বিদায় নেওয়া ২০২২-২৩ অর্থবছরে গড় মূল্যস্ফীতি ছিল ৯ শতাংশের বেশি, ডলারের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়ন ঘটেছে প্রায় ১৪ শতাংশ, বৈদেশিক মুদ্রার মজুত বা রিজার্ভ কমেছে অর্ধেক, কমেছে বেসরকারি বিনিয়োগ, শিল্পের মধ্যবর্তী পণ্য ও মূলধনি যন্ত্রপাতির আমদানি কমেছে ব্যাপকভাবে, বেড়েছে খেলাপি ঋণ, দুর্বল হয়েছে ব্যাংক খাত।
ইতিহাসে আর্থিক হিসাবের সর্বোচ্চ ঘাটতি নিয়ে একটি অর্থবছর শেষ করেছে বাংলাদেশ। অর্থাৎ বৈদেশিক মুদ্রার আয় ও ব্যয়ে সবচেয়ে বেশি পার্থক্য ছিল বিগত ২০২২-২৩ অর্থবছরেই। এ কারণেই বৈদেশিক মুদ্রার মজুত বা রিজার্ভের পতন ঠেকাতে পারছে না বাংলাদেশ ব্যাংক। আর্থিক হিসাবে সর্বোচ্চ ঘাটতির কারণে সামগ্রিক লেনদেনের ভারসাম্যহীনতাও ছিল রেকর্ড পরিমাণে।
কেবল লেনদেনের ভারসাম্যে নয়, বিগত অর্থবছর ছিল সামগ্রিক অর্থনীতির জন্যই ইতিহাসের অন্যতম খারাপ অর্থবছর। এ সময় গড় মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৯ শতাংশের বেশি, ডলারের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়ন ঘটেছে প্রায় ১৪ শতাংশ, রিজার্ভ কমেছে অর্ধেক, কমেছে বেসরকারি বিনিয়োগ, শিল্পের মধ্যবর্তী পণ্য ও মূলধনি যন্ত্রপাতির আমদানি কমেছে ব্যাপকভাবে, বেড়েছে খেলাপি ঋণ, দুর্বল হয়েছে ব্যাংক খাত।
সংকট মেটাতে সরকার যতগুলো সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তার বেশির ভাগই কাজ করেনি; বরং বেশ কিছু সিদ্ধান্ত উল্টো ফল দিয়েছে। অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনায় এত সব ভুলের কারণেই এখনো অর্থনীতিকে সামাল দিতে পারছে না সরকার।
সাধারণ মানুষের জন্যও গত অর্থবছরটি ছিল সীমাহীন চাপের বছর। বিগত অর্থবছরের বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল মূল্যস্ফীতির হার ৫ দশমিক ৬ শতাংশে রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ওই সময়ের গড় মূল্যস্ফীতি ছিল ৯ দশমিক শূন্য ২ শতাংশ। এই একটি সূচকের কারণেই সাধারণ মানুষ ছিল দ্রব্যমূল্যের চাপে পিষ্ট। সে সময় বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকারের ব্যর্থতাটাই ছিল বেশি। আর ছিল সমন্বয়হীনতা ও জবাবদিহির ঘাটতি। একাধিক জরিপে অংশ নিয়েও মানুষ এ কারণেই বলেছে, দেশের অর্থনীতি ভুল পথে আছে।
রাশিয়া ইউক্রেন আক্রমণ করেছিল ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি। কোভিডের প্রভাব কমে আসার পর অর্থনীতি যখন উত্তরণের পর্যায়ে ছিল, তখনই রাশিয়া ইউক্রেন আক্রমণ করে। এতে বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক সংকট দেখা দিলে বেশির ভাগ দেশ মুদ্রা সরবরাহ কমানোসহ নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করে। কিন্তু বাংলাদেশ নেয় উল্টো পথ। এ সময়ে সংকট মেটাতে সরকার যতগুলো সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তার বেশির ভাগই কাজ করেনি; বরং বেশ কিছু সিদ্ধান্ত উল্টো ফল দিয়েছে।
যেমন সুদহার ৯ শতাংশ করা, ডলারের বিপরীতে টাকার দর কৃত্রিমভাবে বাড়িয়ে রাখা, ডলারের চারটি হার নির্ধারণ, জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য বেশি রাখা, জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধি, খেলাপি ঋণে ছাড়, জ্বালানি খাতকে আমদানিনির্ভর করা ইত্যাদি। এর মধ্যে বিগত ২০২২-২৩ অর্থবছরের সবচেয়ে বড় ভুল ছিল সুদহার না বাড়িয়ে মুদ্রা সরবরাহ বাড়িয়ে রাখার চেষ্টা। অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনায় এত সব ভুলের কারণেই এখনো অর্থনীতিকে সামাল দিতে পারছে না সরকার।
নতুন ২০২৩-২৪ অর্থবছরেরও প্রায় দুই মাস হতে চলল। এ সময়েও পরিস্থিতির তেমন উন্নতি হয়নি। ডলারের সংকট আগের মতোই আছে, বরং দর আরও বাড়ছে। রিজার্ভ ৩০ বিলিয়ন ডলারের নিচেই আছে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাব পদ্ধতি ধরলে এর পরিমাণ ২৩ বিলিয়ন ডলারের মতো। মূল্যস্ফীতি কমছে অতি সামান্য। অর্থবছরের প্রথম মাসে রপ্তানি পরিস্থিতি ভালো থাকলেও কমেছে প্রবাসী আয়।
বিগত অর্থবছরের বাজেটে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪ লাখ ৩৩ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) অংশ ছিল ৩ লাখ ৭০ হাজার কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরের বাজেট দেওয়ার সময় অর্থমন্ত্রী রাজস্ব আয়ে কোনো সংশোধন আনেননি। অথচ এখন দেখা যাচ্ছে কেবল এনবিআরের ঘাটতিই সাড়ে ৩৮ হাজার কোটি টাকা। সামগ্রিক ঘাটতি আরও বেশি। তারপরও মোট দেশজ উৎপাদনের তুলনায় বাজেট লক্ষ্যমাত্রা ৫ দশমিক ৫ শতাংশের নিচেই থাকবে। কারণ, বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বাস্তবায়িত হয়েছে প্রায় ৪৭ হাজার কোটি কম। এ কারণে সরকারকে লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ঋণও নিতে হয়েছে কিছু কম। অর্থাৎ এডিপি বাস্তবায়নের ব্যর্থতার কারণে সরকার বাজেট ঘাটতির বিষয়ে স্বস্তিতে থাকতে পেরেছে। গত অর্থবছরে এই একটি লক্ষ্যমাত্রাই কেবল অর্জিত হয়েছে।
অর্থনীতির তত্ত্ব অনুযায়ী লেনদেনের ভারসাম্য বা ব্যালেন্স অব পেমেন্ট হচ্ছে বিশ্ব এবং একটি দেশের বাসিন্দাদের মধ্যে সমস্ত আর্থিক লেনদেনের হিসাব। মূলত দেশে তহবিলের প্রবাহ এবং সেই তহবিল কতটা ভালোভাবে ব্যবহার করা হয়, তা বুঝতে পারা যায় এর মাধ্যমে। এমনকি একটি দেশের অর্থনীতি বিকাশ করছে কি না, তা জানতেও সাহায্য করে। বিদায়ী অর্থবছরে এই লেনদেনের ভারসাম্যে ঘাটতি ছিল বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ।
মূলত তিন ধরনের হিসাব থেকে সামগ্রিক লেনদেনের ভারসাম্যের হিসাব গণনা করা হয়। যেমন বাণিজ্য ভারসাম্য, চলতি হিসাবের ভারসাম্য এবং আর্থিক হিসাবে ভারসাম্য। বাংলাদেশে বরাবরই রপ্তানি আয়ের তুলনায় আমদানি ব্যয় বেশি। বাণিজ্যের এই ভারসাম্যহীনতা মূলত মেটানো হয় প্রবাসী আয় বা রেমিট্যান্স দিয়ে। একে বলে চলতি হিসাবের ভারসাম্য। ২০২১-২২ অর্থবছরে দেশে আমদানি ব্যয় ছিল অনেক বেশি, প্রবাসী আয়ও ছিল কম। এতে চলতি হিসাবের ভারসাম্যে ঘাটতি হয় ১ হাজার ৮৬৩ কোটি ৯০ লাখ ডলার, যা ছিল দেশের ইতিহাসে চলতি হিসাবের সর্বোচ্চ ঘাটতি। এর আগের সর্বোচ্চ ঘাটতি ছিল ২০১০-১১ অর্থবছরে, ১৬৮ কোটি ৬০ লাখ ডলার।
আমদানি কমায় বিদায়ী অর্থবছরে অবশ্য চলতি হিসাবের ঘাটতি কমানো গেছে। তবে আর্থিক হিসাবের ঘাটতি নতুন রেকর্ড করেছে। এর পরিমাণ ২১৪ কোটি ২০ লাখ ডলার। এর আগে আর্থিক হিসাবের সর্বোচ্চ ঘাটতি ছিল ২০০৮-০৯ অর্থবছরে, সাড়ে ৮২ কোটি ডলার। বৈদেশিক বিনিয়োগ এবং ঋণের প্রবাহ কমে যাওয়া এবং বেসরকারি খাতের ঋণসহ ঋণের দায় পরিশোধ বেড়ে যাওয়ার কারণেই এই ঘাটতি দেখা দিয়েছে।
আর্থিক হিসাবে ঘাটতি সচরাচর দেখা যায় না। বাংলাদেশের ইতিহাসে এখন পর্যন্ত পাঁচবার এই ঘাটতি হয়েছিল। রিজার্ভ নিয়ে যে বাংলাদেশ ব্যাংক হিমশিম খাচ্ছে, এর বড় কারণ এই ঘাটতি। বৈদেশিক মুদ্রায় আয়ের তুলনায় ব্যয় বেশি হওয়াই এর মূল কারণ। এ কারণেই গত অর্থবছরে সামগ্রিক লেনদেনে ঘাটতি হয়েছে ৮২২ কোটি ২০ লাখ ডলার। এটিও বাংলাদেশের জন্য নতুন রেকর্ড।
২০২১-২২ অর্থবছরে দেশে আমদানিতে প্রবৃদ্ধি ছিল প্রায় ৩৬ শতাংশ। এতেই বিপাকে পড়ে যায় বাংলাদেশ ব্যাংক, কমে যায় রিজার্ভ। এরপর বাংলাদেশ ব্যাংক ঘোষণা দিয়ে আমদানি নিয়ন্ত্রণের পদক্ষেপ নেয়। অপ্রয়োজনীয় ও বেশি দামে আমদানি কমানোর কথা বলা হয়। এতে আমদানি কমে যায়। বিগত অর্থবছরে আমদানির প্রবৃদ্ধি ছিল ঋণাত্মক, ১৫ দশমিক ৮১ শতাংশ।
কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রকাশিত উপাত্ত থেকেই দেখা যাচ্ছে, গত অর্থবছরে ভোগ্যপণ্যের আমদানি কমেছে মাত্র ২ দশমিক ২ শতাংশ। ভোগ্যপণ্যের মধ্যে সবচেয়ে বেশি কমেছে চিনি আমদানি, সাড়ে ১৯ শতাংশ। খাদ্যশস্যের আমদানি বেড়েছে প্রায় দেড় শতাংশ। এর মধ্যে চাল আমদানি বেড়েছে প্রায় ৩৪ শতাংশ, গমের কমেছে ৫ শতাংশ। তবে সবচেয়ে বেশি কমেছে শিল্প খাতের মধ্যবর্তী পণ্য ও মূলধনি যন্ত্রপাতির আমদানি।
মধ্যবর্তী পণ্যের মধ্যে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের আমদানি কমেছে প্রায় ৩৩ শতাংশ, কাঁচা তুলার আমদানি কমেছে প্রায় ৪ শতাংশ, পোশাক ও বস্ত্র খাতসংক্রান্ত পণ্যে কমেছে ২০ শতাংশ এবং মূলধনি যন্ত্রপাতির আমদানি কমেছে ২০ শতাংশ। মূলত বেসরকারি বিনিয়োগে মন্দার কারণেই আমদানি এতটা কমেছে। এর প্রমাণ হচ্ছে গত অর্থবছরে জিডিপির অংশ হিসেবে বিনিয়োগের হার ছিল ২৩ দশমিক ৬৪ শতাংশ, যা আগের অর্থবছরে ছিল ২৪ দশমিক ৫২ শতাংশ।
গত অর্থবছরের বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘চাহিদা ও সরবরাহের মধ্যে অসংগতি রোধের মাধ্যমে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সরকার বদ্ধপরিকর’। তিনি আরও বলেছিলেন, ‘মূল্যস্ফীতি যাতে নিয়ন্ত্রণে রাখা যায় এবং বেসরকারি খাতে প্রয়োজনীয় ঋণপ্রবাহ অব্যাহত থাকে, সেগুলো বিবেচনায় নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক মুদ্রা সরবরাহ বজায় রাখছে।’ তিনি আশা করেছিলেন, এর ফলে মূল্যস্ফীতি থাকবে ৬ শতাংশের কম।
অর্থমন্ত্রীর এই বক্তব্য অনুযায়ী বাংলাদেশ ব্যাংক পুরো অর্থবছর ধরেই অর্থ সরবরাহ কমাতে মুদ্রানীতিকে ব্যবহার করেনি; বরং ঋণের সুদহার ৯ শতাংশ রাখার সরকারের রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের পক্ষেই বলে এসেছে। অথচ সারা বিশ্বই তখন মূল্যস্ফীতি থেকে বাঁচার জন্য আগ্রাসীভাবে সুদহার অব্যাহতভাবে বাড়িয়েছে। তার ফলও পাচ্ছে বেশির ভাগ দেশ। তাদের মূল্যস্ফীতি কমেছে। অথচ বাংলাদেশের বসবাস এখনো উচ্চ মূল্যস্ফীতির মধ্যেই।
শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ ব্যাংক মুদ্রানীতিতে পরিবর্তন আনতে বাধ্য হয়েছে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) শর্তই এর প্রধান কারণ। সুদের হার বাড়িয়ে মুদ্রা সরবরাহ কমানোর ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক, যা কার্যকর হয়েছে চলতি অর্থবছর থেকে। তবে এরই মধ্যে অনেক দেরি হয়ে গেছে। ফলে অর্থনীতিতে এর প্রভাব পেতেও দেরি হবে।
৪৭০ কোটি ডলার ঋণের দ্বিতীয় কিস্তির জন্য আলোচনা হবে সেপ্টেম্বর মাসেই। তবে এই দ্বিতীয় কিস্তি পেতে প্রয়োজনীয় শর্ত পূরণ করতে পারছে না বাংলাদেশ। এর মধ্যে রয়েছে নিট রিজার্ভ বাড়িয়ে ২৪ দশমিক ৪৬ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করা এবং রাজস্ব আয় নির্দিষ্ট পরিমাণে বাড়ানো।
দেশের অর্থনীতি নিয়ে দেশের নীতিনির্ধারকেরা কোথাও এখন আর আলোচনা করেন না। গত জুনে মুদ্রানীতি ঘোষণার সময় বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন, আর গত সপ্তাহে ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের সঙ্গে একটি সভা করেছেন। সেই সভায় নানা ধরনের সংকটের কথা আলোচনা হয়েছে বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে। যেমন বলা হয়েছে, গত অর্থবছরে মানুষের হাতে নগদ অর্থ বেড়ে গেছে প্রায় ১৪ শতাংশ। ব্যাংকব্যবস্থার বাইরে মানুষের হাতে নগদ অর্থ বৃদ্ধিকে ইতিবাচক প্রবণতা ধরা হয় না। ব্যাংকের প্রতি আস্থার অভাব থাকলেই এমনটা ঘটে। আবার উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে আমানতের সুদহার ঋণাত্মক হয়ে পড়ার প্রভাবও এটি। পাশাপাশি মানুষ যে গত অর্থবছর সঞ্চয় ভেঙে জীবন নির্বাহ করেছে, তারও প্রমাণ এই পরিসংখ্যান।
ওই সভায় হুন্ডি নিয়েও আলোচনা হয়। বলা হয়েছে, ১ ডলারের পণ্য আমদানিতে ৩০ সেন্ট পাঠানো হচ্ছে, বাকি অর্থ পাঠানো হয় হুন্ডিতে। অর্থাৎ ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ একদিকে বাড়ছে, অন্যদিকে অর্থ পাচারও বেড়ে যাচ্ছে। গত অর্থবছরে ইসলামি শরিয়াহ ব্যাংকগুলোর ছিল চরম তারল্যসংকট। বেনামে ঋণ নেওয়া এর বড় কারণ। এ ছাড়া গত অর্থবছরে বাংলাদেশ ব্যাংক রিজার্ভ থেকে ১ হাজার ৩৫৮ কোটি ডলার বিক্রি করে। এতে ব্যাংকগুলো থেকে ১ লাখ ২৯ হাজার কোটি টাকা চলে যায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকে। এর ফলেও অনেক ব্যাংকের তারল্য ব্যবস্থাপনা করা কঠিন হয়ে পড়েছিল।
গত অর্থবছরেই আইএমএফ ঋণের প্রথম কিস্তির ৪৭ কোটি ৬২ লাখ ৭০ হাজার ডলার পেয়েছে বাংলাদেশ। ৪৭০ কোটি ডলার ঋণের দ্বিতীয় কিস্তির জন্য আলোচনা হবে সেপ্টেম্বর মাসেই। তবে এই দ্বিতীয় কিস্তি পেতে প্রয়োজনীয় শর্ত পূরণ করতে পারছে না বাংলাদেশ। এর মধ্যে রয়েছে নিট রিজার্ভ বাড়িয়ে ২৪ দশমিক ৪৬ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করা এবং রাজস্ব আয় নির্দিষ্ট পরিমাণে বাড়ানো। সরকার এখন এ নিয়ে আইএমএফের সঙ্গে দেনদরবার করছে। সুতরাং সংকট এখানেও আছে।