সরকারি পর্যায়ে আরও সার, চিনি, গম ও চাল আমদানির অনুমতি দেওয়া হয়েছে। সে জন্য অর্থের বরাদ্দ নিশ্চিত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ। আজ বুধবার সচিবালয়ে ক্রয় কমিটির বৈঠকের পর সাংবাদিকদের এ কথাগুলো বলেন তিনি।
এ ছাড়া রোজার আগে খেজুর ও মসুর ডাল আমদানির অনুমতি দেওয়া হবে। বাজারে কোনো পণ্যের ঘাটতি বা দাম বৃদ্ধির কারণে যেন ভোক্তাদের কষ্ট না হয়, তা নিশ্চিত করা হবে জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা।
আজ সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির ২০২৪ সালের ১১তম সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বিবিধ বিষয়সহ সর্বমোট আটটি প্রস্তাব উপস্থাপিত হয়।
খাদ্যদ্রব্যের মজুত গুরুত্বপূর্ণ। ভবিষ্যতে কী কী জিনিস আমদানি বা মজুত করতে হবে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে, এসব বিষয়ে আজকের বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। কী কী জিনিস আমদানি করতে হবে, কোন দামে ও কখন করতে হবে, তা–ও মন্ত্রণালয় থেকে বলে দেওয়া হয়েছে। নভেম্বরের মাঝামাঝি সময় থেকে তা আসবে বলে জানান অর্থ উপদেষ্টা।
দেশে ইতিমধ্যে ধান উঠতে শুরু করেছে বলে জানান সালেহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, ধান ও চাল কী দামে কিনতে হবে, তা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রাও নির্ধারণ করা হয়েছে। বর্তমানে যে মজুত আছে এবং আজ যে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে, তা যোগ করে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে হিসাব কিছুটা বাড়িয়ে ধরা হয়েছে।
বৈঠকে আরেকটি বিষয় আলোচনা হয়েছে, যেটা ঠিক আলোচ্যসূচিতে ছিল না। সেটা হলো কৃষকের কাছ থেকে যে দামে ধান কেনা হয় এবং যে দামে তা ভোক্তাদের কাছে বিক্রি হয়, সে ক্ষেত্রে যেন তেমন একটা ব্যবধান না থাকে। সে জন্য বাজার মনিটরিং বা পর্যবেক্ষণের কথা বলেছেন অর্থ উপদেষ্টা।
একই সঙ্গে সুলভ মূল্যে সুষম খাদ্য নিশ্চিত করার কথা বলেছেন অর্থ উপদেষ্টা। ভাতের সঙ্গে মাছ, মাংস, ডিম ও দুধের প্রাপ্যতা যেন থাকে, তা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন মন্ত্রণালয়কে উদ্যোগ নেওয়ার কথা বলেছেন অর্থ উপদেষ্টা।
আজকের বৈঠকে যেসব প্রস্তাব অনুমোদিত হয়েছে, তার মধ্যে আছে আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে প্যাকেজ-১–এর আওতায় ৫০ হাজার টন গম ক্রয়ের প্রস্তাব। প্রতি টন ৩০১ দশমিক ৩৮ মার্কিন ডলার দরে মোট ১৮০ কোটি ৮২ লাখ ৮০ হাজার টাকায় এই গম কেনা হবে।
কাতার থেকে চতুর্থ লটের ৩০ টন ইউরিয়া সার আমদানির প্রস্তাব অনুমোদিত হয়েছে। প্রতি টনের মূল্য ধরা হয়েছে ৩৮৯ দশমিক ৬৭ মার্কিন ডলার। মোট ক্রয়মূল্য ১৪০ কোটি ২৮ লাখ ১২ হাজার টাকা।
এ ছাড়া ৫০ হাজার টন নন-বাসমতী সেদ্ধ চাল ক্রয়ের প্রস্তাব অনুমোদিত হয়েছে। প্রতি মেট্রিক টন ৪৭৭ মার্কিন ডলার দরে ২৮৬ কোটি ২০ লাখ টাকায় এই চাল কেনা হবে।
সরকার বাজারে নিত্যপণ্যের দাম ক্রেতার নাগালের মধ্যে রাখতে শুল্ক ছাড়সহ পণ্য আমদানিতে জোর দিয়েছে। এরই অংশ হিসেবে এই আমদানির অনুমোদন।