ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণসহ নাগরিকদের স্বাস্থ্যসেবা উন্নত করতে ২০ কোটি ডলার ঋণ দিচ্ছে বিশ্বব্যাংক। বর্তমান বাজারদরে বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ ২ হাজার ২০০ কোটি টাকার মতো।
শহরে নাগরিকদের স্বাস্থ্যসেবার উন্নয়ন শীর্ষক প্রকল্পের জন্য এই ঋণ নিতে যাচ্ছে সরকার। এই নিয়ে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সঙ্গে দর-কষাকষিও চূড়ান্ত হয়ে গেছে বলে জানা যায়।
দায়িত্বশীল সূত্রে জানা যায়, ৩০ আগস্ট বিশ্বব্যাংকের বোর্ড সভায় এই ঋণের অনুমোদন হতে পারে। অন্যান্য ঋণের মতো সহজ শর্তে এই ঋণ মিলবে বলে জানা গেছে।
ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেওয়ার এই প্রকল্পের ঋণ এমন এক সময় অনুমোদিত হতে যাচ্ছে, যখন দেশে ডেঙ্গুর প্রকোপ অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি। এই প্রকল্পের অর্থ দিয়ে ডেঙ্গু প্রতিরোধে জনসচেতনতা তৈরির পাশাপাশি চিকিৎসা–সুবিধা বাড়ানো হবে। ডেঙ্গু ছড়ানো প্রতিরোধ করতে এডিস মশা নির্মূলে থাকবে নানা উদ্যোগ।
এই অর্থ দিয়ে শুধু ডেঙ্গু প্রতিরোধ নয়, শহরের অন্যান্য নাগরিক স্বাস্থ্যসেবা উন্নত করার কাজেও খরচ করা হবে। যেমন শহরের বস্তি এলাকার নাগরিকদের পুষ্টিমান উন্নয়নেও কর্মসূচি নেওয়া হবে। এ ছাড়া জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণেও থাকবে নানা কার্যক্রম।
পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে জানা যায়, স্থানীয় সরকার বিভাগের পক্ষ থেকে ইতিমধ্যে এ–সংক্রান্ত একটি প্রকল্প প্রস্তাব কমিশনে পাঠানো হয়েছে। চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে প্রকল্পটি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটিতে (একনেক) পাঠানোর জন্য চূড়ান্ত করা হয়েছে বলে জানা গেছে। পাঁচ বছর মেয়াদের এই প্রকল্পটি যেকোনো সময় একনেকে উঠতে পারে।
ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন, চট্টগ্রাম সিটি, নারায়ণগঞ্জ সিটি এবং সাভার পৌরসভা এলাকায় এই প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হবে। শহর এলাকার নাগরিকদের স্বাস্থ্য সমস্যা যেসব কারণে হয়, সেগুলো কমানোর চেষ্টা করাই এই প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য। এই প্রকল্পের আওতায় স্বাস্থ্যসেবা বাড়াতে ক্লিনিক বানানো হবে। এ ছাড়া মেডিকেল বর্জ্য ব্যবস্থাপনা আধুনিক করা হবে।
বিশ্বব্যাংক সূত্রে জানা যায়, এখন বাংলাদেশের পোর্টফলিও-তে আছে ১ হাজার ৫৫৫ কোটি ডলার। সব মিলিয়ে ৫৪টি প্রকল্পে এই অর্থায়ন করা হয়েছে।
গত অর্ধশতাব্দীতে বাংলাদেশকে সব মিলিয়ে চার হাজার কোটি ডলারের মতো দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। এই অর্থ কাজে লেগেছে দারিদ্র্য বিমোচনে। রাস্তাঘাট, ভবনসহ বড় অবকাঠামো নির্মাণেও অর্থ দিয়েছে। এ ছাড়া শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সামাজিক নিরাপত্তা, পরিবেশ রক্ষা, কর্মসংস্থানসহ বিভিন্ন খাতে বিশ্বব্যাংক দশকের পর দশক অর্থ দিয়ে আসছে।