একেক কাস্টম হাউস ও শুল্ক স্টেশন দিয়ে একেক হারে মূল্য ঘোষণা করে শুল্কায়ন করা যাবে না। চালানের পরিমাণও নিশ্চিত করতে হবে।
দেশের সব কাস্টম হাউস ও শুল্ক স্টেশনে অভিন্ন মূল্যে পণ্যের শুল্কায়ন করার নির্দেশ দিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। ফলে এখন থেকে পণ্য আমদানি ও রপ্তানিকালে একই মূল্য ধরে শুল্কায়ন করতে হবে। একেক কাস্টম হাউস ও শুল্ক স্টেশন দিয়ে একেক হারে মূল্য ঘোষণা করে শুল্কায়ন করা যাবে না। এর পাশাপাশি পণ্যের চালানের পরিমাণও যথাযথভাবে নিশ্চিত করতে হবে।
এনবিআর থেকে গত সোমবার রাতে দেশের সব কাস্টমস কমিশনারেটের কমিশনারদের জরুরি এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার থেকেই তা কার্যকর করা হয়েছে। তবে এই পদক্ষেপ নিয়ে ইতিমধ্যে সমালোচনা শুরু হয়েছে। কারণ, ব্যবসায়ীরা একই পণ্য বিভিন্ন মূল্যে বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করেন। তাহলে কোন মূল্য ধরে শুল্কায়ন করা হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তাঁরা।
এনবিআরে নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ২০০০ সালের শুল্ক মূল্যায়ন বিধিমালা অনুযায়ী রাজস্ব আহরণে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করার স্বার্থে এক ও অভিন্ন মূল্যে কোনো পণ্যের শুল্কায়ন এবং শুল্কায়নযোগ্য পণ্যের সঠিক মূল্যায়ন নির্ধারণ করা অত্যন্ত জরুরি।
বর্তমানে প্রতিটি কাস্টম হাউস পৃথকভাবে পণ্যমূল্যের ভিত্তিতে শুল্কায়ন করে থাকে। নতুন নিয়ম অনুযায়ী চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসে আমদানি করা কোনো পণ্যের চালান যে মূল্যে শুল্কায়ন করা হবে, ঠিক একই মূল্যে দেশের অন্যসব কাস্টমস হাউস এবং শুল্ক স্টেশনেও তা করতে হবে।
তবে এনবিআরের নতুন নির্দেশনায় সমস্যাও আছে। যেমন চীন ও ভারত থেকে আমদানি করা পণ্যের দামের ও গুণগত মানের পার্থক্য থাকত পারে। আবার জাপান থেকে যে পণ্য ২০০ ডলারে আমদানি করা হয়, সেটি ভারত থেকে আনলে ১০০ ডলার লাগতে পারে। তাহলে শুল্কায়নযোগ্য মূল্য কোনটি ধরা হবে, এ রকম প্রশ্নই উঠেছে ব্যবসায়ী মহল থেকে।
এনবিআরের শুল্ক বিভাগের এক কর্মকর্তা প্রথম আলোকে জানান, অনেক আমদানিকারক কম মূল্য দেখিয়ে শুল্ক-কর ফাঁকি দেন। এই প্রবণতা রোধ করতে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
বর্তমানে দেশে ১২টি পূর্ণাঙ্গ কাস্টম হাউস এবং ৩৬টি সক্রিয় শুল্ক স্টেশন আছে। দেশের মোট শুল্ক-কর আদায়ের প্রায় ৩০ শতাংশের মতো আসে আমদানি পর্যায় থেকে, যা কাস্টম হাউস ও শুল্ক স্টেশনগুলো আদায় করে।