অভিমত

ডিজিটাল পেমেন্টের অগ্রগতিতে মূল অনুঘটক এমএফএস

বিশ্বব্যাংকের ডিজিটাল প্রগ্রেস অ্যান্ড ট্রেন্ডস রিপোর্ট ২০২৩ অনুসারে, বাংলাদেশের ১৫ বছরের বেশি বয়সী ৪৫ শতাংশ জনগোষ্ঠী কোনো না কোনোভাবে ডিজিটাল পেমেন্ট করেন বা গ্রহণ করেন। এই অগ্রগতিতে এমএফএসের ভূমিকার কথা লিখেছেন বিকাশের চিফ এক্সটার্নাল অ্যান্ড করপোরেট অ্যাফেয়ার্স অফিসার মেজর জেনারেল (অব.) শেখ মো. মনিরুল ইসলাম।

গত ১০ বছরে ডিজিটাল পেমেন্টে বাংলাদেশের অগ্রগতিতে মূল অনুঘটক ছিল মোবাইল ফোনে আর্থিক সেবা (এমএফএস)। এর মাধ্যমে ব্যাংকিং–ব্যবস্থার বাইরে থাকা বা সীমিত ব্যাংকিং সুবিধা পাওয়া বৃহৎ জনগোষ্ঠীকে আর্থিক অন্তর্ভুক্তির আওতায় নিয়ে আসা সম্ভব হয়েছে। বিকাশের মতো প্রতিষ্ঠানের উদ্ভাবনী প্রযুক্তি; দেশজুড়ে বিস্তৃত এজেন্ট ও মার্চেন্ট নেটওয়ার্ক; সাধারণ মোবাইল ফোনের মাধ্যমেই সেন্ড মানি; ক্যাশ আউট; ক্যাশ ইন; মুঠোফোন রিচার্জ এবং মার্চেন্ট পেমেন্টের মতো মৌলিক সেবাগুলো গ্রাহককে ডিজিটাল পেমেন্টের সঙ্গে পরিচিত ও অভ্যস্ত করেছে। এর মাধ্যমে ডিজিটাল পেমেন্টের ওপর মানুষের নির্ভরতাও তৈরি হয়েছে।

অল্প সময়ের মধ্যেই প্রযুক্তিভিত্তিক উদ্ভাবনের ধারাবাহিকতা, গ্রাহক কেন্দ্রিকতা, সর্বোচ্চ কমপ্লায়েন্স নিশ্চিত করার মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনা করার পাশাপাশি বিকাশ দেশের ডিজিটাল আর্থিক ইকোসিস্টেমকে সুদৃঢ় করতেও ভূমিকা পালন করছে। গ্রাহকের আর্থিক লেনদেনে অভ্যাসগত পরিবর্তন আনার ক্ষেত্রে অবদান রেখেছে।

বাংলাদেশ সরকারের দিকনির্দেশনা, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতিসহায়তা ও সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যমাত্রাও ডিজিটাল লেনদেনের প্রসারে ভূমিকা পালন করেছে। ভবিষ্যৎ স্মার্ট বাংলাদেশের অন্যতম মূল ভিত্তি হবে ক্যাশলেস বা নগদ অর্থবিহীন লেনদেনের ব্যবস্থা। এই লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বিকাশ গ্রাহকদের ডিজিটাল লিটারেসি বা সাক্ষরতা বৃদ্ধিতে ভূমিকা পালন করছে। এ ছাড়া ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বিভিন্ন নাগরিক সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সমন্বয় ও সহযোগিতা বাড়ানোর কারণে দেশে ডিজিটাল পেমেন্ট প্রসার লাভ করছে।

ভবিষ্যতের সব সেবার মূলে থাকবে তথ্যভিত্তিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার এই সুযোগ। ডিজিটাল পেমেন্ট আরও বাড়াতে স্মার্টফোনের ব্যবহার বৃদ্ধির পাশাপাশি প্রয়োজন ইন্টারনেট সংযোগ বাড়ানো। বড় শহরগুলোর বাইরে প্রান্তিক জনপদেও দ্রুতগতির ইন্টারনেট সুবিধা পৌঁছে গেলে ডিজিটাল পেমেন্টের আরও প্রবৃদ্ধি হবে। দেশে ই-কমার্স ও এফ-কমার্স খাত দ্রুত প্রসারিত হচ্ছে। এই খাতে পণ্য ও সেবা ডেলিভারির সময় কমে এলে ডিজিটাল কেনাকাটায় নাগরিকদের আগ্রহ ও অভ্যস্ততা আরও বাড়বে। ডিজিটাল পেমেন্ট বাড়াতে এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

লেখক: চিফ এক্সটার্নাল অ্যান্ড করপোরেট অ্যাফেয়ার্স অফিসার, বিকাশ