বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক আতিউর রহমান মনে করেন, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে জিডিপির ৪ দশমিক ৫ শতাংশ ঘাটতির যে প্রস্তাব রয়েছে, তা আরও কমানো যেত।
এই ঘাটতি ৩ দশমিক ৫ শতাংশে রাখা গেলে দেশীয় ব্যাংকব্যবস্থা থেকে ঋণের পরিমাণ আরও ৫৬ হাজার কোটি টাকা কমানো সম্ভব হতো বলে মনে করেন আতিউর রহমান। ঘাটতি হ্রাসের মাধ্যমে ব্যাংকঋণের ওপর নির্ভরতা কমানো গেলে তা মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণেও সহায়ক হতো। খবর বিজ্ঞপ্তি
গতকাল শুক্রবার ঢাকায় উন্নয়ন সমন্বয় কার্যালয়ের খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ সম্মেলনকক্ষে বাজেট প্রতিক্রিয়া অধিবেশনে মূল বক্তব্য উপস্থাপনের সময় কথাগুলো বলেন আতিউর রহমান। ব্যাংক এশিয়া পিএলসি ও উন্নয়ন সমন্বয়ের যৌথ উদ্যোগে বাস্তবায়িত ‘আমাদের সংসদ’ কার্যক্রমের আওতায় এ অধিবেশন আয়োজিত হয়।
অনুষ্ঠানে প্যানেল আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আর্ক ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক ও স্বাস্থ্য অর্থনীতিবিদ রুমানা হক, ব্যাংকিং খাত বিশেষজ্ঞ ফারুক মইনউদ্দীন ও সমাজতাত্ত্বিক খন্দকার সাখাওয়াত আলী।
মূল নিবন্ধে আতিউর রহমান আরও বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অস্থিরতা ও দেশীয় অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জগুলোর প্রতি সংবেদনশীলতার পরিচয় দিয়ে অনেকখানি সংকোচনমুখিতা দেখানো হয়েছে, এটি প্রশংসনীয়। তবে বিদ্যমান বাস্তবতায় বিশেষত উচ্চ মূল্যস্ফীতির বিষয়টি বিবেচনায় রেখে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও সামাজিক সুরক্ষায় বরাদ্দের ক্ষেত্রে আরও উদারতা দেখানো যেত; তা করা গেলে অস্থির আর্থসামাজিক বাস্তবতার পরিপ্রেক্ষিতে সামাজিক পিরামিডের পাটাতনে থাকা মানুষকে আরও সুরক্ষা দেওয়া যেত।
বাজেটে সংকোচনের চাপ থাকার পরও স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ কিছুটা বাড়ানোর উদ্যোগকে বিশেষভাবে স্বাগত জানান রুমানা হক। দেশের মোট স্বাস্থ্য ব্যয়ের দুই-তৃতীয়াংশের বেশি নাগরিকদের বহন করতে হচ্ছে, তাই বাজেটে সরকারি স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রের জন্য চিকিৎসাসামগ্রী ও পরীক্ষা-নিরীক্ষা বাবদ বরাদ্দ আরও বাড়ানো গেলে জনগণের চাপ উল্লেখযোগ্য মাত্রায় কমানো সম্ভব বলে মত দেন তিনি।
ফারুক মইনউদ্দীন বলেন, রাজস্ব আহরণে বিদ্যমান করদাতাদের ওপর বাড়তি করের বোঝা চাপানোর চেয়ে নতুন করদাতাদের করের আওতায় নিয়ে আসা বেশি জরুরি ও কার্যকর। বাংলাদেশের উন্নয়ন সম্ভাবনা বাস্তবে রূপ দিতে মানবসম্পদ উন্নয়নে যে নীতি-মনোযোগ দরকার, বাজেটের শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও সামাজিক সুরক্ষার পরিকল্পনায় তা প্রতিফলিত হচ্ছে না বলে মনে করেন খন্দকার সাখাওয়াত আলী।
অধিবেশনে গণমাধ্যমের প্রশ্নোত্তর পর্বের শেষে আয়োজকদের পক্ষে ধন্যবাদ জানান ব্যাংক এশিয়া পিএলসির করপোরেট অ্যাফেয়ার্স বিভাগের প্রধান সিদ্দিক ইসলাম।