বাংলাদেশের বাজারে নানা ব্র্যান্ডের স্কুটার পাওয়া যাচ্ছে। অনেকের কাছে এ বাহনের পরিচিতি স্কুটি হিসেবে। ব্যবহারকারীরা বলেন, স্কুটার বা স্কুটি তুলনামূলক আরামদায়ক, ফলে রাস্তায় বেশ আয়াসে পথ চলা যায়। খুব বেশি সংখ্যায় গিয়ার-ক্লাচের ঝামেলা নেই। আবার স্কুটারের দামও সাধারণ বাইকের তুলনায় কম।
অনেক ব্যবহারকারীর কাছে আবার গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, বসার জায়গা কতটা। স্থানীয় বাজারে পাওয়া যায় এমন মডেলের স্কুটারগুলোতে বসার জায়গাও বেশি। পণ্যও বহন করা যায় বেশি পরিমাণে। এ জন্য অনেকের কাছেই স্কুটারের বেশ চাহিদা রয়েছে। বাংলাদেশে বিশেষ করে নারীদের কাছে স্কুটি বেশি জনপ্রিয় হয়েছে।
বর্তমানে দেশের বাজারে পাওয়া যাচ্ছে জনপ্রিয় এমন পাঁচটি স্কুটারের সম্পর্কে তথ্য থাকছে এই প্রতিবেদনে।
জাপানি গাড়ি প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান সুজুকি মোটরসের মোটরসাইকেল ও স্কুটারের বেশ চাহিদা রয়েছে। যেমন দেশের বাজারে বিক্রি হওয়া অ্যাকসেস ১২৫ এফআই মডেলটি হলো সুজুকির ফ্ল্যাগশিপ স্কুটার। সুজুকি ইকো পারফরম্যান্স বা এসইপি প্রযুক্তিতে তৈরি অ্যাকসেস ১২৫ বাইকটি নীল, কালো ও সিলভার—এই তিন রঙে পাওয়া যায়। নারী-পুরুষ সবার কাছেই এটির বেশ জনপ্রিয়তা রয়েছে।
ফোর-স্ট্রোক সিঙ্গেল সিলিন্ডার ইঞ্জিনের স্কুটারটিতে রয়েছে কিক ও ইলেকট্রিক উভয় ধরনের স্টার্টিং ব্যবস্থা। এ ছাড়া রয়েছে আন্ডার সিট স্টোরেজ, টিউবলেস টায়ার, ফ্রন্ট ডিস্ক ব্রেক, এলইডি হেডলাইট, হাইব্রিড ড্যাশবোর্ড ও পাঁচ লিটারের ফুয়েল ট্যাংক। অ্যাকসেস ১২৫ স্কুটারটির দাম রাখা হচ্ছে ১ লাখ ৭৪ হাজার ৯৫০ টাকা।
বাংলাদেশের বাজারে ভারতের টিভিএস ব্র্যান্ডের একাধিক মডেলের স্কুটার রয়েছে। এর মধ্যে টিভিএস এনটর্ক ১২৫ স্কুটারটি বেশ জনপ্রিয়। ১২৫ সিসি ও তিন-ভাল্ব ইঞ্জিনের এই স্কুটারে রয়েছে ২২ লিটারের একটি বড় আন্ডার-সিট স্টোরেজ, যার মধ্যে একটি ফুল-ফেইস হেলমেট অনায়াসে রাখা যায়। এ ছাড়া এটিতে রয়েছে সম্পূর্ণ ডিজিটাল মিটার, এলইডি হেডল্যাম্প, ফ্রন্ট ডিস্ক ব্রেক ও টিউবলেস টায়ার।
পাঁচ লিটারের ফুয়েল ট্যাংকের স্কুটারটিতে মাইলেজ পাওয়া যায় ৩৫ থেকে ৪৫ কিলোমিটারের মধ্যে। আর ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৯৫ কিলোমিটার পর্যন্ত গতি পাওয়া যায়। টিভিএস এনটর্ক ১২৫ স্কুটির দাম রাখা হচ্ছে ১ লাখ ৯৭ হাজার ৯৯৯ টাকা।
জাপানি এই কোম্পানির ১১০ সিসির হোন্ডা ডিও স্কুটারটি বর্তমানে দেশের বাজারে চলছে। আকর্ষণীয় স্পোর্টি গ্রাফিকসসহ চওড়া ও আরামদায়ক সিটের জন্য হোন্ডা ডিও অনেকের কাছেই পছন্দের। এতে রয়েছে বিবিএস ব্রেকিং পদ্ধতি, ১৮ লিটারের আন্ডারসিট স্টোরেজ, ৫ লিটারের ফুয়েল ট্যাংক, এলইডি হেডল্যাম্প, সম্পূর্ণ ডিজিটাল মিটার ও টিউবলেস টায়ার।
স্কুটারটির সম্মুখভাগে রয়েছে ২টি আলাদা হুক। এতে আরোহীর সাধারণ ব্যাগ, ল্যাপটপ ব্যাগসহ বিভিন্ন প্রয়োজনীয় জিনিস ঝুলিয়ে রাখা যায়। স্কুটারটিতে মাইলেজ পাওয়া যায় ৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত। হোন্ডা ডিও স্কুটারটির দাম রাখা হচ্ছে ১ লাখ ৮৫ হাজার ৯০০ টাকা।
বর্তমানে ভারতের ব্র্যান্ড হিরোর একাধিক মডেলের মোটরসাইকেল বাংলাদেশের বাজারে রয়েছে। এর মধ্যে মায়েস্ট্রো এজ ১২৫ অন্যতম। ১২৫ সিসির স্কুটারটিতে রয়েছে সম্পূর্ণ ডিজিটাল স্পিডোমিটার, ফোর-স্ট্রোক স্পার্ক ইগনিশন ইঞ্জিন, টিউবলেস টায়ার এবং কিক ও ইলেকট্রিক উভয় ধরনের স্টার্টিং ব্যবস্থা। পাঁচ লিটারের ফুয়েল ট্যাংক ছাড়াও এটিতে রয়েছে এক্সটারনাল ফুয়েলিং সিস্টেম। অর্থাৎ সিট না তুলেই এতে জ্বালানি নেওয়া যায়।
স্কুটারটির সামনের সাসপেনশনে রয়েছে টেলিস্কোপিক হাইড্রোলিক শক অ্যাবজরবার। অন্যদিকে ফ্রন্ট ডিস্ক ব্রেকসহ রয়েছে ইন্টিগ্রেটেড ব্রেকিং সিস্টেম। কালো, লাল ও নীল—এই তিন রঙে পাওয়া যাচ্ছে হিরোর মায়েস্ট্রো এজ ১২৫ স্কুটারটি। এটির দাম রাখা হচ্ছে ১ লাখ ৭০ হাজার টাকা।
রানারের স্কুটি ১১০ মডেলের স্কুটারটিতে রয়েছে ১০৪ সিসির একটি ফোর-স্ট্রোক সিঙ্গেল সিলিন্ডার ইঞ্জিন। আকারে ছোট ও ওজনে তুলনামূলক হালকা স্কুটারটিতে মাইলেজ পাওয়া যায় ৩৫ কিলোমিটার পর্যন্ত। এতে রয়েছে কিক ও ইলেকট্রিক উভয় ধরনের স্টার্টিং ব্যবস্থা।
এ ছাড়া ফ্রন্ট ডিস্ক ব্রেক, টিউবলেস টায়ার, মোবাইল চার্জিং ব্যবস্থা ও সিটের ভেতরে সেফ বক্সসহ বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য ও সুবিধা রয়েছে এতে। কালো, নীল, লালসহ পাঁচটি রঙে বিক্রয়কেন্দ্রে পাওয়া যায় স্কুটারটি। স্কুটি ১১০-এর দাম রাখা হচ্ছে ১ লাখ ২৯ হাজার টাকা।