এনবিআরের কার্যালয়
এনবিআরের কার্যালয়

অর্ধ শতাধিক পণ্যের শূন্য শুল্ক প্রত্যাহার হতে পারে 

শূন্য শুল্কের কিছু পণ্যে আগামী ২০২৪-২৫ অর্থবছর থেকে ১ শতাংশ হারে আমদানি শুল্ক আরোপ হতে পারে। বর্তমানে খাদ্যপণ্যসহ অত্যাবশ্যকীয় ও জীবন রক্ষাকারী পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে কোনো ধরনের শুল্ক নেই। বর্তমানে এ ধরনের ৩২৯টি পণ্য আমদানিতে আমদানিকারকদের কোনো ধরনের আমদানি ও সম্পূরক শুল্ক দিতে হয় না। এই তালিকায় আছে খাদ্যপণ্য, সার, গ্যাস, ওষুধ, শিল্পের কাঁচামাল, কৃষি উপকরণ ইত্যাদি।

আগামী বাজেটে ওই তালিকার ১০-১৫ শতাংশ পণ্যের আমদানির ক্ষেত্রে ন্যূনতম ১ শতাংশ হারে আমদানি শুল্ক আরোপ করা হতে পারে। সেই হিসাবে অর্ধশতাধিক পণ্যের ওপর এই শুল্ক বসার সম্ভাবনা রয়েছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

এনবিআরের সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, যেসব পণ্য আমদানিতে মিথ্যা ঘোষণা দেওয়া হয় এবং অর্থ পাচারের সুযোগ বেশি—এমন পণ্যেই নতুন করে শুল্ক বসানোর কথা ভাবা হচ্ছে। জানা গেছে, শুল্ক কর্মকর্তারা এখন সেই তালিকা চূড়ান্ত করছেন। একই এইচএস কোডে একাধিক পণ্য আছে। 

যেসব পণ্যে ১ শতাংশ আমদানি শুল্ক বসানোর চিন্তা করা হচ্ছে তার প্রাথমিক তালিকায় আছে গম, ভুট্টা, শর্ষেবীজ, তুলাবীজ, বিভিন্ন শাকসবজির বীজ, বিটুমিন, কয়লা, জিপসাম, ভিটামিন, পেনিসিলিন, ইনসুলিন, বিভিন্ন ধরনের দরকারি রাসায়নিক, প্লাস্টিক কয়েল, পেপার বোর্ড, বিভিন্ন স্টিলজাতীয় পণ্য, শিল্পের কাঁচামাল, যন্ত্রপাতি ও যন্ত্রাংশ ইত্যাদি। 

এনবিআরের শুল্ক বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, শূন্য শুল্কের এইচএস কোড ব্যবহার করে কিছু পণ্য মিথ্যা ঘোষণা দিয়ে আমদানি করা হয়। বাস্তবে সেসব পণ্য শুল্কমুক্ত নয়। কিন্তু শুল্ক কর্মকর্তাদের পক্ষে প্রতিটি চালান সশরীরে যাচাইবাছাই করা সম্ভব হয় না। তাই এবার কিছু পণ্যে শুল্ক বসিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। 

এদিকে আগামী বাজেটে ব্যবসায়ী নেতারা অত্যাবশ্যক পণ্যের শুল্ক না বাড়িয়ে প্রত্যক্ষ করা বাড়ানোতে জোর দেওয়ার সুপারিশ করেছেন।

বর্তমানে ট্যারিফ লাইনে ৭ হাজার ১৫৯টি পণ্য আছে। এর মধ্যে ৬৫৯টি মূলধনি যন্ত্রপাতিসংক্রান্ত পণ্যে ১ শতাংশ, ১ হাজার ২১৬টি মৌলিক কাঁচামালে ৫ শতাংশ; ১ হাজার ৫৫২টি মধ্যবর্তী কাঁচামালে ১০ শতাংশ; ১০৪টি সেমি প্রস্তুত পণ্যে ১৫ শতাংশ এবং ৩ হাজার ২৫৫টি সম্পূর্ণ প্রস্তুত পণ্যে ২৫ শতাংশ আমদানি শুল্ক আরোপ হয়। 

চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরে সব মিলিয়ে এনবিআরের রাজস্ব আয়ের সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রা ৪ লাখ ১০ হাজার কোটি টাকা। গত জুলাই-এপ্রিল মাসে অর্থাৎ ১০ মাসে শুল্ক–কর আদায় হয়েছে ২ লাখ ৮৯ হাজার ৩৭৭ কোটি টাকা। এর মধ্যে শুধু আমদানি শুল্ক থেকে আদায় হয়েছে ৩২ হাজার ৯১৪ কোটি টাকা। পুরো বছরে ৪৩ হাজার ৮৭৫ কোটি টাকার আমদানি শুল্ক আদায়ের লক্ষ্য আছে এনবিআরের।