সার
সার

সারের ভর্তুকি পরিশোধে ৩,০১৬ কোটি টাকার বন্ড

টাকার অভাবে বিশেষ বন্ড ছেড়ে আপাতত সার কেনার কিছু দেনা পরিশোধ করছে সরকার। প্রথম দফায় গতকাল বৃহস্পতিবার সরকারের সঙ্গে দুই ব্যাংকের মোট ৩ হাজার ১৬ কোটি টাকার বন্ড ছাড়ার বহুপক্ষীয় চুক্তি হয়েছে। এর মধ্যে সোনালী ব্যাংকের অনুকূলে রয়েছে ২ হাজার ৫৫৭ কোটি টাকা এবং আইএফআইসি ব্যাংকের অনুকূলে ৪৫৯ কোটি টাকা। অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

সূত্র জানায়, ধাপে ধাপে সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে মোট ৪০টি ব্যাংকের অনুকূলে ২৬ হাজার কোটি টাকার বিশেষ বন্ড ছাড়বে সরকার। বন্ডের মাধ্যমে দেনা পরিশোধ হবে সার ও বিদ্যুৎ খাতের। বন্ডের কুপন রেট বা সুদহার হবে ৭ দশমিক ৭৫ শতাংশ। এ হার বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্ধারণ করা রেপো রেটের সমান।

বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশন (বিসিআইসি) এবং বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএডিসি) কাছে সার আমদানিবাবদ অর্থ পায় সোনালী ব্যাংক। আর বেসরকারি চার আমদানিকারকের কাছে টাকা পায় আইএফআইসি ব্যাংক। এ টাকা মূলত ভর্তুকির টাকা। বিসিআইসি, বিএডিসি ও আমদানিকারকদের কাছ থেকে বেশি দামে সার কিনে সরকার কম দামে বাজারে বিক্রি করে। ওই দুই দামের পার্থক্যটুকুই হচ্ছে ভর্তুকি।

ভর্তুকি বাবদ সরকার কয়েক মাস ধরে নগদে অর্থ দিতে পারছিল না। এদিকে ব্যাংকগুলোর কাছে খেলাপি হয়ে পড়ছিলেন সার বিক্রেতারা। বন্ডের উদ্যোগ নেওয়ার ফলে উভয় ব্যাংক এখন আর দেনাদারদের কাছে টাকা চাইতে পারবে না। অর্থাৎ তাদের পক্ষেই এখন দায়িত্ব নিয়েছে সরকার। মেয়াদ শেষে সুদসহ অর্থ পরিশোধ করবে সরকার। তখন বন্ডগুলোও সরকার ফেরত নেবে। সাধারণত বন্ড ১৫ থেকে ২০ বছর মেয়াদি হলেও বিশেষ বন্ডের মেয়াদ সর্বোচ্চ ১০ বছর। 

গত নভেম্বরের শেষে নিরবচ্ছিন্ন সার আমদানির ব্যাপারে সোনালী ব্যাংকের সহযোগিতা চেয়ে চিঠি দিয়েছিল বিসিআইসি। চিঠিতে বিসিআইসি জানায়, সার আমদানির ৩ হাজার ১৬৭ কোটি টাকার ঋণ খেলাপি হয়ে গেছে এবং নতুন এলসি খোলায় জটিলতা হচ্ছে। গত জুন পর্যন্ত শুধু ইউরিয়া সারের ভর্তুকি বাবদ সরকারের কাছে পাওনা ৭ হাজার ৪০০ কোটি টাকা। ভর্তুকির টাকা না পেলে ব্যাংকের দায় পরিশোধ করা যাবে না। ওই চিঠিতে আরও বলা হয়, সৌদি আরব থেকে সার আমদানির মূল্য যথাসময়ে পরিশোধ করা হয়নি। 

আইএফআইসি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহ আলম সারোয়ারের কাছে এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি ব্যাংকের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহ মোহাম্মদ মইনুদ্দিনের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন। শাহ মোহাম্মদ মইনুদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের ৪৫৯ কোটি ২৫ লাখ টাকার বন্ডটি আট বছর মেয়াদি এবং ছয় মাস পরপর আমরা সুদ পাব।’