দিনাজপুর জেলার বড়পুকুরিয়া, বান্দরবানের লামা ও ফেনীর সোনাগাজী উপজেলায় তিনটি পৃথক সৌরবিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের জন্য ট্যারিফ বা শুল্ক অনুমোদন দিয়েছে সরকার। এসব সৌরবিদ্যুৎকেন্দ্রে মোট ব্যয় হবে ১৫ হাজার ৭২০ কোটি টাকা।
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে গতকাল বুধবার অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে এসব প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়।
গতকাল অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির ২২তম এবং সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির ৩২তম বৈঠক ছিল। বৈঠকে অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির অনুমোদনের জন্য ১টি এবং ক্রয় কমিটির অনুমোদনের জন্য ১৪টি প্রস্তাব উপস্থাপন করা হয়।
ক্রয় কমিটির অনুমোদিত ১৪টি প্রস্তাবে মোট ব্যয়ের পরিমাণ দাঁড়াবে প্রায় ১৬ হাজার ৮৩ কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকার দেবে ১৪ হাজার ২৮৪ কোটি টাকা। আর দেশীয় ব্যাংক ও বৈদেশিক অর্থায়ন থেকে আসবে ১ হাজার ৭৯৯ কোটি টাকা।
ট্যারিফ অনুমোদন পাওয়া সৌরবিদ্যুৎকেন্দ্রের মধ্যে ২০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার সৌরবিদ্যুৎকেন্দ্রটি অবস্থিত দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি এলাকায়। ২০ বছর মেয়াদি এ প্রকল্পের সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৭ হাজার ১৬৯ কোটি টাকা। এ ছাড়া বান্দরবানের লামা উপজেলায় ৭০ মেগাওয়াট ক্ষমতার একটি সৌরবিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের ট্যারিফ অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ২০ বছর মেয়াদি এ প্রকল্পে সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছে ২ হাজার ৪৮৬ কোটি টাকা। আর ফেনীর সোনাগাজী উপজেলায় ২০ বছর মেয়াদি ১০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার অপর একটি সৌরবিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনে সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছে ৩ হাজার ৫৮১ কোটি টাকা। সব মিলিয়ে এ তিনটি সৌরবিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনে খরচ ধরা হয়েছে ১৩ হাজার ২৩৬ কোটি টাকা।
ক্রয় কমিটিতে অনুমোদন পাওয়া অন্য প্রস্তাবগুলোর মধ্যে রয়েছে নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলায় বাংলাদেশ স্পেশাল অর্থনৈতিক অঞ্চল (বিএসইজেড) বা জাপানি অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনের জন্য অবকাঠামো উন্নয়নসংক্রান্ত। গতকালের বৈঠকে বিএসইজেড প্রকল্পের পূর্তকাজের ভেরিয়েশন প্রস্তাবের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ২৭০ কোটি টাকা।
বৈঠকে পদ্মা সেতু নির্মাণ প্রকল্পের নদীশাসনকাজের ভেরিয়েশন প্রস্তাবও অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এ কাজে ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৮৭৮ কোটি টাকা। একই সঙ্গে পায়রা সমুদ্রবন্দরের জন্য প্রায় ১১০ কোটি টাকায় দুটি মোবাইল হারবার ক্রেন ও আনুষঙ্গিক যন্ত্রপাতি সংগ্রহের ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়েছে।
ঢাকা জেলার কেরানীগঞ্জে গুরুত্বপূর্ণ সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পের পূর্তকাজের দুটি পৃথক ক্রয়প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে ক্রয়সংক্রান্ত কমিটি। এতে মোট ব্যয় হবে ২৯৫ কোটি ৫০ লাখ টাকা। আর চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ৪১টি ওয়ার্ডের সড়কে এলইডি বাতি লাগানো ও সরবরাহসংক্রান্ত ২ কোটি ৩৬ লাখ টাকার একটি ক্রয় প্রস্তাবও অনুমোদন পেয়েছে বৈঠকে।
এ ছাড়া বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সরবরাহ বাড়াতে স্পট মার্কেট থেকে এলএনজি আমদানি ও সার আমদানিসংক্রান্ত কয়েকটি প্রস্তাবও গতকালের বৈঠকে অনুমোদন হয়।