আজ বুধবার ২০২৩-২৪ অর্থবছরের দ্বিতীয়ার্ধের (জানুয়ারি-জুন) মুদ্রানীতি ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ। এ উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকেরা মুদ্রানীতিসহ ব্যাংক খাতের বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে প্রশ্ন করেন। তাঁদের এসব প্রশ্নের জবাব দেন গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার। সংবাদ সম্মেলনের প্রশ্নোত্তর পর্বের পুরো অংশ অনুলিখন করে প্রকাশ করা হলো।
সরকারের রাজস্ব নীতির সঙ্গে মুদ্রানীতি কতটা সংগতিপূর্ণ?
আব্দুর রউফ তালুকদার: নতুন সরকারের রাজনৈতিক ইশতেহারের সঙ্গে মুদ্রানীতি সামঞ্জস্যপূর্ণ। ইশতেহারে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, ব্যাংক খাতের সুশাসন ও দক্ষতা বৃদ্ধির অঙ্গীকার ছিল সরকারের। দুটি বিষয়ই আমলে নেওয়া হয়েছে।
নীতি সুদহার বাড়িয়ে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ কতটা সম্ভব হবে?
আব্দুর রউফ তালুকদার: মূল্যস্ফীতির দুটি দিক; একটি অর্থনৈতিক, আরেকটি অর্থনীতি–বহির্ভূত। মুদ্রানীতি ও রাজস্ব নীতির মাধ্যমে অর্থনৈতিক দিকটি আমলে নেওয়ার চেষ্টা করছি। অর্থনীতি–বহির্ভূত বিষয়টি আমলে নেওয়ার জন্য আরও বৃহৎ পরিসরে কাজ করতে হয়, অন্যান্য মন্ত্রণালয়কে যুক্ত হতে হয়। এ বিষয় নিয়ে নতুন অর্থমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে। অর্থমন্ত্রী আগামী রোববার এ বিষয়ে বৈঠক ডেকেছেন। বাংলাদেশ ব্যাংক তার দায়িত্ব পালন করছে, এখন সরকারের অন্যান্য সংস্থা তাদের ভূমিকা পালন করলে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।
অর্থনীতি–বহির্ভূত বিষয়গুলোর মধ্যে আছে মজুতদারি, পরিবহন, আমদানি পণ্য সময়মতো না আসা বা বিলম্ব হওয়া, বাজারজাতকরণ, অর্থাৎ যেগুলোর সঙ্গে মুদ্রা ও রাজস্ব নীতির কোনো সম্পর্ক নেই। এগুলোর সঙ্গে বাণিজ্য, খাদ্য মন্ত্রণালয় ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী জড়িত। এসব বিষয় অপরিবর্তিত থাকলে মুদ্রা ও রাজস্ব নীতি দিয়ে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হবে। মূল্যস্ফীতি ৮ শতাংশের ঘরে নামিয়ে আনার লক্ষ্য থাকলেও নানা কারণে তা সম্ভব হয়নি। এখন আর যেসব ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে, তার বদৌলতে মূল্যস্ফীতি ৬ শতাংশের ঘরে নামিয়ে আনা সম্ভব হবে।
নির্বাচনের অনিশ্চয়তা দূর হয়েছে, এটা স্বস্তির বিষয়। এখন পাইপলাইনে যেসব এফডিআই বা প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ আটকে আছে, সেগুলো দ্রুত ছাড় হবে বলে আশা করা যায়। এ ছাড়া প্রকল্প বাস্তবায়নে উন্নয়ন সহযোগীদের প্রতিশ্রুত যে ঋণ গত কয়েক মাসে ছাড় হয়নি, সেগুলোও এখন ছাড় হবে। বাণিজ্য অর্থায়নেও গতি আসবে।
মুদ্রানীতি ঘোষণার সময় প্রধান অর্থনীতিবিদ হাবিবুর রহমান বলেছেন, রিজার্ভের ওপর চাপ কমে আসছে—সেটি কতটা কমছে? এ ছাড়া আগের মুদ্রানীতি ঘোষণার সময় বলা হয়েছিল, গত বছরের সেপ্টেম্বরের মধ্যে মুদ্রার বাজারভিত্তিক বিনিময় হার চালু হবে; কিন্তু এখন বলা হলো, নতুন পদ্ধতিতে বিনিময় হার নির্ধারিত হবে। সেটি কতটা বাজারভিত্তিক হবে?
আব্দুর রউফ তালুকদার: আমাদের আর্থিক হিসাবে সব সময় উদ্বৃত্ত থাকে, সেটি দিয়ে ঘাটতি মেটানো হয়। প্রবাসী আয় বা রপ্তানি কিন্তু রিজার্ভে যুক্ত হয় না। আর্থিক হিসাবের উদ্বৃত্ত রিজার্ভে যুক্ত হয়। রিজার্ভের ওপর চাপ কমাতে আমদানিতে নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা হয়। চলতি হিসাবের (আমদানি, রপ্তানি, প্রবাসী আয়) ঘাটতি আর্থিক হিসাবের উদ্বৃত্ত দিয়ে পূরণ করা হয়েছে, কয়েক বছর তা ঘাটতিতে থাকলেও আমরা তা সমান সমান করতে পেরেছি। গত দেড় বছরে আমাদের ঋণ পরিশোধ বেড়েছে, সেই সঙ্গে ফেডারেল রিজার্ভ নীতি সুদহার বাড়ানোর কারণে বৈশ্বিক বিনিয়োগকারীরা মার্কিন ট্রেজারি বন্ডে বিনিয়োগ করেছেন, সে কারণে রিজার্ভের ওপর চাপ বেড়েছিল। এখন স্বল্পমেয়াদি ঋণের দায় মোটামুটি শোধ হয়ে গেছে। সে কারণে আমরা মনে করছি, রিজার্ভের ওপর চাপ কমছে। আর্থিক হিসাব সমান সমান হলেই রিজার্ভ আবার বাড়তে শুরু করবে।
দেশের ইসলামি ধারার ব্যাংকগুলোতে তারল্যসংকট চলছে। পাঁচটি ব্যাংকের চলতি হিসাবেও ঘাটতি আছে। বাংলাদেশ ব্যাংক তাদের সহায়তা করে যাচ্ছে, এটা কিসের ভিত্তিতে করা হচ্ছে। এ ছাড়া ইসলামি ধারার যে পাঁচটি ব্যাংকের তারল্যসংকটের কথা হলো, সেগুলো একই গোষ্ঠীর মালিকানাধীন। তারা অনেক শক্তিশালী হিসেবে পরিচিত। সে কারণেই কি তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না?
আব্দুর রউফ তালুকদার: এ ক্ষেত্রে অনেক বিষয় আছে। ইসলামি ব্যাংকগুলোর কাঠামোতে সমস্যা আছে। মূলধারার ব্যাংকগুলোর ১৫ শতাংশ এসএলআর সংরক্ষণ করতে হবে; ইসলামি ব্যাংকের ক্ষেত্রে তা ৫ শতাংশ। ইসলামি ব্যাংকগুলোর ‘সুকুক বন্ড’ খুব বেশি দিন আগে চালু হয়নি, আমি যখন অর্থসচিব ছিলাম, তখন এটা চালু হয়। কিন্তু সেটিও সংখ্যায় খুব কম। আমরা জানি, ব্যাংকগুলো স্বল্প মেয়াদে ঋণ করে, কিন্তু ঋণ দেয় দীর্ঘ মেয়াদে। সেখানে একধরনের সামঞ্জস্যহীনতা আছে। মূলধারার ব্যাংক টাকার প্রয়োজন হলে এসএলআর বাংলাদেশ ব্যাংকে জমা রেখে টাকা নিতে পারে; কিন্তু ইসলামি ব্যাংকের বন্ড কম হওয়ায় সমস্যা। কিন্তু মানুষের টাকার দরকার হয় তাৎক্ষণিক।
তারল্যসংকটের মূল কারণ হলো, ডলার আসা কমে গেছে। সে কারণে বাজারে টাকা ছাড়ার পরিমাণ কমেছে। অথচ আমরা চলমান অর্থবছরসহ গত তিন অর্থবছরে বাজারে ২৮ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার বা ২ হাজার ৮৭০ কোটি ডলার বিক্রি করেছি। অর্থাৎ সেই পরিমাণ টাকা বাজার থেকে তুলে নেওয়া হয়েছে। এর সমপরিমাণ টাকা কিন্তু বাজারে সঞ্চারিত করা সম্ভব হয়নি। ব্যাংকগুলো ডলার কেনায় তাদের কাছে টাকা নেই। এ ছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংক গত আগস্ট মাস থেকে সরকারকে ঋণ দেওয়া বন্ধ করেছে। সরকার এখন বাংলাদেশ ব্যাংকের বদলে আর্থিক খাত থেকে ঋণ করছে। স্বাভাবিকভাবেই ব্যাংকগুলোর হাতে টাকা কমে যাচ্ছে। এটা কাঠামোগত সমস্যা; আমরা তা মোকাবিলার চেষ্টা করছি। ব্যাংকগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হচ্ছে।
শুধু ইসলামি ধারার ব্যাংকগুলো নয়, মূলধারার ব্যাংকগুলোও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছ থেকে দৈনিক ৩০ থেকে ৩৫ হাজার কোটি টাকা ধার করছে। তাদের বন্ড থাকায় সুবিধা আছে, সেটি জমা রেখে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছ থেকে টাকা নিতে পারছে। আমি নিয়মিত চাকরি ছেড়ে চুক্তিভিত্তিক চাকরিতে এসেছি। আমি যেকোনো সময় চাকরি ছেড়ে দিতে পারি, আবার সরকারও আমাকে চাকরি ছাড়তে বলতে পারে। ফলে চাকরি হারানোর ভয় নেই। আমাকে কেউ ভয় দেখাচ্ছে, এমন বিষয়ও নেই।
নীতি সুদহার বাড়ানো ও বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবাহ কমানোর কারণে প্রবৃদ্ধিতে প্রভাব পড়বে কি না?
আব্দুর রউফ তালুকদার: মূল্যস্ফীতি কমানো জরুরি, সেই সঙ্গে সরবরাহব্যবস্থা ও কর্মসংস্থানে যেন প্রভাব না পড়ে, বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলে, তা নিশ্চিত করতে আমাদের বেশ কয়েকটি পুনঃ অর্থায়ন প্রকল্প আছে। কৃষি, অতিক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প এবং ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের জন্য আমাদের এসব প্রকল্প আছে। রপ্তানিমুখী শিল্পের জন্য আলাদা তহবিল আছে; নারীদের জন্য আছে। সাধারণ ঋণের সুদহার এখন ১২ শতাংশ ছুঁইছুঁই করছে, কিন্তু এসব ঋণে সুদ ৪ থেকে ৫ শতাংশ। এমনকি ব্যাংকগুলোর জন্য ক্রেডিট গ্যারান্টি স্কিম আছে। সেই সঙ্গে আছে রাজস্বব্যবস্থা। প্রবৃদ্ধি নিয়ে আমাদের এখন মাথাব্যথা নেই। আমাদের এখন মূল্যস্ফীতি কমাতে হবে, সে জন্য প্রবৃদ্ধির হার ১ শতাংশ কমলেও সমস্যা নেই।
খেলাপি ঋণ কমানোর জন্য কী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে?
আব্দুর রউফ তালুকদার: খেলাপি ঋণ কমানোর জন্য আমরা পথনকশা তৈরি করেছি। আমরা এটা নিয়ে গত দু-তিন মাস ধরে কাজ করছি। সেই সঙ্গে সুশাসন কীভাবে নিশ্চিত করা যায়, তা নিয়েও কাজ করছি। এ লক্ষ্যে বেশ কিছু ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, সেটি যেন এখন আরও নিয়ন্ত্রিতভাবে করা যায়, সেই চেষ্টা করা হবে। সরকারের সঙ্গে পরামর্শ করতে হবে।
সরকার বিলাসদ্রব্য আমদানি নিয়ন্ত্রণে বিভিন্ন ব্যবস্থা নিয়েছে, কিন্তু তা কতটা কার্যকর হচ্ছে?
আব্দুর রউফ তালুকদার: বিলাসদ্রব্য আমদানি নিয়ন্ত্রণে এনবিআর দফায় দফায় কর-শুল্ক বাড়িয়েছে। এ ক্ষেত্রে যে মার্জিন রাখতে হয়, তা ১০০ শতাংশ করা হয়েছে; কোনো কোনো ব্যাংক তা ১১০ শতাংশ পর্যন্ত করেছে। সরাসরি কোনো পণ্য আমদানি নিষিদ্ধ করা হয়নি, করা যে যায় না তা নয়, কিন্তু তার জন্য নানা ধরনের ব্যাখ্যা দিতে হয়। সেটি না করে আমরা বিলাসদ্রব্য আমদানি নিরুৎসাহিত করেছি। তারপরও বিলাসদ্রব্য আমদানি হচ্ছে, যদিও আমরা তা নিরুৎসাহিত করার চেষ্টা করছি।
ব্যাংকের প্রতি মানুষের আস্থার সংকট তৈরি হয়েছে বলে মনে করেন কি?
আব্দুর রউফ তালুকদার: আস্থার সংকট নেই। বাংলাদেশের ইতিহাসের ৫২ বছরে কোনো ব্যাংক বন্ধ হয়নি, ভবিষ্যতেও হবে না। তবে নতুন যে ব্যাংক কোম্পানি আইন হয়েছে, সেটির মধ্যে মার্জারের (একীভূত) বিধান রাখা হয়েছে। সেটি ভিন্ন বিষয়। আমরা এখন ব্যাংকগুলোর ‘আর্থিক স্বাস্থ্য’ পর্যালোচনা করছি। কোনো সবল ব্যাংকের সঙ্গে তুলনামূলক দুর্বল কোনো ব্যাংক একীভূত করা যায় কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। একীভূত করা গেলে সেটি ভালো হবে। তবে ব্যাংকের প্রতি আস্থার সংকট নেই।
আপনি দায়িত্ব নেওয়ার পরে কিছু ব্যাংককে দুর্বল হিসেবে চিহ্নিত করেছিলেন। সেগুলোর অবস্থা কী?
আব্দুর রউফ তালুকদার: আমরা যে ব্যাংকগুলোকে দুর্বল ব্যাংক হিসেবে চিহ্নিত করেছিলাম, সেগুলো এরপর আর খারাপ হয়নি। একবার খারাপ হলে ভালো হতে সময় লাগে। তবে আর যে খারাপ হয়নি, সেটি নিশ্চিত।
ব্যাংক থেকে বড়রা ডলার পাচ্ছে, ছোটরা পাচ্ছে না। এতে অর্থনীতিতে কী ধরনের প্রভাব পড়তে পারে? ব্যাংকের ওয়েবসাইটে ডলারের দাম এক, আমদানি দায় পরিশোধ হচ্ছে আরেক দামে। এখানে যে ফারাক আছে, ব্যাংকগুলো বিষয়টা হিসাবের ক্ষেত্রে কীভাবে সমন্বয় করছে।
আব্দুর রউফ তালুকদার: আমরা চলতি হিসাব নিয়ন্ত্রণ করেছি, তাতে কিছু মানুষের কষ্ট হচ্ছে, কিছু ব্যবসায় সমস্যা হচ্ছে। কিন্তু আমাদের সামনে আর কোনো পথ ছিল না। একসময় বছরে ৯০ বিলিয়ন ডলারের ঋণপত্র (এলসি) খোলা হয়েছে, কিন্তু সেটি যথাযথ ছিল না। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে কিন্তু ডলার দেওয়া হচ্ছে। সেটির জন্য রিজার্ভ থেকে ডলার ছাড় হচ্ছে। ব্যাংকগুলোকে বলেছি, ডলার থাকলে এলসি করা যাবে, এতে সমস্যা নেই। তবে চলতি হিসাব আমাদের নিয়ন্ত্রণ করতে হয়েছে। কারণ, এক বছরে ১২০ বিলিয়ন ডলারের আমদানি হলে আমাদের আর কোনো রিজার্ভ থাকত না। বিদেশি কোম্পানির এলসি খোলার জন্য যেন সংকট না হয়, সে জন্য আইএফসি থেকে ৫০ কোটি ডলারের ঋণ আমরা অনুমোদন করেছি, যাতে বিদেশি কোম্পানিগুলো আমদানি ঠিক রাখতে পারে। বেশ কিছু ব্যাংককে আমরা আলাদা ক্রেডিট লাইন তৈরিতে উৎসাহ দিচ্ছি। দু-একটা ব্যাংক ইতিমধ্যে সেটা করেছেও।
ডলারের দাম আমরা বাজারভিত্তিক করতে পারব না, তবে তার কাছাকাছি করার একটা চেষ্টা আছে।
পাঁচ ব্যাংককে বাংলাদেশ ব্যাংক কোন ক্ষমতাবলে টাকা দিয়ে যাচ্ছে। এভাবে টাকা দেওয়া যায় কি না। এর আগে বলেছিলেন ঋণ পুনঃ তফসিল করার ফলে খেলাপি ঋণ কমবে, কিন্তু উল্টো তা বেড়েছে। খেলাপি ঋণের ব্যাপারে আপনার শিথিলতা দেখা যাচ্ছে, কিন্তু কেন?
আব্দুর রউফ তালুকদার: লেন্ডার অব লাস্ট রিসোর্ট বা শেষ আশ্রয়স্থল হিসেবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক অর্থ দিতে পারে। গভর্নরকে সেই ক্ষমতা দেওয়া আছে। এটা আইনের মধ্যে থেকেই হচ্ছে। আর ঋণ পুনঃ তফসিল করার কাজ বাংলাদেশ ব্যাংকের নয়, এটা সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের কাজ। বাংলাদেশেই এটা ঘটেছে যে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ঋণ পুনঃ তফসিল করেছে। ব্যাংকগুলো যখন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে সাহায্য চেয়েছে, তখন বাংলাদেশ ব্যাংক সেটি করে দিয়েছে। তবে আমরা এখন চাচ্ছি, যার কাজ সে করবে।
বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) সুপারিশে ন্যাশনাল ব্যাংকের পর্ষদ ভেঙে দেওয়া হলো; কিন্তু ব্যাংক খাতের নিয়ন্ত্রক কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ব্যাংকের অনিয়ম দেখা গেলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক পদক্ষেপ নেবে। সে ক্ষেত্রে বিএসইসির সুপারিশ কেন প্রয়োজন হলো।
আব্দুর রউফ তালুকদার: ন্যাশনাল ব্যাংকের ব্যাপারে বলা হয়েছে; এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংক তার কাজ করে যাচ্ছে। ব্যবস্থাপনা পরিচালক চলে গেলে বাংলাদেশ ব্যাংক তাঁকে ফিরিয়ে আনেন। সম্প্রতি তাদের বার্ষিক সাধারণ সভা বা এজিএম নিয়ে ঝামেলার প্রেক্ষাপটে বিএসইসিকে জানানো হয়, সেটির পরিপ্রেক্ষিতে তারা সুপারিশ করেছে। কোনো প্রতিষ্ঠান শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হলে বিএসইসিরও অনেক দায়িত্ব থাকে। এখন দেখা যাচ্ছে, কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও বিএসইসি উভয় নিয়ন্ত্রক সংস্থাই সক্রিয়ভাবে কাজ করছে। কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দায়িত্ব পালন করছে, এটা ভালো, আগে এমনটা দেখা যেত না, এখন যাচ্ছে।
মুদ্রানীতিতে পুঁজিবাজারের জন্য কী আছে?
আব্দুর রউফ তালুকদার: পুঁজিবাজার নিয়ে বিএসইসির চেয়ারম্যান ভালো বলতে পারবেন। তাঁর কাছেই আপনারা প্রশ্ন রাখবেন।