দেশের বিভিন্ন কারাগারে বন্দীদের তৈরি পণ্য বিক্রি হচ্ছে বাণিজ্য মেলার কারাপণ্যের স্টলে
দেশের বিভিন্ন কারাগারে বন্দীদের তৈরি পণ্য বিক্রি হচ্ছে বাণিজ্য মেলার কারাপণ্যের স্টলে

বাণিজ্য মেলায় কোথায় কত ছাড় পাবেন

আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা থেকে অনেক ক্রেতাই বিশেষ মূল্যছাড়ে পণ্য কিনতে মুখিয়ে থাকেন। আর ক্রেতাদের টানতে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানও সাধ্যমতো ছাড় দেয়। অনেক ক্ষেত্রে আকর্ষণীয় মূল্যছাড়ের পাশাপাশি একটি কিনলে আরেকটি ফ্রি কিংবা প্যাকেজ আকারে মূল্যহ্রাসের ঘোষণাও থাকে।

মেলার মূল অংশের ডান পাশে কয়েকটি পোশাক ব্র্যান্ডের স্টল রয়েছে। এসব স্টলে সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ ছাড়ে পণ্য বিক্রি হচ্ছে। এর মধ্যে একটি ফ্যাশন হাউস প্রভিন্স। প্রতিষ্ঠানটির বিক্রয় নির্বাহী মো. আরমান বলেন, ‘মেলা উপলক্ষে আমরা অর্ধেক মূল্যছাড়ে পণ্য বিক্রি করছি। তাতে ক্রেতাদের থেকে ভালো সাড়া পাচ্ছি।’

মেলার সামনের এই অংশে বাসনকোসনসহ ক্রোকারিজ, বস্ত্রসামগ্রী ও খাবারের কিছু স্টল রয়েছে। এর মধ্যে গাজী গ্রুপের স্টলে ২৫ শতাংশ পর্যন্ত ছাড়ে রাইস কুকার, গ্যাসের চুলাসহ নানা গৃহস্থালিসামগ্রী বিক্রি হচ্ছে। আর এসকেবি কুকওয়ারের স্টলে চলছে ৪০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড়।

মেলায় বস্ত্রখাতের স্টলগুলোতে ১০০ থেকে ৭০০ টাকা পর্যন্ত ছাড়ে বিভিন্ন পণ্য পাওয়া যাচ্ছে। যেমন, ১ হাজার ৯৫০ টাকার বিছানার চাদর বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৭৫০ টাকায়। অর্থাৎ মূল্যছাড় ২০০ টাকা। মেলা উপলক্ষে ৫০ শতাংশ ছাড়ে ব্লেজার বিক্রি করছে দেশি ব্র্যান্ড ব্লু স্কাই। অন্য ব্লেজার ও কটির বেশ দোকানেও চলছে বড় ছাড়ের ছড়াছড়ি।

ছবি: খালেদ সরকার

কেউ কেউ মূল্যছাড়ের মাধ্যমে নিজেদের পরিচিতি বাড়ানোরও চেষ্টা করছেন। যেমন, ৫০ শতাংশ ছাড় দেওয়া আমিরার বিক্রয়কেন্দ্র ব্যবস্থাপক মেহেদী হাসান বলেন, ‘বাণিজ্য মেলায় ছাড় দেওয়ার মাধ্যমে আমরা পণ্যের পরিচিতি বাড়াচ্ছি। যেটা আমাদের সারা বছরের ব্যবসায়ে বেশ সাহায্য করে।’

মেলার মূল ভবনের ছাদের নিচে হলরুম এ-তে ইলেকট্রনিক ও আসবাবের বড় ব্র্যান্ডগুলো স্টল নিয়েছে। এখানে আছে ওয়ালটন, মিনিস্টার, যমুনা ও ভিসতার মতো ব্র্যান্ডগুলো। আসবাবের উল্লেখযোগ্য ব্র্যান্ডের মধ্যে রয়েছে হাতিল, রিগ্যাল, নাভানা, আখতার, নাদিয়া, হাতিম, ব্রাদার্স, ডেল্টা, জেএমজি ফার্নিচার প্রভৃতি। এসব ব্র্যান্ড বিভিন্ন রকম ছাড় দিচ্ছে।

আসবাব ব্র্যান্ড নাদিয়া ও ব্রাদার্স ১৫ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় দিচ্ছে। হাতিলে ছাড় পাওয়া যাচ্ছে ৫ থেকে ১০ শতাংশ পর্যন্ত। আবার ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারে ১২ মাস পর্যন্ত সুদমুক্ত কিস্তি (ইএমআই) সুবিধা দিচ্ছে কেউ কেউ।

জেএমজি ফার্নিচারের জ্যেষ্ঠ বিক্রয় ব্যবস্থাপক রাসেল মিয়া বলেন, ‘মেলা উপলক্ষে ক্রেতারা ১৫ শতাংশ ছাড়ে পণ্য কিনতে পারবেন। সঙ্গে থাকবে বিক্রয়োত্তর সেবা।’

হলরুম এ-তে ইলেকট্রনিক ব্র্যান্ডের মধ্যে মিনিস্টার তাদের কিছু পণ্যে ৫৩ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় দিচ্ছে। আর ভিসতা ইলেকট্রনিক ৩৫ শতাংশ ছাড়ে বিক্রি করছে ৮৬ ইঞ্চি টেলিভিশন। অন্যান্য টেলিভিশনেও ন্যূনতম ২০ শতাংশ ছাড়ের ব্যবস্থা রেখেছে প্রতিষ্ঠানটগুলো।

হলরুম বি-তে অবশ্য ছাড়ে বিক্রির পণ্য কম। তবে এখানে পসরা সাজিয়ে বসেছে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, যাদের অনেকেই এক দামে পণ্য বিক্রি করে। যেমন ভারতীয় জুতা এক দাম ১ হাজার ৬০০ টাকায় কিনতে হচ্ছে। তবে কাশ্মীরি শালে দরদাম করে কিনলে কিছুটা কমে পাওয়া যাচ্ছে। এখানকার ইরান মেলামাইন পণ্যে আছে ১০ শতাংশ ছাড়।

এই হলে কয়েকটি খাবারের দোকানও রয়েছে। দেশীয় নানা পদের খাবারের স্টল শাকিল আচার ঘরের স্বত্বাধিকারী মো. রমজান বলেন, ‘এবার খাবারের দোকান অনেক বেশি। তাতে আমাদের ব্যবসা অন্যান্যবারের তুলনায় কমেছে। যেহেতু ব্যবসা কম, তাই ছাড় দিতে পারছি না।’

রাজধানীর মিরপুর কাজীপাড়া থেকে মেলায় এসেছেন মাহরুবা ইসলাম। তিনি বলেন, বাণিজ্য মেলায় আসলে ছাড়ে পণ্য কেনা যায়। এ জন্য বিশেষ আগ্রহ নিয়েই প্রতি বছর মেলায় আসি।