বাজেট বিশ্লেষকদের সবচেয়ে প্রিয় সিনেমা সম্ভবত সার্জিও লিওনের দ্য গুড দ্য ব্যাড অ্যান্ড দ্য আগলি। বাজেটের ভালো, মন্দ ও খুব খারাপ পর্যালোচনায় বারবারই ব্যবহার করা হয় এই সিনেমাকে
ভালো
■ স্থানীয় শিল্প, বিশেষ করে লিফট, বাইসাইকেলসহ কয়েকটি খাতকে সুরক্ষা দেওয়ার উদ্যোগটি ইতিবাচক। এতে দেশীয় শিল্পের বিকাশ হবে।
■ সর্বজনীন পেনশন চালুর ঘোষণাটি উৎসাহব্যঞ্জক। তবে পেনশনপ্রাপ্তি নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক রয়েছে। সেটি দূর করার জন্য পদক্ষেপ লাগবে।
খারাপ
■ মূল্যস্ফীতি ৬ শতাংশে রাখার কথা বলেছেন অর্থমন্ত্রী। কিন্তু মূল্যস্ফীতি কীভাবে এই জায়গায় রাখা হবে, সেই পদক্ষেপ নেই।
■ সরকারি ব্যয় বাড়ানো হয়েছে ১৫ শতাংশ। বর্তমান অর্থনৈতিক সংকটে এই ব্যয় বৃদ্ধি কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।
সবচেয়ে খারাপ
■ চলমান ডলার–সংকট থেকে উত্তরণের কোনো রূপরেখা বাজেটে নেই।
■ বেসরকারি খাতের বিনিয়োগ জিডিপির ২৭.৪ শতাংশে উন্নীত করার কথা বলেছেন অর্থমন্ত্রী। কিন্তু কীভাবে করবেন, তা বলেননি।
ভালো
■ ব্যক্তিশ্রেণিতে করমুক্ত আয়সীমা বাড়িয়ে এবারের বাজেট সাড়ে তিন লাখ টাকা করা হয়েছে। এটা বর্তমান মূল্যস্ফীতির প্রেক্ষাপটে স্বল্প আয়ের মানুষের জন্য কিছুটা স্বস্তির হবে।
■ দেশীয় শিল্পকে সুরক্ষা দিতে আগের উদ্যোগগুলো অব্যাহত রাখা হয়েছে। এতে বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান বাড়বে। দেশে উৎপাদিত পণ্যের দামও তুলনামূলক কম থাকবে।
খারাপ
■ রাজস্ব কাঠামোর দুর্বলতা রয়ে গেছে। বাস্তবতাবিবর্জিত রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া হয়েছে। বর্তমান প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোতে এ লক্ষ্য পূরণ করা সম্ভব নয়।
■ অর্থনীতির সূচকগুলো যে অনুমিতির ভিত্তিতে ধরা হয়েছে, তা বাস্তবসম্মত নয়। যেমন জিডিপির প্রবৃদ্ধি ৭.৫, মূল্যস্ফীতি ৬ ও বেসরকারি বিনিয়োগ ২৭.৪ শতাংশের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হওয়ার বাস্তবতা নেই।
সবচেয়ে খারাপ
■ আয়কর রিটার্নের প্রমাণপত্র পেতে করদাতাকে ন্যূনতম দুই হাজার টাকা আয়কর দিতে হবে। এটি বৈষম্যমূলক। কারণ, সরকারি অনেক (৩৮টি) সেবা নিতে মানুষকে রিটার্ন জমা দিতে হয়। কিন্তু তাঁদের সবাই আয়করযোগ্য নন।
■ গত অর্থবছরে কালো টাকা সাদা করা নিয়ে বিভিন্ন সুযোগ ছিল। এবার ওই বিষয়ে কিছু বলা হয়নি। বিষয়টা স্পষ্ট না করা রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও নৈতিকভাবে সমর্থনযোগ্য নয়।
ভালো
■ স্থানীয় প্রতিষ্ঠানকে সমর্থন দিতে আমদানিতে কর বাড়ানো বা আরোপ।
■ এই সময়ে গরিবদের ভাতা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত ভালো উদ্যোগ।
খারাপ
■ এই খারাপ সময়ে করপোরেট কর ছাড় দেওয়া হয়নি।
■ আবারও ব্যাংক খাত থেকে বাজেট ভর্তুকি মেটানোর উদ্যোগ।
সবচেয়ে খারাপ
■ পড়ালেখার অন্যতম অনুষঙ্গ কলমের ওপর কর আরোপ।
■ টিস্যু এখন বিলাসপণ্য নয়, এর ওপর কর বাড়ানো ঠিক হয়নি।
ভালো
■ স্থানীয় শিল্পকে সুরক্ষা দেওয়ার উদ্যোগ ইতিবাচক। সিদ্ধান্তটি দেশীয় শিল্পের বিকাশে সহায়ক হবে।
■ করপোরেট কোম্পানির উইথহোল্ডিং ট্যাক্স রিটার্নের সংখ্যা ২৯টি থেকে কমিয়ে ১২টিতে নামিয়ে আনার পদক্ষেপটি প্রশংসনীয়।
খারাপ
■ করমুক্ত আয়সীমা মাত্র ৫০ হাজার টাকা বাড়িয়ে সাড়ে ৩ লাখ টাকা করা হয়েছে। এটিকে কমপক্ষে ৫ লাখ টাকা করার দরকার ছিল।
■ কোম্পানির করপোরেট কর কমানো হয়নি। এতে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হওয়ার পর আঞ্চলিক প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়বে বাংলাদেশ।
সবচেয়ে খারাপ
■ বাজেটের আকার, অর্থাৎ ব্যয় বাড়ানো হয়েছে। সে অনুযায়ী রাজস্ব বাড়ছে না। ফলে সরকারের ব্যাংকঋণ বাড়বে। এতে বেসরকারি খাতে ঋণের প্রবাহ কমবে।
■ উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে সাধারণ মানুষ কষ্টে আছেন। অর্থমন্ত্রী কীভাবে মূল্যস্ফীতি ৬ শতাংশে নামিয়ে আনবেন, সে বিষয়ে সুস্পষ্ট নির্দেশনা নেই।