উন্নয়নশীল দেশ হওয়ার পর বিদেশি ঋণের সুদ বেড়ে যাবে। তাতে ঋণ পরিশোধে চাপ বাড়বে। বর্তমানে সরকারের বার্ষিক যে রাজস্ব আয় তার ১৮ শতাংশই ঋণ পরিশোধে ব্যয় হচ্ছে। রাজস্ব আয় তেমন না বাড়লেও বছর বছর ঋণ পরিশোধের চাপ ঠিকই বাড়ছে। এটা উদ্বেগের বিষয়।
সরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান (বিআইডিএস) আয়োজিত ‘ঋণ ও উন্নয়ন: বাংলাদেশ কোন দিকে যাচ্ছে’ শীর্ষক এক ওয়েবিনারে এসব কথা বলেন কানাডার কনকর্ডিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক সৈয়দ মইনুল আহসান। ওয়েবিনারে তিনি ছিলেন প্রধান আলোচক। তিনি বলেন, ‘রাজস্ব আয়ের ১৮ শতাংশ ঋণ পরিশোধে চলে যাচ্ছে। এটি নিশ্চয়ই আমাদের জন্য উদ্বেগের বিষয়।’
অনুষ্ঠানে সৈয়দ মইনুল আহসান বলেন, ‘দেশে অনেক বেশি ব্যাংক। এটা আর্থিক খাতে ভালো প্রভাব আনবে না। এখানে আমরা ব্যাংককে বন্ধ হতে দিই না। এটা একটা খারাপ নজির। সুশাসন নিশ্চিত করতে হলে ব্যাংক খাতে সংস্কার আনতে হবে। কিন্তু ব্যাংকের সংখ্যা কমানো না গেলে সেটি সম্ভব না।’
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক এজাজুল ইসলাম বলেন, ‘বর্তমান বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে বেসরকারি খাতের নেওয়া স্বল্পমেয়াদি বিদেশি ঋণ আমাদের জন্য বেশ ঝুঁকিপূর্ণ। ২০১২ সালে ব্যবসায়ীদের চাপে বেসরকারি খাতে বিদেশি ঋণ গ্রহণের অনুমতি দিয়েছিলাম। তখন বিদেশি ঋণের সুদ অভ্যন্তরীণ সুদের চেয়ে কম ছিল। কিন্তু এখন উল্টোটি হচ্ছে। আগে যারা ডলারপ্রতি ৮৬ টাকা করে ঋণ নিয়েছিল, সেই ঋণ নিতে এখন ১০৫ টাকা করে লাগবে। এতে আমরা ফাঁদে পড়ে যেতে পারি।’
ওয়েবিনারের সঞ্চালক ছিলেন বিআইডিএসের মহাপরিচালক বিনায়ক সেন। তিনি বলেন, ‘এখনো পর্যন্ত আমরা ভালোভাবে ঋণ ব্যবস্থাপনা করছি। কিন্তু রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ আমাদের কোভিডের চেয়েও বেশি ক্ষতি করছে। যুদ্ধ যদি আরও দীর্ঘস্থায়ী হয়, তাহলে তা আমাদের আরও বেশি নাজুক অবস্থায় ফেলবে। আমাদের লক্ষ রাখা উচিত আয়ের কত শতাংশ ঋণ পরিশোধে ব্যয় হচ্ছে।’