ব্যাংকে গচ্ছিত টাকার ওপর আবগারি শুল্কের পরিমাণ বাড়তে পারে। আগামী ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে বড় আমানতকারীদের গচ্ছিত টাকায় আবগারি শুল্কের হার বাড়ানোর ঘোষণা থাকতে পারে। আবগারি শুল্ক বসানোর ক্ষেত্রে টাকার পরিমাণ বাড়তে পারে, আবার স্তর বাড়ানো হতে পারে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
বর্তমানে এক লাখ পর্যন্ত ব্যাংক হিসাবের স্থিতিতে কোনো আবগারি শুল্ক নেই। আবার ১ লাখ থেকে ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত ১৫০ টাকা এবং ৫ লাখ থেকে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত ৫০০ টাকা আবগারি শুল্ক দিতে হয়। এ দুটি স্তরে কোনো পরিবর্তন আসছে না। ব্যাংক হিসাবের টাকায় বছরে অন্তত একবার এসব স্তর স্পর্শ করলেই আবগারি শুল্ক দিতে হয়। বছরে একবারই আবগারি শুল্ক বসে।
বর্তমানে ১০ লাখ টাকা থেকে ১ কোটি টাকা পর্যন্ত স্তরটি ভেঙে দেওয়া হচ্ছে। সেখানে ১০ লাখ টাকা থেকে ৫০ লাখ টাকা পর্যন্ত আগের মতোই তিন হাজার টাকা আবগারি শুল্ক বসবে। ৫০ লাখ টাকা থেকে এক কোটি টাকা পর্যন্ত তিন হাজার টাকার পরিবর্তে পাঁচ হাজার টাকা আবগারি শুল্ক বসতে পারে।
এক কোটি টাকা থেকে পাঁচ কোটি টাকা পর্যন্ত স্তরটিও ভেঙে দেওয়া হচ্ছে। সেখানে এক কোটি টাকা থেকে দুই কোটি টাকা পর্যন্ত ১০ হাজার টাকা এবং দুই কোটি টাকা থেকে পাঁচ কোটি পর্যন্ত ২০ হাজার টাকা করা হতে পারে। এখন এক কোটি টাকা থেকে পাঁচ কোটি টাকা পর্যন্ত ১৫ হাজার টাকা আবগারি শুল্ক বসে।
কারও ব্যাংক হিসাবে বছরে একবার যদি স্থিতি পাঁচ কোটি টাকা অতিক্রম করে, তাহলে আবগারি শুল্কের পরিমাণ ৫০ হাজার টাকা করা হতে পারে। এখন এই স্তরে ৪০ হাজার টাকা দিতে হয়।
এনবিআরের ভ্যাট বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, বাজেট ঘোষণার আগে শেষ মুহূর্তে ব্যাংকে গচ্ছিত অর্থের ওপর আবগারি শুল্ক বৃদ্ধির চিন্তা করা হচ্ছে।
প্রতিবছর জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর মাসের মধ্যে এক লাখ টাকার সীমা যদি একবার স্পর্শ করে, তাহলেই আবগারি শুল্ক দিতে হয়। একাধিকবার স্পর্শ করলেও একবারই আবগারি শুল্ক কাটা হয়। কোনো হিসাবে এক লাখ টাকার কম থাকলে কোনো আবগারি শুল্ক কাটা হয় না।
এর আগে ২০২০-২১ অর্থবছরে সর্বশেষ ব্যাংকে থাকা টাকার ওপর আবগারি শুল্কের পরিমাণ বাড়ানো হয়েছিল। অপেক্ষাকৃত কম টাকার হিসাবধারীদের কিছুটা স্বস্তি দেওয়ার পাশাপাশি বেশি টাকার হিসাবধারীদের কাছ থেকে বেশি আবগারি শুল্ক আদায় করতে চায় সরকার।
ব্যাংকে গচ্ছিত টাকায় আবগারি শুল্ক বসানো সাধারণত গ্রাহকের কাছে অজনপ্রিয় হয়। তাই আবগারি শুল্ক বাড়ানোর সিদ্ধান্তটি সরকারের উচ্চপর্যায়ের কাছ থেকে চূড়ান্ত অনুমোদন নেওয়া সাপেক্ষে বাজেটে অন্তর্ভুক্ত করা হবে। বর্তমানে ব্যাংকের গচ্ছিত টাকা ও বিমান টিকিট কেনা, এই দুই খাতের ওপর আবগারি শুল্ক বসে।