সালেহউদ্দিন আহমেদ
সালেহউদ্দিন আহমেদ

সবকিছু চালু করাই এখন প্রধান কাজ: সালেহউদ্দিন আহমেদ

দেশ কঠিন পরিস্থিতির মুখে পড়েছে বলে মন্তব্য করেছেন অর্থ ও পরিকল্পনা উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, এ মুহূর্তের মূল কাজ হলো আইনশৃঙ্খলা পুনরুদ্ধার করা। আইনশৃঙ্খলা মানে শুধু রাস্তাঘাটের আইনশৃঙ্খলা নয়, বরং ব্যাংক পুরোপুরি চালু করা, বন্দরগুলো অনেকাংশে অচল – সেগুলো চালু করা।

সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, এ ছাড়া সামষ্টিক অর্থনীতিতে যেসব চ্যালেঞ্জ আছে, যেমন মূল্যস্ফীতি, সেগুলো তাৎক্ষণিকভাবে মোকাবিলার চেষ্টা করা হবে। অর্থনীতি মন্থর হতে পারে, কিন্তু থমকে গেলে পুনরায় চালু করতে অনেক সময় লেগে যায়। সুবিধা হলো বাংলাদেশের মানুষের অফুরন্ত কর্মস্পৃহা আছে। গুটিকয়েক মানুষ ছাড়া বেশির ভাগ মানুষই কাজে যোগ দেবেন।

অর্থ ও পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্ঠা হিসেবে আজ সচিবালয়ে প্রথম অফিস করেন সালেহউদ্দিন আহমেদ। নিজ দপ্তরে ঢোকার সময় সাংবাদিকদের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেন তিনি।

এই সরকারের খুব বেশি দিন ক্ষমতায় থাকার ইচ্ছা নেই জানিয়ে সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘ভবিষ্যৎ সরকারের জন্য আমরা মসৃণ পথ তৈরি করে যেতে চাই। সে জন্য সাংবাদিকদের সহযোগিতা দরকার। আমাদের কর্মোদ্যোগী মানুষ দরকার। কেবল নির্দেশনা পেলে কাজ হয়ে যাবে, এমন হলে চলবে না।’ সাংবাদিকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ভুলত্রুটি হলে সমালোচনা করবেন, কিন্তু অপ্রয়োজনীয় সমালোচনা না করার আহ্বান জানান তিনি।

ব্যাংকিং কমিশন হবে কি না, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের কার্যক্রম পুরোপুরি চালু হোক, এরপর সংস্কারের প্রসঙ্গ আসবে। এখনই সংস্কার শুরু হলে মূল কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যাবে।

লাইনচ্যুত অর্থনীতিকে লাইনে আনতে কত সময় লাগবে, এমন প্রশ্নের জবাবে সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আমার মনে হয় না মৌলিক কাজগুলো করতে বেশি সময় লাগবে। অর্থনৈতিক কার্যক্রম ছিল, একেবারে লাইনচ্যুত হয়ে যায়নি। বরং গতি হারিয়ে ফেলেছিল। আমরা গতি বৃদ্ধি করব।’

মূল্যস্ফীতি সম্পর্কে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, সামষ্টিক অর্থনীতি ছাড়াও উন্নয়ন কৌশলে ভুল ছিল। মানুষ সামগ্রিকভাবে উন্নয়নের সুফল পায়নি। প্রবৃদ্ধি হয়েছে, কিন্তু তার ফল কে পেয়েছে, কাদের কাছে টাকা গেছে, সেটাই মূল বিষয়। সরকার চায়, সমতাভিত্তিক ও ন্যায্য প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করা। সব মানুষের জীবন–জীবিকার বিষয়ে যথাসাধ্য চেষ্টা করা হবে।

সদ্য পদত্যাগী গভর্নরের আমলে দেশের অনেক ব্যাংকে কেলেঙ্কারি হয়েছে। কিন্তু তাঁর পদত্যাগপত্র গ্রহণ করা হলে কি তিনি জবাবদিহির আওতা থেকে বেরিয়ে যাবেন –সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, গভর্নরের পদ সংবেদনশীল। তিনি পদত্যাগপত্র দিয়েছেন, এ বিষয়ে আগামীকালের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হবে। সালেহউদ্দিন আহমেদ আরও বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের আইন বা দেশের যেকোনো আইন যথেষ্ট আন্তর্জাতিক মানের। কিন্তু তা মানা হয় না। যাদের মানানোর কথা তাঁরা সেটা করেননি। যাঁদের মানার কথা, তাঁরাও মানেননি।

অর্থ পাচার প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন, ‘এ বিষয়ে আমরা সবাই জানি, এ বিষয়ে তথ্য লাগবে। এর প্রক্রিয়া আছে, তা মেনেই এসব করতে হবে।’