, ‘মোংলা ও পায়রা বন্দরের ব্যবহার বাড়ছে। তাতে একটু স্বস্তি হয়েছে রপ্তানিকারকদের। ভবিষ্যতে চট্টগ্রাম বন্দরের ওপর চাপ আরও কমে আসবে। কারণ, পায়রা ও মোংলা বন্দর উন্নয়নে কাজ হচ্ছে। অন্যদিকে মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দর হয়ে গেলে আরও সুবিধা হবে। তিনি বলেন, পদ্মা সেতু হয়েছে। সড়ক যোগাযোগ উন্নত হয়েছে। এ কারণে পোশাক রপ্তানিকারকদের মধ্যে মোংলা বন্দর ব্যবহার বাড়ছে। বিদেশি ক্রেতা প্রতিষ্ঠানও তাদের মনোনীত শিপিং এজেন্ট নিয়োগ শুরু করেছে এই বন্দরে। ব্যবহার বাড়লে আমরা চট্টগ্রামের মতো এই বন্দর থেকেও ইউরোপে সরাসরি কনটেইনারবাহী জাহাজ চালুর উদ্যোগ নেব।’

চট্টগ্রামে ভাটার টান

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) তথ্যে দেখা যায়, পায়রা বন্দর দিয়ে পণ্য পরিবহন শুরুর আগে ২০১৪-১৫ অর্থবছরে সমুদ্রপথে মোট ৫ কোটি ২৫ লাখ টন পণ্য পরিবহন হয়। এর মধ্যে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে পরিবহন হয় ৯২ শতাংশ বা ৪ কোটি ৮১ লাখ টন পণ্য। মোংলা বন্দর দিয়ে পরিবহন হয় ৪৪ লাখ টন বা ৮ শতাংশ। 

৯ বছরের ব্যবধানে মোংলার হিস্যা বেড়ে সদ্য বিদায়ী অর্থবছরে ১০ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। এনবিআরের হিসাবে, ২০২২-২৩ অর্থবছরে মোংলা বন্দর দিয়ে পণ্য পরিবহন হয় ১ কোটি ১২ লাখ টন। একই সময়ে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে পরিবহন হয় ১০ কোটি টন, যা সমুদ্রপথে মোট পণ্য পরিবহনের ৮৭ শতাংশ। আর দেশের তৃতীয় সমুদ্রবন্দর পায়রা দিয়ে পরিবহন হয় প্রায় ৩৮ লাখ টন বা মোট সমুদ্রপথের বাণিজ্যের ৩ শতাংশ।  

অর্থাৎ ৯ বছরের ব্যবধানে সমুদ্রপথের বাণিজ্যে পরিমাণের হিসাবে চট্টগ্রামের অংশীদারি কমেছে ৫ শতাংশ। এ সময়ে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তনের মধ্যে রয়েছে পায়রা বন্দর চালু। আর দ্বিতীয়টি হলো পদ্মা সেতু চালু, যা ঢাকা থেকে পায়রা ও মোংলা বন্দরে সহজে পণ্য আনা-নেওয়ার সুযোগ তৈরি করেছে।  

মোংলায় জোয়ার-ভাটার দিন

স্বাধীনতার পর সমুদ্রপথের বাণিজ্য বলতে ছিল চট্টগ্রাম ও মোংলা সমুদ্রবন্দর। শুরুতে বৈদেশিক বাণিজ্যের বড় অংশই চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে পরিবহন হতো। তবে মোংলায়ও কম ছিল না। মোট আমদানি-রপ্তানি পণ্যের ২৮ শতাংশই পরিবহন হতো মোংলা বন্দর দিয়ে। দুই বন্দরের হিসাবে, ১৯৭৩-৭৪ অর্থবছরে সমুদ্রপথে পণ্য পরিবহন হয় ৪৯ লাখ ৬৬ হাজার টন। এই পণ্যের ৭২ শতাংশ পরিবহন হয় চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে। বাকি ২৮ শতাংশ মোংলা বন্দর দিয়ে পরিবহন হয়।

শুরুর দিকে মোংলার এক-তৃতীয়াংশের কাছাকাছি আমদানি-রপ্তানি পণ্য পরিবহন হলেও তা ধীরে ধীরে কমতে থাকে। দুই দশক আগে মোংলা বন্দর দিয়ে সমুদ্রপথে পণ্য পরিবহনের অংশীদারির হার এক অঙ্কে নেমে আসে। সেখান থেকে মোংলার অংশীদারি আবারও বাড়ছে। 

মোংলা বন্দর দিয়ে মূলত সরকারি সার, গম, সিমেন্টশিল্পের কাঁচামাল, এলপিজি, কয়লা ইত্যাদি পণ্যই বেশি আমদানি হয়। গত অর্থবছরে ব্যক্তিগত ব্যবহারের গাড়ি আমদানির ৫৫ শতাংশই এসেছে মোংলা দিয়ে। আগে শুধু মোংলা রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলের পণ্য রপ্তানি হলেও এখন পদ্মা সেতুর কারণে ঢাকা থেকে তৈরি পোশাক রপ্তানি হচ্ছে। যেমন গত অর্থবছরে ঢাকার মিরপুরের ইপিলিয়ন নিটওয়্যার, সাভারের এ কে এম নিটওয়্যার লিমিটেড, অনন্ত গার্মেন্টস, শারমিন অ্যাপারেলস, স্টার্লিং ডেনিমস, গাজীপুরের ফ্লেমিংগো ফ্যাশনস লিমিটেড, অ্যাপেক্স স্পিনিং অ্যান্ড নিটিং মিলস, লিবার্টি নিটওয়্যার, নারায়ণগঞ্জের ফকির অ্যাপারেলস ও নিটওয়্যারসহ অনেক কারখানার পণ্য রপ্তানি হয়েছে মোংলা দিয়ে।

মোংলা বন্দর বোর্ডের সদস্য (হারবার ও মেরিন) ক্যাপ্টেন মো. আসাদুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, পদ্মা সেতুর কারণে ইতিমধ্যে মোংলা দিয়ে ঢাকা অঞ্চলের কারখানার পোশাক রপ্তানি শুরু হয়েছে। বর্তমানের তুলনায় বড় জাহাজ ভেড়ানোর জন্য বন্দর চ্যানেলে এখন খননকাজ চলছে। খননকাজ শেষ হলে সাড়ে ১০ মিটার ড্রাফটের (জাহাজের পানির নিচের গভীরতা) জাহাজ ভেড়ানো সম্ভব হবে। আবার সরকারি-বেসরকারি অংশীদারত্বে যে দুটি জেটি নির্মাণের কাজ চলছে, তা আগামী বছরই শেষ হবে। ফলে মোংলায় আগামী দিনে পণ্য পরিবহন আরও বাড়বে।   

আসছে পায়রা

পটুয়াখালীর পায়রা বন্দর প্রতিষ্ঠিত হয় ২০১৩ সালে। ২০১৬ সালে সাগরে বড় জাহাজ থেকে ছোট জাহাজে স্থানান্তরের মাধ্যমে পণ্য পরিবহন শুরু হয় বন্দরটিতে। বন্দরটিতে এখনো পণ্য ওঠানো-নামানোর মতো সুবিধা তৈরি হয়নি। বন্দরটিতে একটি বহুমুখী টার্মিনাল নির্মাণ শেষের পথে রয়েছে, যা এ বছর আংশিক চালু হতে পারে বলে জানিয়েছেন বন্দর কর্মকর্তারা। 

টার্মিনাল না হলেও এখন বন্দরটির বহির্নোঙরে পণ্য স্থানান্তরের কার্যক্রম চলছে। পায়রা তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য কয়লা আমদানি হচ্ছে এ বন্দরের বহির্নোঙরের মাধ্যমে। এই কয়লা আমদানির মাধ্যমে মোট সমুদ্রপথের বাণিজ্যে ৩ শতাংশ অংশীদারি নিয়েছে বন্দরটি।   

পায়রা বন্দর ব্যবহারকারীরা জানান, এ বন্দর দিয়ে খোলা পণ্য পরিবহন বাড়ার সম্ভাবনা বেশি। কারণ, বহির্নোঙরে পণ্য স্থানান্তরের পর অভ্যন্তরীণ নদীপথে ঢাকা অঞ্চলে সহজে পরিবহন করা সম্ভব হবে। চট্টগ্রামে খোলা পণ্য সাগর উপকূল পাড়ি দিতে হয়, যেটি পায়রা বন্দরে দিতে হবে না।

কনটেইনারে এখনো চট্টগ্রাম শীর্ষে

সমুদ্রপথে কনটেইনারে আমদানি-রপ্তানি পণ্য পরিবহনে সুবিধা আছে চট্টগ্রাম ও মোংলায়। মোট পণ্য পরিবহনে মোংলার অংশীদারি এগিয়ে গেলেও শুধু কনটেইনার পরিবহনে চট্টগ্রামের আধিপত্য ভাঙতে পারেনি মোংলা। গত কয়েক বছরে গড়ে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে ৯৮ থেকে ৯৯ শতাংশ কনটেইনার পণ্য ওঠানো-নামানো হয়। মোংলায় ১ থেকে ২ শতাংশ পরিবহন হচ্ছে।

কনটেইনারের প্রায় পুরোটাই চট্টগ্রামের হাতে থাকার কারণ, কনটেইনারকেন্দ্রিক পণ্য খালাসের অবকাঠামো সুবিধা চট্টগ্রামেই বেশি। বিশ্বের সব শিপিং কোম্পানির পণ্য পরিবহন সেবা রয়েছে চট্টগ্রামে। বন্দর থেকে শুরু করে কনটেইনার পরিবহনে বেসরকারি ডিপোসহ লজিস্টিকস সুবিধা রয়েছে শুধু চট্টগ্রামে। ফলে কনটেইনারের আধিপত্য এখনো চট্টগ্রামেই।

তবে মোংলায় সরকারি-বেসরকারি অংশীদারত্বে নতুন কনটেইনার টার্মিনাল হচ্ছে। এই টার্মিনাল চালু হলে সেখানে কনটেইনার পরিবহনের হার বাড়বে বলে মোংলা বন্দরের কর্মকর্তারা জানান। পায়রায় টার্মিনাল নির্মাণ হলে ধীরে ধীরে সেখানে কনটেইনার পরিবহন শুরু হতে পারে।

সামনে কী হবে

বন্দর ভেদে আমদানি-রপ্তানি পণ্য পরিবহনে জোয়ার-ভাটা চলছে ৫১ বছর ধরে। সব কটি সরকারি পরিচালনাধীন বন্দরের মধ্যেই থাকছে এই প্রতিযোগিতা। তবে নতুন বন্দর প্রকল্পগুলো চালু হলে এই জোয়ার-ভাটা নতুন মাত্রা পাবে। কারণ, সরকারি পরিচালনার বাইরে বেসরকারি খাতও যুক্ত হবে বন্দর পরিচালনায়।

যেমন ২০২৬ সালে মাতারবাড়ী সমুদ্রবন্দরের টার্মিনাল চালু হলে একটা বড় অংশীদারি যাবে সেখানে। যদিও মাতারবাড়ী টার্মিনালটি বন্দরের আওতাধীন, তবু বন্দরের মূল স্থাপনা থেকে দূরে ভিন্ন নৌপথে অবস্থিত। আবার চট্টগ্রাম বন্দরের অদূরে বে টার্মিনাল চালু হলে সেখানেও বেসরকারি খাত যুক্ত হবে বন্দর পরিচালনায়।     

চট্টগ্রাম বন্দরের সর্বশেষ মহাপরিকল্পনায়ও প্রক্ষেপণ করা হয়েছে, নতুন প্রকল্পগুলো চালু হলে চট্টগ্রাম বন্দরের মূল স্থাপনায় কনটেইনার পরিবহনের অংশীদারি কমবে। ২০৪৩ সালে চট্টগ্রাম বন্দর দেশের মোট কনটেইনারের ৪৯ দশমিক ৫০ শতাংশ পরিবহন করবে। চট্টগ্রামের মূল বন্দরের বাইরে প্রস্তাবিত বে টার্মিনাল ও মহেশখালীর মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দরের টার্মিনাল, মোংলা ও পায়রা বন্দরে কনটেইনার পরিবহনের অংশীদারি বিস্তৃত হবে, যা কাছাকাছি শিল্পাঞ্চলে পণ্য পরিবহনে সুযোগ তৈরি করবে।  

বন্দরকেন্দ্রিক শিল্পায়নে গুরুত্ব বাড়াবে

বিশ্বের অনেক দেশেই উৎপাদনমুখী খাতকে বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় এগিয়ে রাখতে বন্দরের কাছাকাছি শিল্পাঞ্চল গড়ে তোলা হচ্ছে। এর বড় উদাহরণ প্রতিবেশী দেশ ভারত। সেখানে একসময় প্রধান ১৩টি বন্দরে দেশটির ৮০ শতাংশ আমদানি-রপ্তানি পণ্য পরিবহন হতো। অপ্রধান বন্দরগুলো পরিবহন করত ২০ শতাংশ। তবে দেশটি প্রধান বন্দরগুলোর বাইরে নতুন নতুন বন্দর সুবিধা তৈরি করে তা ছড়িয়ে দিয়েছে। এখন অপ্রধান বন্দরগুলো দিয়ে ৪৫ শতাংশ পণ্য পরিবহন হচ্ছে। এসব বন্দরের কাছাকাছি শিল্পাঞ্চলও গড়ে তোলা হয়েছে এবং হচ্ছে।  

জানতে চাইলে চট্টগ্রাম বন্দর বোর্ডের সাবেক সদস্য মো. জাফর আলম প্রথম আলোকে বলেন, এক চ্যানেলের (কর্ণফুলীর নৌপথ) ওপর সারা দেশের আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যের চাপ কমাতে সরকার অনেকগুলো বন্দর প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। তাতে এখন এসব বন্দর দেশের বৈদেশিক বাণিজ্যের ভার নিতে শুরু করেছে। এটা ভালো দিক। আবার এক বন্দরের ওপর নির্ভরশীলতা দিয়ে দেশের সব অঞ্চলে উৎপাদনমুখী শিল্পাঞ্চল গড়ে তোলা সম্ভব নয়। পায়রা, মোংলা, মাতারবাড়ীকে কেন্দ্র করে এবং বঙ্গবন্ধু শিল্পনগরীকে সংযুক্ত করে বন্দরকেন্দ্রিক উন্নয়নের সুবর্ণ সুযোগ রয়েছে। এতে একদিকে যেমন লজিস্টিকস ব্যয় কমবে, অন্যদিকে পণ্য দ্রুত আনা-নেওয়া করা যাবে, যা দেশের অর্থনীতিতে গতি বাড়াবে।