উচ্চমাধ্যমিক স্তরের প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের মাসিক উপবৃত্তি ১০০ টাকা করে বাড়ছে। অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী আজ বৃহস্পতিবার বাজেট বক্তব্যে জানান, এ প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীরা বর্তমানে ৯৫০ টাকা করে উপবৃত্তি পান। আগামী অর্থবছর থেকে তা ১ হাজার ৫০ টাকা করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
বর্তমানে ২৯ লাখ প্রতিবন্ধীকে ভাতা দেওয়া হয়। আগামী অর্থবছরে এই সংখ্যা ৩ লাখ ৩৪ হাজার বাড়িয়ে ৩২ লাখ ৩৪ হাজারে উন্নীত করার ঘোষণা দেন অর্থমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘প্রতিবন্ধীদের স্বার্থ ও অধিকার সুরক্ষায় আমাদের সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।’
এ ছাড়া প্রস্তাবিত বাজেটে মাতৃত্বকালীন ভাতাভোগীর সংখ্যা ১৫ লাখ ৪ হাজার ৮০০ থেকে ১ লাখ ৫০ হাজার ৪৮০ জন বাড়িয়ে ১৬ লাখ ৫৫ হাজার ২৮০ জন, বয়স্ক ভাতাভোগী ৫৮ লাখ ১ হাজার থেকে ২ লাখ বাড়িয়ে ৬০ লাখ ১ হাজার জন, বিধবা ও স্বামী নিগৃহীত ২৫ লাখ ৭৫ হাজার থেকে ২ লাখ বাড়িয়ে ২৭ লাখ ৭৫ হাজার জন এবং বেদে, হিজড়া ও অনগ্রসর জনগোষ্ঠী হিসেবে ভাতাভোগীর সংখ্যা ৬ হাজার ৮৮০ থেকে ৫ হাজার ৭৪৯ জন বাড়িয়ে ১২ হাজার ৬২৯ জনে উন্নীত করার ঘোষণা দেন অর্থমন্ত্রী। আগামী অর্থবছরে আরও ৯০ হাজার ৮৩২ জন অনগ্রসর জনগোষ্ঠীকে ভাতার আওতায় আনার কথা জানান তিনি।
চলতি ২০২৩–২৪ অর্থবছরে সামাজিক নিরাপত্তা খাতে বরাদ্দ ছিল ১ লাখ ২৬ হাজার ২২৭ কোটি টাকা। তা ৯ হাজার ৭৫৪ কোটি টাকা বাড়িয়ে ১ লাখ ৩৬ হাজার ২৬ কোটি টাকায় উন্নীত করার প্রস্তাব দেন অর্থমন্ত্রী।
অর্থমন্ত্রী বলেন, গ্রামীণ এলাকায় মাতৃত্বকালীন ভাতা ও শহর এলাকার ‘কর্মজীবী ল্যাকটেটিং মাদার সহায়তা তহবিল’ কর্মসূচিকে ঢেলে সাজিয়ে জাতীয় সামাজিক নিরাপত্তা কৌশল কর্মসূচির আওতায় এমআইএসভিত্তিক মা ও শিশু সহায়তা কর্মসূচি চালু করা হয়েছে। এ কর্মসূচির অধীন মায়েদের ৩৬ মাস পর্যন্ত মাসিক ৮০০ টাকা করে দেওয়া হয়। সারা দেশে মা ও শিশুদের সহায়তাপ্রাপ্তি সহজ এবং নিশ্চিত করতে অনলাইন আবেদন প্রক্রিয়া চালু করা হয়েছে।
দেশের মানুষের গড় আয়ু বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে সরকার প্রবীণ জনগোষ্ঠীর সুরক্ষায় বিশেষভাবে নজর দেওয়ার কথাও জানান অর্থমন্ত্রী। তাঁদের মাসিক ৬০০ টাকা হারে ভাতা দেওয়া হয়। এ জন্য মোট বরাদ্দ ৪ হাজার ২০৬ কোটি টাকা থেকে বেড়ে হবে ৪ হাজার ৩৫১ কোটি টাকা।
সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় বীর মুক্তিযোদ্ধাদের কল্যাণে ও তাঁদের আর্থসামাজিক অবস্থা বিবেচনায় মাসিক সম্মানী ভাতা দেওয়া হচ্ছে ২০ হাজার টাকা করে। অর্থমন্ত্রী জানান, ২০২১-২২ অর্থবছর থেকে তাঁদের এ হারে সম্মানী দেওয়া হচ্ছে।
বীর মুক্তিযোদ্ধাদের আবাসন নিশ্চিতে বিনা মূল্যে ৩০ হাজার বীর নিবাস নির্মাণ করা হচ্ছে বলেও জানান অর্থমন্ত্রী। অর্থমন্ত্রী বলেন, ইতিমধ্যে ১১ হাজার ৫৭টি বীর নিবাস নির্মাণ করা হয়েছে।