বিশ্বজুড়ে জনপ্রিয় লেইস ব্র্যান্ডের পটেটো চিপস এখন থেকে বাংলাদেশেই উৎপাদিত হবে।
পেপসিকো ইন্ডিয়া অঞ্চলের প্রেসিডেন্ট আহমেদ এলশেখ এবং ট্রান্সকম গ্রুপের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) সিমিন রহমান আজ মঙ্গলবার দুপুরে বগুড়ার একটি কারখানায় লেইস উৎপাদনের কার্যক্রম উদ্বোধন করেন বলে এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
পানীয় ও খাদ্যপণ্য উৎপাদনকারী বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান পেপসিকোর একটি ব্র্যান্ড লেইস। বাংলাদেশে পেপসিকোর অংশীদার ট্রান্সকম গ্রুপ।
পেপসিকোর ‘লেইস মেক ইন বাংলাদেশ’ উদ্যোগের আওতায় এ দেশে পণ্যটি উৎপাদনের কার্যক্রম শুরু হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, লেইস বাংলাদেশে উৎপাদনের ফলে এ দেশে কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে, কৃষকেরা উপকৃত হবেন এবং দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে এটা ভূমিকা রাখবে।
পেপসিকোর খাদ্য বিভাগের কান্ট্রি ম্যানেজার প্রণব মেহতা বলেন, লেইস বিশ্বজুড়ে একটি জনপ্রিয় ব্র্যান্ড। বাংলাদেশেও লেইসের প্রতি মানুষের আগ্রহ একই রকম। এটিই পেপসিকোকে তার বিশ্বস্ত অংশীদার ট্রান্সকমের সঙ্গে মিলে বাংলাদেশে চিপস উৎপাদনের উদ্যোগ নিতে উৎসাহিত করেছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশে উৎপাদিত হলে এ দেশের মানুষ খুবই সাশ্রয়ী দামে লেইস চিপস কিনতে পারবেন।
লেইস উৎপাদনের জন্য চিপস তৈরির উপযোগী উন্নত মানের আলু কেনা হবে বগুড়ার কৃষকদের কাছ থেকে। বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, প্রথম বছর ১০ হাজার মেট্রিক টন আলু কেনার লক্ষ্য রয়েছে। সে জন্য চুক্তি করা হবে ১ হাজার ২০০ জন কৃষকের সঙ্গে। কৃষকেরা এর মাধ্যমে প্রশিক্ষণ ও আলুর স্থিতিশীল দাম পাওয়ার নিশ্চয়তা পাবেন। পাশাপাশি লেইস উৎপাদনের জন্য একটি মানসম্মত, দক্ষ ও নির্ভরযোগ্য সরবরাহ ব্যবস্থা নিশ্চিত হবে।
পেপসিকো ইন্ডিয়ার প্রেসিডেন্ট আহমেদ এলশেখ বলেন, সুন্দর ভবিষ্যৎ গড়তে স্থানীয় বাসিন্দাদের ক্ষমতায়ন, সমাজের উন্নয়ন ও দীর্ঘ মেয়াদে অংশীদারত্বের প্রতি লেইসের অঙ্গীকার রয়েছে। পেপসিকো বাংলাদেশের কৃষকদের সঙ্গে কাজ করতে পেরে গর্বিত উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘আমরা আশা করি আমাদের অত্যাধুনিক প্রযুক্তি এবং আলু উৎপাদনের জ্ঞান কৃষকদের সহায়তা করবে।’
বাংলাদেশে তৈরি লেইস চিপস ১০ টাকা, ১৫ টাকা, ২৫ টাকা, ৫০ টাকা এবং ৭৫ টাকা দামের প্যাকেটে চারটি ভিন্ন স্বাদে বিক্রি হবে। স্বাদগুলো হলো আমেরিকান স্টাইল ক্রিম ও অনিয়ন, স্প্যানিশ টমেটো ট্যাঙ্গো, ক্ল্যাসিক সল্টেড এবং থাই স্টাইলের স্পাইসি চিকেন।
লেইস ব্র্যান্ডটি পেপসিকোর অঙ্গপ্রতিষ্ঠান ফ্রিটো-লের অধীনে পরিচালিত হয়। ফ্রিটো–লের ব্যবসার আকার ১ হাজার ৯০০ কোটি ডলার (প্রায় দুই লাখ কোটি টাকা)। অন্যদিকে পেপসিকো বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় কোমল পানীয় ও খাদ্যপণ্য বাজারজাতকারী প্রতিষ্ঠান।
পেপসিকোর পণ্য বিশ্বের ২০০টির বেশি দেশ ও অঞ্চলে বিক্রি হয়। দিনে ১০০ কোটির বেশিবার গ্রাহকেরা পেপসিকোর পণ্য গ্রহণ করেন। ২০২২ সালে প্রতিষ্ঠানটির পণ্য বিক্রির পরিমাণ ছিল ৮ হাজার ৬০০ কোটি ডলারের (৯ লাখ কোটি টাকা) বেশি।
পেপসিকোর তৈরি পেপসি কোলা, মাউন্টেন ডিউ, ডরিটোস, চিটোস, কোয়াকারসহ কোমল পানীয় ও হালকা খাবারের ব্র্যান্ডগুলো জনপ্রিয়।
ট্রান্সকম গ্রুপের সঙ্গে পেপসিকোর অংশীদারত্ব দুই দশকের। ট্রান্সকম গ্রুপের সিইও সিমিন রহমান বলেন, ‘বাংলাদেশে পেপসিকোর যাত্রায় আরেকটি মাইলফলকে পাশে দাঁড়াতে পেরে আমরা গর্বিত।’ তিনি বলেন, ‘আজ বাংলাদেশের মানুষের জন্য একটি ঐতিহাসিক দিন; কারণ, বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় চিপস লেইস এখন দেশেই উৎপাদিত হবে।’
সিমিন রহমান আরও বলেন, এই উদ্যোগ কৃষক, কৃষি সংস্থা, পরিবহনকারী, হিমাগার, চুক্তিভিত্তিক কর্মীসহ পুরো ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করে এই অঞ্চলে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনের একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে।