বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে অর্থ বরাদ্দে বড় ধরনের কাটছাঁট করা হয়েছে। অন্যদিকে রাস্তাঘাট নির্মাণের জন্য বরাদ্দ বাড়ানো হয়েছে। সব মিলিয়ে চলতি অর্থবছরে ২ লাখ ৪৫ হাজার কোটি টাকার সংশোধিত এডিপি পাস করা হয়েছে।
জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (এনইসি) গতকাল মঙ্গলবারের সভায় চলতি অর্থবছরের সংশোধিত এডিপি পাস করা হয়। শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত এ সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সভা শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী আবদুস সালাম, পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী শহীদুজ্জামান সরকার সাংবাদিকদের এসব বিষয়ে অবহিত করেন।
সব মিলিয়ে সংশোধিত এডিপির আকার কমেছে ১৮ হাজার কোটি টাকা। বিদেশি সহায়তা থেকে কমছে সাড়ে ১০ হাজার কোটি টাকা। তাতে এডিপিতে বিদেশি সহায়তার পরিমাণ কমে দাঁড়িয়েছে ৮৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। আর দেশজ উৎসের বরাদ্দ কমানো হয়েছে সাড়ে সাত হাজার কোটি টাকা। তাতে সংশোধিত এডিপিতে দেশজ উৎসের অর্থ বরাদ্দ কমে দাঁড়ায় ১ লাখ ৬১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা।
শিক্ষা–স্বাস্থ্যে কমল, বাড়ল স্থানীয় সরকারে
সরকারের অন্যতম অগ্রাধিকার খাত হলো শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাত। অথচ এই দুটি খাতের বরাদ্দ কমানো হয়েছে। সংশোধিত এডিপিতে শিক্ষা খাতে বরাদ্দ কমেছে ১২ হাজার ৬৬০ কোটি টাকা। তাতে শিক্ষা খাতে বরাদ্দ কমে দাঁড়াচ্ছে ১৭ হাজার ২২৯ কোটি টাকা। অন্যদিকে স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ কমেছে ৪ হাজার ৩৮ কোটি টাকা। এই খাতে বরাদ্দ কমে দাঁড়িয়েছে ১২ হাজার ৬৬ কোটি টাকা। সব মিলিয়ে শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাত মিলিয়ে বরাদ্দ কমল সাড়ে ১৬ হাজার কোটি টাকার বেশি।
অন্যদিকে দেশজুড়ে রাস্তাঘাট নির্মাণ করে থাকে স্থানীয় সরকার বিভাগ। সংশোধিত এডিপিতে এই বিভাগের বরাদ্দ ২ হাজার ১৯৭ কোটি টাকা বাড়ানো হয়েছে। সব মিলিয়ে এই বিভাগের জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৪২ হাজার ৭০০ কোটি টাকা।
শিক্ষা ও স্বাস্থ্যে কেন বরাদ্দ কমানো হলো—এমন প্রশ্নের জবাবে পরিকল্পনামন্ত্রী আবদুস সালাম সাংবাদিকদের বলেন, ‘সক্ষমতা বলে একটা বিষয় আছে। এই খাতে যতটা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে, তা খরচ করতে পারেনি। প্রকল্প পরিচালকদের জ্ঞানের অভাবও আছে। শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতের প্রতিনিধিদের বলা হয়েছে, তারা যেন সক্ষমতা বাড়ায়। তাদের জন্য বরাদ্দ আছে।’
এদিকে প্রকল্প বাস্তবায়নের সক্ষমতা বাড়াতে এবং প্রকল্প পরিচালকদের তালিকা তৈরিতে প্রয়োজনীয় সুপারিশ করার জন্য মন্ত্রিপরিষদ সচিবের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানান পরিকল্পনাসচিব সত্যজিত কর্মকার।