জাতীয়ভাবে কর কার্ড পেল ১৪১ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান

গতকাল জাতীয় পর্যায়ে ১৪১ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে কর কার্ড দেওয়া হয়। এ ছাড়া জেলা পর্যায়ে ৫২৫ ব্যক্তিকে সম্মাননা দেওয়া হয়।

সম্মাননা নেওয়ার পর হাকিমপুরী জর্দার স্বত্বাধিকারী কাউছ মিয়া। গতকাল ঢাকার অফিসার্স ক্লাব মিলনায়তনে

অন্যবারের মতো এবারও জাতীয় পর্যায়ে সেরা করদাতা হিসেবে ১৪১ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে কর কার্ড দিল জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এর মধ্যে ব্যক্তি রয়েছেন ৭৬ জন, বাকি ৬৫টি প্রতিষ্ঠান।

গতকাল বুধবার রাজধানীর বেইলি রোডের অফিসার্স ক্লাব মিলনায়তনে সেরা করদাতা ব্যক্তি ও তাঁদের প্রতিনিধি এবং প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ কর্মকর্তাদের হাতে কর কার্ড ও সম্মাননা ক্রেস্ট তুলে দেওয়া হয়।

একই অনুষ্ঠানে ঢাকা বিভাগের সিটি করপোরেশন ও জেলা পর্যায়ে তিনজন সর্বোচ্চ করদাতা, দুজন দীর্ঘ সময় ধরে কর প্রদানকারী এবং একজন করে নারী ও তরুণ করদাতাকে সম্মাননা হিসেবে সনদ ও ক্রেস্ট তুলে দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। আর সভাপতিত্ব করেন এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম।

সম্মাননা নিচ্ছেন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়া শ্রেণিতে সেরা করদাতা টাইমস মিডিয়ার কর্ণধার এ কে আজাদ

এ বছর জেলা পর্যায়ে সব মিলিয়ে ৫২৫ করদাতাকে সম্মাননা দেওয়া হয়। দেশের বিভিন্ন কর অঞ্চল থেকে তাঁদের এই সম্মাননা দেওয়া হয়। করদাতা সম্মাননা অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, আপনাদের করের টাকা দিয়ে মেট্রোরেলের মতো অর্জন সম্ভব হয়েছে। আপনারা শুধু নিজেরা কর প্রদান করছেন না, অন্যকে উৎসাহও দিচ্ছেন।

এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম বলেন, ‘কর দেওয়াকে আর্থিকভাবে যতটা ঝামেলা মনে করা হয়, তার চেয়ে বেশি ঝামেলাপূর্ণ মনে করা হয় কর দেওয়ার পদ্ধতিকে। এই পদ্ধতি সহজ করার জন্য আমরা নানা কাজ করছি।’

অনুষ্ঠানে অর্থ বিভাগের সচিব ফাতিমা ইয়াসমিন বলেন, ‘উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় আমাদের কর–জিডিপি অনুপাত এখনো কম। এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে তা সর্বনিম্ন।’

সম্মাননা নেওয়ার পর অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন

অনুষ্ঠানে সেরা করদাতা হিসেবে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন সংসদ সদস্য ও চিকিৎসক প্রাণ গোপাল দত্ত, চ্যানেল আইয়ের পরিচালক ও বার্তাপ্রধান শাইখ সিরাজ এবং ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান।

যাঁরা কর কার্ড পেলেন

জ্যেষ্ঠ নাগরিক: হাকিমপুরী জর্দার মালিক মো. কাউছ মিয়া, ড্রাগ ইন্টারন্যাশনালের পরিচালক খাজা তাজমহল, সিটি গ্রুপের চেয়ারম্যান ফজলুর রহমান, এমএসএ স্পিনিংয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এম সাহাবুদ্দিন আহমেদ এবং ব্যবসায়ী খন্দকার বদরুল হাসান।

গেজেটভুক্ত যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা: এ মতিন চৌধুরী, নাসির উদ্দিন মৃধা, আমজাদ হোসেন, জয়নাল আবেদীন ও আবু সালেহ মো. নাসিম।

প্রতিবন্ধী: ঢাকার আকরাম মাহমুদ, সিলেটের মামুনুর রশিদ ও ঢাকার লুবনা নিগার।
মহিলা: আনোয়ারা হোসেন, আমিনা আহমেদ, ট্রান্সকম গ্রুপের চেয়ারম্যান শাহনাজ রহমান, তাসমীন মাহমুদ ও পারভীন হাসান।

তরুণ: বসুন্ধরা গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান সাফওয়ান সোবহান, আসিফ ইকবাল মাহমুদ, নাসিরুদ্দিন আকতার রশীদ, ওয়ালটনের পরিচালক রাইসা সিগমা ও রবিন রাজন সাখাওয়াত।

সম্মাননা নিচ্ছেন স্থপতি মোহাম্মদ ফয়েজ উল্লাহ

ব্যবসায়ী: বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী; ওয়ালটনের পরিচালক এস এম আশরাফুল আলম ও ভাইস চেয়ারম্যান এস এম শামসুল আলম; ব্যবসায়ী মাহবুবুর রহমান ও গাজী গ্রুপের এমডি গাজী গোলাম মুর্তজা।

বেতনভোগী: এ শ্রেণির পাঁচজনই একই পরিবারের। তাঁরা হলেন ড্রাগ ইন্টারন্যাশনাল পরিবারের মোহাম্মদ ইউসুফ, রুবাইয়াৎ ফারজানা হোসেন, হোসনে আরা হোসেন, লায়লা হোসেন ও এম এ হায়দার হোসেন।

চিকিৎসক: জাহাঙ্গীর কবির, এ কে এম ফজলুল হক, প্রাণ গোপাল দত্ত, নার্গিস ফাতেমা ও এন এ এম মোমেনুজ্জামান।

সাংবাদিক: চ্যানেল আইয়ের এমডি ফরিদুর রেজা, দ্য ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহ্ফুজ আনাম, প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান, চ্যানেল আইয়ের পরিচালক ও বার্তাপ্রধান শাইখ সিরাজ এবং বাংলাদেশ প্রতিদিন-এর সম্পাদক নঈম নিজাম।

আইনজীবী: ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস, আহসানুল করিম, তৌফিকা আফতাব, মেট্রোপলিটন চেম্বারের সাবেক সভাপতি নিহাদ কবির ও অ্যাটর্নি জেনারেল আবু মোহাম্মদ আমিন উদ্দিন।

সিটি গ্রুপের চেয়ারম্যান ফজলুর রহমানের পক্ষে সম্মাননা নিচ্ছেন প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক শম্পা রহমান

প্রকৌশলী: রাজশাহীর জহুরুল ইসলাম, ঢাকার মোখলেছুর রহমান ও মোহাম্মদ আবদুল্লাহ।

স্থপতি: মোহাম্মদ ফয়েজ উল্লাহ, এনামুল করিম নির্ঝর এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান।

হিসাবরক্ষক (অ্যাকাউনট্যান্ট) : মাশুক আহমেদ, মোক্তার হোসেন ও রাকেশ সাহা।

নতুন করদাতা: এরিক এম ওয়াকার, ওবায়দুল ইসলাম, নাজমা আক্তার, লুইস এনরিক মায়র্গা মনকাডা, জুমারা বেগম, সাকেব মোহাম্মদ আলী এবং সাদরুদ্দিন আহসান আলী।

খেলোয়াড়: ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান, তামিম ইকবাল খান ও কাজী নুরুল হাসান।

অভিনেতা-অভিনেত্রী: মাহফুজ আহমেদ, মেহজাবীন চৌধুরী ও পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায়।

শিল্পী (গায়ক-গায়িকা) : তাহসান রহমান খান, এস ডি রুবেল ও কুমার বিশ্বজিৎ।

অন্যান্য: নাসা গ্রুপের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদার, মনির হোসেন ও নাফিস সিকদার।

সেরা করদাতার সম্মাননা নিচ্ছেন ওয়ালটনের পরিচালক রাইসা সিগমা হিমা

প্রতিষ্ঠান

ব্যাংক: স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক, বাংলাদেশ ইসলামী ব্যাংক, এইচএসবিসি ও ডাচ্-বাংলা ব্যাংক।

অ-ব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠান: ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি, আইডিএলসি ফাইন্যান্স, ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ (আইসিবি) ও বাংলাদেশ ইনফ্রাস্ট্রাকচার ফাইন্যান্স ফান্ড।

টেলিকমিউনিকেশন: গ্রামীণফোন।

প্রকৌশল: বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যাক্টরি, বাংলাদেশ স্টিল রি-রোলিং মিলস (বিএসআরএম) এবং ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট ইঞ্জিনিয়ার্স।

আইডিএলসির এমডি এম জামাল উদ্দিন সম্মাননা নিচ্ছেন

খাদ্য ও আনুষঙ্গিক: অলিম্পিক ইন্ডাষ্ট্রিজ, প্রাণ ডেইরি ও স্কয়ার ফুড অ্যান্ড বেভারেজ।
জ্বালানি: তিতাস গ্যাস, যমুনা অয়েল ও পেট্রোম্যাক্স রিফাইনারি।

পাটশিল্প: আকিজ জুট মিলস, আইয়ান জুট মিলস ও রোমান জুট মিলস।
স্পিনিং ও টেক্সটাইল: কোটস বাংলাদেশ, প্যারামাউন্ট টেক্সটাইল, নাহিদ কটন মিলস, এসিএস টেক্সটাইল, বাদশা টেক্সটাইলস, অ্যাপেক্স টেক্সটাইল প্রিন্টিং মিলস ও এনজেড টেক্সটাইল।

ওষুধ ও রসায়ন: স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস, ইনসেপ্টা ফার্মাসিউটিক্যালস, রেনাটা ও বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস।

প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়া: মিডিয়াস্টার লিমিটেড, ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপ লিমিটেড, সময় মিডিয়া ও টাইমস মিডিয়া লিমিটেড।

আবাসন: বে ডেভেলপমেন্টস, কনকর্ড ও বিটিআই।

তৈরি পোশাক: স্কয়ার ফ্যাশনস, ইউনির্ভাসেল জিনস, জাবের অ্যান্ড জোবায়ের ফেব্রিকস, রিফাত গার্মেন্টস, ইয়াংওয়ান হাইটেক স্পোর্টওয়্যার, প্যাসিফিক জিনস ও স্নোটেক্স আউটারওয়্যার।

চামড়াশিল্প: বাটা শু, অ্যালায়েন্স লেদার গুডস অ্যান্ড ফুটওয়্যার ও লালমাই ফুটওয়্যার।
অন্যান্য: ব্রিটিশ-আমেরিকান টোব্যাকো বাংলাদেশ কোম্পানি, সেখ আকিজ উদ্দিন লিমিটেড, আমেরিকান লাইফ ইনস্যুরেন্স ও মেঘনাঘাট পাওয়ার।

অন্যান্য: মেসার্স এস এন করপোরেশন, মেসার্স ফখর উদ্দিন আলী আহমদ, মেসার্স জামিল ইকবাল, মেসার্স ছালেহ আহাম্মদ, সেতু কর্তৃপক্ষ, পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (আরইবি), সেনাকল্যাণ সংস্থার প্রধান কার্যালয়, বাংলাদেশ পুলিশ কল্যাণ ট্রাস্ট, আশা, ব্যুরো বাংলাদেশ, ইউনাইটেড ডেভেলপমেন্টস ও রিসোর্স ইন্টিগ্রেশন সেন্টার।