২০১৭ সালে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারী বেকার ছিলেন ৪ লাখ। ২০২২ সাল শেষে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৮ লাখ।
তাওফিকুর রহমান প্রায় দুই বছর ধরে বেকার বসে আছেন। ২০২২ সালে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেছেন তিনি। প্রথম দিকে সরকারি চাকরির জন্য আবেদন করেছেন। কিন্তু কোনো চাকরি মেলেনি। এখন যেকোনো চাকরি হলেই বাঁচেন—সরকারি কিংবা বেসরকারি। চাকরির জন্য একের পর এক আবেদন করেই যাচ্ছেন।
মা-বাবার বড় সন্তান তাওফিকুর রহমান। ছোট দুই বোন পড়াশোনা করছেন। তাঁর বাবা গাইবান্ধার একটি স্কুলের প্রধান শিক্ষক, বর্তমানে পক্ষাঘাতে আক্রান্ত। অবসরে যাওয়ারও সময় হয়ে এসেছে। তাই তাওফিকুর রহমানকে সংসারের হাল ধরতে হবে। কিন্তু চাকরি না পেয়ে নিজেই ধারদেনা করে চলছেন, মাঝেমধ্যে বাড়ি থেকেও টাকা আনতে হয়।
তাওফিকুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘মা-বাবা খুব আশা করে পড়াশোনা করিয়েছেন। দুই বছর ধরে বেকার বসে আছি। বাড়ির বড় সন্তান হিসেবে সংসারের হাল ধরতে পারছি না। নিজের কাছেই লজ্জা লাগে।’
বাংলাদেশে যে বিপুলসংখ্যক শিক্ষিত তরুণ–তরুণী বেকার বসে আছেন, তাওফিকুর রহমান তাঁদেরই একজন। তাঁরা একেবারে চাকরি পাচ্ছেন না কিংবা পছন্দমতো চাকরি পাচ্ছেন না। মেস করে থাকেন, মানবেতর জীবন যাপন করেন, আর একটি সম্মানজনক চাকরির জন্য দিন গোনেন। মধ্যবিত্ত বা নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারের শিক্ষিত বেকারদের মধ্যে যাঁরা পরিবারের সঙ্গে থাকেন, নানা টানাপোড়েন তাঁদের অসহায় করে তোলে, মানসিক চাপে থাকেন সব সময়।
শিক্ষার্থীদের কোটাবিরোধী আন্দোলন গণ–অভ্যুত্থানে রূপ নেওয়ার পর শেখ হাসিনা সরকারের পতন হয়েছে। মূলত চাকরি পাওয়া নিয়ে হতাশা থেকেই সাধারণ ছাত্রছাত্রীরা এই আন্দোলন গড়ে তোলেন। জরিপে উঠে এসেছে ৭৮ শতাংশ তরুণ কর্মসংস্থান নিয়ে উদ্বিগ্ন।
নতুন বিনিয়োগ না হলে শিক্ষিত যুবকদের জন্য চাকরির বাজার সৃষ্টি হবে না। তাই আমাদের বিনিয়োগ পরিবেশ উন্নত করতে হবে।জাহিদ হোসেন, সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ, বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়
সার্বিকভাবে কয়েক বছর ধরে দেশে বেকারের মোট সংখ্যা প্রায় অপরিবর্তিত। কিন্তু এর মধ্যে খারাপ খবর হলো, সাম্প্রতিক সময়ে উচ্চশিক্ষিত বেকারের সংখ্যা বেড়েছে। দেশে এখন প্রতি তিনজন বেকারের মধ্য একজন উচ্চশিক্ষিত। তাঁরা বিএ কিংবা এমএ ডিগ্রি নিয়েও শোভন চাকরি পাচ্ছেন না। ফলে শিক্ষিত তরুণ-তরুণীদের মধ্যে হতাশা প্রকট হয়েছে। বিভিন্ন জরিপেও উঠে এসেছে, দেশের তরুণেরা নিজের ভবিষ্যৎ জীবন নিয়ে চিন্তিত। অর্থনীতি এগিয়ে গেলেও তাঁরা নিজেদের কর্মসংস্থান নিয়ে উদ্বিগ্ন।
গত পাঁচ বছরে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারী বেকারের সংখ্যা দ্বিগুণ হয়েছে। এমন বড় ডিগ্রিধারী বেকারের সংখ্যা চার লাখ থেকে আট লাখে উন্নীত হয়েছে। অর্থাৎ মাত্র পাঁচ বছরের ব্যবধানে ‘বিএ-এমএ’ ডিগ্রিধারী বেকার বেড়েছে প্রায় চার লাখ। বেকারের এই হিসাবটি খোদ সরকারি সংস্থা বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস)। ২০২২ ও ২০১৭ সালের দুটি শ্রমশক্তি জরিপ ঘেঁটে শিক্ষিত বেকার বৃদ্ধির এই তথ্য মিলেছে। ২০২২ সালের পর আর পূর্ণাঙ্গ শ্রমশক্তি জরিপ হয়নি।
আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) নিয়ম অনুসারে, যাঁরা সাত দিনের মধ্যে মজুরির বিনিময়ে এক ঘণ্টা কাজ করার সুযোগ পাননি এবং এক মাস ধরে কাজপ্রত্যাশী ছিলেন, তাঁরা বেকার হিসেবে গণ্য হবেন। বিবিএস এই নিয়ম অনুসারেই বেকারের হিসাব দিয়ে থাকে।
প্রতিবছর শ্রমবাজারে ২০-২২ লাখ তরুণ গোষ্ঠী নতুন করে যুক্ত হচ্ছে। এদের মধ্যে বিপুলসংখ্যক মানুষের দেশে কর্মসংস্থান হচ্ছে না। আবার বেকারদের চার–পঞ্চমাংশের বেশি বয়সে তরুণ।
বেকারের বিপুল সংখ্যা বাংলাদেশে অন্যতম প্রধান সমস্যা। তরুণ জনগোষ্ঠী বেশি থাকার কারণে বাংলাদেশে এখন জনমিতির সুবিধা (ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড) বিরাজমান। দেশের মোট জনসংখ্যার এক-তৃতীয়াংশই তরুণ, যাঁরা কর্মক্ষম জনগোষ্ঠী। কিন্তু অর্থনীতি, ব্যবসা-বাণিজ্যে সম্প্রসারণ হলেও কর্মসংস্থান সেই অনুসারে বাড়ানো যাচ্ছে না। শোভন চাকরি না পেয়ে সর্বোচ্চ ডিগ্রি নিয়েও অনেকে টিউশনি, পাঠাও-উবারে ডেলিভারিম্যান, বিক্রয়কর্মীসহ নানা ধরনের কাজ করে জীবন ধারণ করছেন। এমনকি তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির সরকারি চাকরির জন্যও স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারীরা আবেদন করছেন।
কোভিড মহামারির পর দেশের অর্থনীতির শ্লথগতি হয়েছে। দীর্ঘ সময় ধরে উচ্চ মূল্যস্ফীতি বিরাজ করছে। ফলে সাধারণ মানুষকে সংসার চালাতেই হিমশিম খেতে হচ্ছে। বৈদেশিক মুদ্রার সংকট চলছে, যথেষ্ট দেশি–বিদেশি বিনিয়োগ হচ্ছে না। এসব কারণে বেসরকারি খাতে চাকরির সুযোগ কমেছে। পাশাপাশি সরকারি চাকরিতে কোটার কারণে মেধাবীদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সীমিত থাকায় তরুণদের অনেকেই হতাশ।
বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘যে ধরনের শিক্ষা তরুণেরা পাচ্ছেন এবং তাঁরা যে কাজ কাজ করতে পারেন, সেই ধরনের কাজ সৃষ্টি হচ্ছে না। আবার যে ধরনের কাজ সৃষ্টি হচ্ছে, এখনকার শিক্ষিত তরুণেরা সেই ধরনের কাজ করার দক্ষতা অর্জন করতে পারছেন না। বিষয়টা এমন দাঁড়িয়েছে, লোকে বলে চাকরি কই, চাকরি বলে লোক কই। ফলে শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা বাড়ছে।’
২০২২ সালের শ্রমশক্তি জরিপ অনুসারে, তখন দেশে বেকারের সংখ্যা ছিল ২৫ লাখ ৮২ হাজার। এই বেকারদের মধ্যে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারী আছেন ৭ লাখ ৯৯ হাজার। এর মানে হলো মোট বেকারের প্রায় ৩১ শতাংশই উচ্চশিক্ষিত। দেশের মোট বেকারের প্রতি তিনজনের একজন ‘বিএ-এমএ’ পাস করেও চাকরি পাচ্ছেন না।
স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারীদের সঙ্গে উচ্চমাধ্যমিক পাস বেকার তরুণ-তরুণীদের সংখ্যা যোগ করলে আরও খারাপ চিত্র পাওয়া যায়। দেশের মোট বেকারের ৫১ শতাংশই কমপক্ষে উচ্চমাধ্যমিক পাস।
একটু পেছন ফিরে দেখা যেতে পারে কোভিডের আগে অর্থাৎ ২০১৬-১৭ সালের দিকে উচ্চশিক্ষিতদের মধ্যে বেকার পরিস্থিতি কেমন ছিল। ২০১৭ সালে শ্রমশক্তি জরিপ অনুসারে, তখন দেশে বেকারের সংখ্যা ছিল ২৬ লাখ ৭৭ হাজার। এই বেকার তরুণ গোষ্ঠীর মধ্যে ৪ লাখ ৫ হাজারের চাকরিপ্রত্যাশীর শিক্ষাগত যোগ্যতা ছিল কমপক্ষে স্নাতক বা স্নাতকোত্তর ডিগ্রি। দেখা যাচ্ছে মাত্র পাঁচ বছরের ব্যবধানে উচ্চশিক্ষিত বেকারের সংখ্যা বেড়েছে প্রায় ৪ লাখ।
তবে শিক্ষার সুযোগ পাননি কিংবা প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করেছেন, এমন তরুণ-তরুণীদের মধ্যে বেকারের হার কম। কারণ, তাঁরা যেকোনো ধরনের কাজ করতে প্রস্তুত থাকেন।
মূলত কোভিডের পর ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হলে দেশের অর্থনীতি শ্লথগতি হয়ে যায়। অনেক প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যায় কিংবা কর্মী ছাঁটাই করে। কোভিডের সময় বিপুলসংখ্যক কর্মজীবী বেকার হয়েছিলেন। পরে অবশ্য তাঁদের বড় অংশ আবার কাজে ফিরে এসেছিলেন। কিন্তু অর্থনীতি নতুন করে সংকটে পড়লে নতুন চাকরিপ্রার্থীরা বিপাকে পড়ে যান। তাঁদের চাকরির সুযোগ সংকুচিত হয়। কারণ, নতুন বিনিয়োগ কম হচ্ছে। নতুন উদ্যোক্তা সৃষ্টিও কম হচ্ছে।
জিডিপির অনুপাতে বেসরকারি বিনিয়োগের তথ্য চাহিদা অনুসারে নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টির বার্তা দিচ্ছে না। বেসরকারি বিনিয়োগ এক দশক ধরে জিডিপির ২২-২৩ শতাংশে আটকে আছে। এর মানে হলো বেসরকারি বিনিয়োগ সেই হারে বাড়ছে না, যে হারে বাড়লে দেশের কর্মপ্রত্যাশী তরুণদের চাকরির বাজারে বেশি দিন হন্যে হয়ে ঘুরতে হয় না। ফলে দীর্ঘ সময় ধরে নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ সীমিত থাকছে।
বর্তমানে শ্রমশক্তিতে ৭ কোটি ৩০ লাখ ৫০ হাজার নারী-পুরুষ আছেন। তাঁদের মধ্যে ৭ কোটি ৪ লাখ ৭০ হাজার নারী-পুরুষ কর্মে নিয়োজিত আছেন।
বিবিএসের হিসাব অনুসারে দেশের মোট বেকারের সংখ্যা ২৫ লাখ ৮২ হাজার। তাঁদের মধ্যে সাড়ে ২১ লাখই তরুণ-তরুণী। বেকারদের ৮৩ শতাংশের বয়স ১৫ থেকে ২৯ বছর। গড় বেকারত্বের হার ৪ দশমিক ৭ শতাংশ হলেও তরুণ শ্রমশক্তির মধ্যে বেকারের হার ৮ শতাংশ। একজন কাজপ্রত্যাশী তরুণকে গড়ে এক মাস থেকে দুই বছরের বেশি সময় ধরে বেকার থাকতে হয়।
বিবিএসের আরেকটি সমীক্ষা বাংলাদেশ স্যাম্পল ভাইটাল স্ট্যাটিসটিকস ২০২২ অনুসারে বাংলাদেশের প্রায় ৪১ শতাংশ তরুণ নিষ্ক্রিয়। মানে হলো তাঁরা পড়াশোনায় নেই, কর্মসংস্থানে নেই, এমনকি কোনো কাজের জন্য প্রশিক্ষণও নিচ্ছেন না। মেয়েদের মধ্যে নিষ্ক্রিয়তার হার বেশি, ৬১ দশমিক ৭১ শতাংশ। ছেলেদের মধ্যে এ হার কম, ১৮ দশমিক ৫৯ শতাংশ। এই ধরনের তরুণের সংখ্যা বাড়ছে।
সরকারি পরিসংখ্যান অনুসারে প্রতিবছর শ্রমবাজারে ২০-২২ লাখ তরুণ গোষ্ঠী নতুন করে যুক্ত হচ্ছে। তাঁদের মধ্যে ১২-১৩ লাখের দেশের অভ্যন্তরে কর্মসংস্থান হয়। তা ছাড়া তাঁদের মধ্যে প্রায় ৮৫ শতাংশের মতো মজুরিভিত্তিক অনানুষ্ঠানিক কর্মসংস্থানে যান, বাকিরা শোভন চাকরি পান। সেই হিসাবে প্রতিবছর তিন লাখের মতো শোভন চাকরি হয়। আর প্রতিবছর গড়ে ৮-৯ লাখ মানুষ প্রবাসে যান চাকরির খোঁজে।
গত ২২ ফেব্রুয়ারি সাবেক জনপ্রশাসনমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন জাতীয় সংসদে এক প্রশ্নের উত্তরে পাঁচ বছরে সরকারি চাকরির হিসাব দিয়েছিলেন। তাঁর হিসাব অনুসারে ২০১৯ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত (পাঁচ বছর) দেশে বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানে ৩ লাখ ৫৮ হাজার ২৩৭টি পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। প্রতিবছর গড়ে ৭১ হাজারের বেশি সরকারি চাকরি হয়েছে। এর মানে হলো দেশে প্রতিবছর যত শোভন কর্মসংস্থান বা চাকরি সৃষ্টি হয়, এর মধ্যে চার ভাগের তিন ভাগই হয় বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে। চাহিদার তুলনায় সরকারি চাকরি কম হচ্ছে।
গত পাঁচটি বিসিএস (সাধারণ) পরীক্ষার তথ্য–উপাত্ত বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, যতগুলো পদের জন্য আবেদন আহ্বান করা হয়েছে, তার চেয়ে ২০০ গুণ বেশি আবেদন জমা পড়েছিল। সর্বশেষ ৪৬তম বিসিএস পরীক্ষায় পদের সংখ্যা ১ হাজার ১৪০টি। প্রাথমিকভাবে আবেদন জমা পড়ে ৩ লাখ ৩৮ হাজারের মতো। ৪৫তম বিসিএসে ২ হাজার ৩০৯টি পদের বিপরীতে আবেদনসংখ্যা ছিল ৩ লাখ ৪৬ হাজার। ৪৪তম বিসিএসের আবেদন জমা পড়ে ২ লাখ ৭৬ হাজার ৭৬০টি। পদের সংখ্যা ছিল ১ হাাজর ৭১০টি।
এ ছাড়া ৪৩তম বিসিএসে ১ হাজার ৮১৪টি পদের বিপরীতে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ৩ লাখ ৩৫ হাজার ১৯০ জন। ৪১তম বিসিএসে ২ হাজার ৫২০টি পদের বিপরীতে পৌনে পাঁচ লাখ স্নাতক ডিগ্রিধারী আবেদন করেছিলেন। ৪২তম বিসিএস পরীক্ষায় বিশেষ শ্রেণির জন্য নেওয়া হয়েছিল।
২০১৭ ও ২০১৯ সালে প্রথম আলোর পক্ষ থেকে তরুণদের নিয়ে দুটি জরিপ করা হয়। সেখানে তরুণদের নিজেদের জীবনের লক্ষ্য, কর্মসংস্থান, সমাজভাবনা—এসব নিয়ে মতামত তুলে ধরা হয়। ২০১৯ সালের জরিপে সারা দেশের ১৫-৩০ বছর বয়সী ১ হাজার ২০০ তরুণের মতামত নেওয়া হয়। জরিপে অংশ নেওয়া ৭৮ শতাংশ জানিয়েছিলেন, তাঁরা নিজেদের কর্মসংস্থান নিয়ে উদ্বিগ্ন। মতামত দেওয়া উচ্চশিক্ষিত তরুণদের ৯১ শতাংশই ভবিষ্যৎ কর্মসংস্থান উদ্বেগ প্রকাশ করেন। প্রতি পাঁচজন তরুণের মধ্যে চারজনই নিজেদের জীবনের লক্ষ্য অনিশ্চিত বলে মনে করেন।
২০২০ সালের পর কোভিড, ইউক্রেন যুদ্ধ, ব্যবসা-বাণিজ্য শ্লথগতি—এসব কারণে কর্মসংস্থান পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে। দুই দশক ধরে বেকারের সংখ্যা ২৪ থেকে ২৭ লাখের মধ্যে ওঠানামা করছে। কোভিডের আগে সরকারি হিসাবে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৮ শতাংশের কাছাকাছি পৌঁছালেও এই উচ্চ প্রবৃদ্ধি বেকারের সংখ্যা কমাতে খুব একটা প্রভাব রাখতে পারছে না।
বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন বলেন, ‘কয়েক বছর ধরেই বিনিয়োগ পরিস্থিতি অনেকটাই স্থবির। নতুন বিনিয়োগ না হলে শিক্ষিত যুবকদের জন্য চাকরির বাজার সৃষ্টি হবে না। তাই আমাদের বিনিয়োগ পরিবেশ উন্নত করতে হবে। অন্যদিকে পরিবর্তিত চাকরির বাজারের উপযোগী দক্ষ জনশক্তি গড়ে তুলতে হবে।’