২০২৩ সালও বিশ্ব অর্থনীতির জন্য কঠিন সময় যাবে। এই বাস্তবতায় আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) ২০২৩ সালের প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস হ্রাস করবে না। সংস্থাটির পূর্বাভাস, ২০২৩ সালে বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধি হবে ২ দশমিক ৭ শতাংশ।
কিছুদিন আগেই বিশ্বব্যাংক বলেছে, বিশ্ব অর্থনীতি মন্দার খুব কাছাকাছি চলে এসেছে। মন্দা না হলেও প্রবৃদ্ধির গতি কমে যাবে। জ্বালানি তেলের দাম তেমন একটা বাড়বে না। সেই সঙ্গে শ্রমবাজারও বেশ শক্তিশালী। এই বাস্তবতায় ২০২৩ সালের প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস হ্রাস করবে না আইএমএফ। খবর আল-জাজিরার
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসিতে আইএমএফের সদর দপ্তরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন সংস্থাটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা। তিনি বলেন, সবচেয়ে ইতিবাচক চিত্র দেখা যাচ্ছে শ্রমবাজারে। মানুষের যত দিন কাজ থাকে, তত দিন তারা ব্যয় করবে, এমনকি দ্রব্যমূল্য বেশি থাকলেও। তিনি মনে করেন, অর্থনীতির শ্লথগতি চূড়ান্ত সীমায় পৌঁছেছে এবং ২০২৩ সালের শেষ দিক থেকে পরিস্থিতির উত্তরণ ঘটবে।
ক্রিস্টালিনার আশাবাদের কারণ হলো চীন। একসময় বৈশ্বিক অর্থনীতিতে চীনের অবদান ছিল ৩৫ থেকে ৪০ শতাংশ। কিন্তু গত কয়েক বছরে তাদের অবস্থা খুব একটা ভালো ছিল না। তিনি মনে করছেন, চীন আবার বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধির পালে হাওয়া দেবে। তবে সবকিছু নির্ভর করছে চীনের কোভিড নীতির ওপর। সম্প্রতি তারা শূন্য কোভিড নীতি থেকে সরে এসেছে। দেশটি এই নীতিতে অটল থাকলে চীন শক্তিশালী হবে।
এমনকি যুক্তরাষ্ট্র কার্যত মন্দার কবলে পড়লেও তা অতটা গভীর হবে না বলেই মনে করেন জর্জিয়েভা।
তবে অনিশ্চয়তা একেবারে দূর হয়ে যায়নি। বড় ধরনের প্রাকৃতিক বিপর্যয়, সাইবার হামলা বা রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ নতুন মোড় নিলে পরিস্থিতির বড় ধরনের অবনতি হতে পারে। সে জন্য তাঁর আহ্বান, ঝুঁকির বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে। এ ছাড়া দেশে দেশে যেভাবে আর্থিক খাতে কড়াকড়ি আরোপ করা হচ্ছে, তার ফল কী হবে, সে বিষয়ে নিশ্চিত নন জর্জিয়েভা।
এদিকে বিশ্বব্যাংকের পূর্বাভাস, ২০২৩ সালে বিশ্ব অর্থনীতির প্রবৃদ্ধির হার দাঁড়াতে পারে ১ দশমিক ৭ শতাংশ। অথচ গত জুন মাসেই সংস্থাটি বলেছিল, ২০২৩ সালে বিশ্ব অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি হতে পারে ৩ শতাংশ। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ থেকে শুরু করে করোনা মহামারি—এমন আরও অনেক কারণই চিহ্নিত করেছে বিশ্বব্যাংক। তারা মনে করছে, উচ্চ মূল্যস্ফীতির প্রভাব মোকাবিলায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক যেভাবে নীতি সুদহার বৃদ্ধি করছে, তার প্রভাব মোকাবিলাই এই মুহূর্তের প্রধান চ্যালেঞ্জ।