দেড় বছর বিরতির পর সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে গত মঙ্গলবার থেকে ট্রাকে করে ভর্তুকি মূল্যে পণ্য বিক্রি শুরু হয়েছে। প্রথম দিনে লোক জানাজানি কম হওয়ার কারণে ভিড়ও ছিল কম। তবে দ্বিতীয় দিনে গতকাল বুধবার অনেককেই পণ্য কেনার টোকেন না পেয়ে ফিরে যেতে হয়েছে। আর যাঁরা টোকেন পেয়েছেন, তাঁদের দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হয়েছে।
রাজধানীর শাহজাহানপুরে গতকাল টিসিবির ট্রাকে করে পণ্য বিক্রির স্থানে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সেখানে সাড়ে ১০টায় প্রথম দফায় অর্ধেক টোকেন দেওয়া হয়। দুপুরের দিকে বাকি অর্ধেক টোকেনের পণ্য বিক্রি করা হয়। তবে সবাই টোকেন পাননি। সে জন্য বেলা দেড়টা থেকে বিকেল সাড়ে চারটা পর্যন্ত দফায় দফায় অন্তত দেড় শ মানুষ ফিরে গেছেন। শেষ বিকেলেও ৩০ থেকে ৩৫ জন টোকেন ছাড়াই অপেক্ষা করছিলেন।
খিলগাঁও এলাকার বাসিন্দা সেলিম আহমদ টোকেন না পাননি। বেলা চারটার দিকে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘দুপুরে এসে টোকেন পাইনি। এরপরও অপেক্ষা করছি। টোকেন পাওয়া সবাইকে পণ্য দেওয়ার পরে কিছু পাই কিনা দেখি।’
রাজধানীর ৩০টি স্থানে টিসিবির পণ্য বিক্রির এই কার্যক্রম চলছে। প্রতি জায়গায় ৩০০ জনকে টোকেন দেওয়া হয়। তাঁদের কাছেই কেবল পণ্য বিক্রি করেন টিসিবির ডিলাররা। কারণ, প্রতিটি ট্রাকে ৩০০ জনের জন্যই পণ্য থাকে। পণ্য পেতেও দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হচ্ছে। এবার টিসিবির আলু-পেঁয়াজ প্যাকেট করে দেওয়ার কারণে সময় বেশি লাগছে।
শাহজাহানপুর বাজারসংলগ্ন এলাকার বাসিন্দা আসমা আলম প্রথম আলোকে বলেন, ‘সকাল ১১টায় এসে পণ্য পাইলাম বিকেল চারটায়। কম দামে পণ্য পেয়ে ভালো লাগছে। তবে এত সময় দাঁড়িয়ে থাকতে হলে সুস্থ মানুষও অসুস্থ হয়ে যাবেন।’
টিসিবির ট্রাকে পণ্য বিক্রির জন্য এবার টোকেনের ব্যবস্থা করায় আগের তুলনায় শৃঙ্খলা ফিরেছে। এরপরও অবশ্য চাপ সামলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে বিক্রেতাদের। টিসিবির পণ্য বিক্রি করে এমন আরও চারজন ডিলারের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মালামাল নিয়ে নির্দিষ্ট স্থানে পৌঁছানোর পর হুড়োহুড়ি লেগে যায়।
মিরপুর ১২ এলাকার ডিলারের প্রতিনিধি ফরিদুল ইসলাম বলেন, ‘মানুষের ব্যাপক সাড়া পাওয়া যাচ্ছে। কিন্তু ৩০০ টোকেনের বাইরে পণ্য দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। কেউ পণ্য না পেয়ে চলে গেলে আমাদেরও খারাপ লাগে। কিন্তু কিছু করারও তো থাকে না। এবার টোকেন দেওয়ার ফলে এটা নিশ্চিত করা যাচ্ছে কে পণ্য পাবেন, আর কে পাবেন না।’
উল্লেখ্য, টোকেন পেলে একেকজন ক্রেতা টিসিবির ট্রাক থেকে দুই কেজি করে মসুর ডাল, আলু ও পেঁয়াজ এবং দুই লিটার সয়াবিন তেল কিনতে পারেন। প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৫০ টাকা, আলু ৩০ টাকা ও মসুর ডাল ৭০ টাকায় এবং প্রতি লিটার সয়াবিন তেল ১০০ টাকায় বিক্রি হয়।