বারভিডা বলছে, আগামী বাজেটে গাড়ি আমদানি–সহায়ক নীতিমালা গ্রহণ করা না হলে এ খাত স্থবির হয়ে পড়বে।
পরিবেশ ও জ্বালানি–সহায়ক রিকন্ডিশন্ড হাইব্রিড গাড়ির আমদানি সহজলভ্য করতে সিসি (ইঞ্জিনক্ষমতা) স্ল্যাব ও সম্পূরক শুল্কহার পুনর্বিন্যাসের দাবি জানিয়েছেন গাড়ি আমদানিকারকেরা। তাঁরা বলেন, আগামী ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। এতে ভোক্তারা উপকৃত হবেন, পাশাপাশি সরকারের রাজস্ব আহরণও বাড়বে।
আগামী অর্থবছরের বাজেট উপলক্ষে সম্প্রতি জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে (এনবিআর) বেশ কিছু প্রস্তাব দিয়েছে গাড়ি ব্যবসায়ীদের সংগঠন বাংলাদেশ রিকন্ডিশন্ড ভেহিক্যালস ইমপোর্টার্স অ্যান্ড ডিলারস অ্যাসোসিয়েশন (বারভিডা)। সংগঠনটি বলেছে, ডলার–সংকটের কারণে গাড়ি আমদানির পরিমাণ অনেক কমে গেছে। এ অবস্থায় আগামী বাজেটে গাড়ি আমদানি–সহায়ক নীতিমালা গ্রহণ করা না হলে এ খাত স্থবির হয়ে পড়বে।
বাজেট প্রস্তাবে বারভিডা বলেছে, বর্তমানে হাইব্রিড গাড়ি শুল্কায়নের ক্ষেত্রে কয়েক ধরনের সিসি স্ল্যাব রয়েছে, যা পুনর্বিন্যাস করা প্রয়োজন। যেমন ১ হাজার ৮০০ সিসি পর্যন্ত প্রাইভেট হাইব্রিড গাড়িতে মোট ৮৯ দশমিক ৩২ শতাংশ করভার রয়েছে। বারভিডার দাবি, একই করভারে ২০০০ সিসি পর্যন্ত গাড়ি আমদানির সুযোগ দেওয়ার।
এ ছাড়া ১ হাজার ৮০১ থেকে ২০০০ সিসি পর্যন্ত হাইব্রিড গাড়ি আমদানিতে করভার রয়েছে ১২৭ দশমিক ৭২ শতাংশ। বারভিডার দাবি, আগামী অর্থবছরে একই করভারে ২০০১ থেকে ৩০০০ সিসির হাইব্রিড গাড়ি আমদানির সুযোগ দেওয়া। এভাবে হাইব্রিড গাড়ির অন্যান্য সিসি স্ল্যাবেও পুনর্বিন্যাস করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
বারভিডা সভাপতি মো. হাবিব উল্লাহ বলেন, হাইব্রিড গাড়ির সিসি স্ল্যাব পুনর্বিন্যাস করা হলে রাজস্ব আয়ে নেতিবাচক প্রভাব পড়ার কোনো আশঙ্কা নেই। বরং এতে হাইব্রিড গাড়ি আমদানি বাড়বে, যার ফলে রাজস্বও বাড়াবে। এ ছাড়া জ্বালানি তেলের খরচও কমবে। তাতে পরোক্ষভাবে বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় হবে।
হাইব্রিড গাড়ির পাশাপাশি জীবাশ্ম জ্বালানিচালিত রিকন্ডিশন্ড এসইউভি বা জিপ ধরনের গাড়িতেও সিসি স্ল্যাব ও সম্পূরক শুল্ক পুনর্বিন্যাসের প্রস্তাব করেছে বারভিডা। সংগঠনটি বলছে, দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে শিল্পকারখানায় যাতায়াতের জন্য বিনিয়োগকারী ব্যক্তিরা এসইউভি বা জিপ গাড়ি ব্যবহার করেন। ফলে এখানে সম্পূরক শুল্ক কমানো হলে গাড়ি আমদানি ও রাজস্ব বাড়বে।
বৈদ্যুতিক গাড়িতে শুল্ক রেয়াত দাবি
বারভিডা বলেছে, জ্বালানিসাশ্রয়ী ও পরিবেশবান্ধব হওয়ায় বিশ্বের দেশে দেশে বৈদ্যুতিক গাড়ির চাহিদা বাড়ছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বৈদ্যুতিক গাড়িতে শুল্ক রেয়াত, ভর্তুকিসহ বিভিন্ন সুবিধাও দেওয়া হচ্ছে। এ অবস্থায় দূষণমুক্ত মোটরযান ব্যবহারকে উৎসাহিত করতে বাংলাদেশে বৈদ্যুতিক গাড়ি আমদানিতে সম্পূরক শুল্ক সম্পূর্ণ প্রত্যাহারের প্রস্তাব দিয়েছেন গাড়ি আমদানিকারকেরা।
এ ছাড়া বর্তমানে ১০ থেকে ১৫ আসনবিশিষ্ট মাইক্রোবাসের ক্ষেত্রে ২০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক রয়েছে। গণপরিবহন হিসেবে ব্যবহৃত এসব গাড়িতে সম্পূরক শুল্ক সম্পূর্ণ প্রত্যাহার চায় বারভিডা।
বাজেট প্রস্তাবে বলা হয়, বাংলাদেশে একমাত্র জাপান থেকেই রিকন্ডিশন্ড গাড়ি আমদানি হয়। আমদানির ক্ষেত্রে রিকন্ডিশন্ড গাড়ি হিসেবে বিবেচিত হওয়ার শর্ত হচ্ছে, সংশ্লিষ্ট গাড়ির প্রথম নিবন্ধনের তারিখ ও নিবন্ধন বাতিলের তারিখের মধ্যে পার্থক্য ন্যূনতম ৩৬৫ দিন হতে হবে এবং গাড়িটি কমপক্ষে ১ হাজার কিলোমিটার চলতে হবে। তবে উৎপাদনকারী দেশ জাপানে এ ধরনের নিয়ম বিবেচনায় নেওয়া হয় না। ফলে নিবন্ধন বাতিলের ক্ষেত্রে জালজালিয়াতির সুযোগ থাকে।