অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল আগামী ১ জুন জাতীয় সংসদে আগামী অর্থবছরের বাজেট পেশ করবেন। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেট থেকে স্থানীয়ভাবে কী প্রত্যাশা করা হচ্ছে, তা জানতে ঢাকার বাইরের ব্যবসায়ী নেতাদের অভিমত প্রকাশ করছে প্রথম আলো।
শংকর সাহা ময়মনসিংহ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সহসভাপতি। প্রথম আলোর কাছে জানিয়েছেন আগামী বাজেটে তাঁর প্রত্যাশার কথা।
করোনা মহামারি এবং পরবর্তী সময়ে ইউক্রেন–রাশিয়া যুদ্ধের কারণে বৈশ্বিক অর্থনীতি দুর্বল হয়েছে। বাংলাদেশও এর বাইরে নয়। কাজেই এ অবস্থায় আসন্ন বাজেট কেমন হবে, তা ধারণা করা যাচ্ছে না। তবে এর মধ্যেই এ বাজেটে ময়মনসিংহের সার্বিক উন্নয়নে যেন নজর থাকে, সে আশা করি।
ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলায় একটি রপ্তানি প্রক্রিয়াজাতকরণ অঞ্চল বা ইপিজিড স্থাপন করার প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে। ময়মনসিংহের সার্বিক উন্নয়নের স্বার্থে এই ইপিজেডের দ্রুত বাস্তবায়ন আমরা দেখতে চাই।
জেলায় ভালুকার পর সাম্প্রতিক সময়ে ত্রিশাল উপজেলায়ও ব্যাপক শিল্পায়ন ঘটেছে। তবে আমরা চাই ময়মনসিংহের মানুষের জন্যও ব্যবসার পরিসর বৃদ্ধি পাক। আরও বৃদ্ধি পাক ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের সুযোগ। পাশাপাশি ময়মনসিংহের নারী উদ্যোক্তাদের জন্য ব্যবসার সুযোগ ও ব্যাংকঋণের সুবিধা বাড়ানো প্রয়োজন।
স্বাস্থ্য খাতে বিনিয়োগ বাড়িয়ে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালকে ১ হাজার শয্যা থেকে ২ হাজার শয্যায় উন্নীত করা হলে এ অঞ্চলের মানুষের জন্য স্বাস্থ্যসেবা–সুবিধা বাড়বে। এখানে স্বাস্থ্যসুবিধা বাড়ানো প্রয়োজন। কারণ, ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালটি বৃহত্তর ময়মনসিংহ ছাড়াও গাজীপুর, সুনামগঞ্জ ও কুড়িগ্রাম জেলার মানুষের স্বাস্থ্যসেবার ভরসাস্থল। কাজেই এখানে ক্যানসার চিকিৎসার সুবিধা বাড়ানোর পাশাপাশি সব ধরনের রোগের চিকিৎসায় উন্নত প্রযুক্তি চালু করা প্রয়োজন বলে মনে করি।
আট বছর আগে ময়মনসিংহ বিভাগ হয়েছে। তখন থেকেই আমরা শুনছি, ব্রহ্মপুত্র নদের চরে জমি অধিগ্রহণ করা হবে। অধিগ্রহণকৃত জমিতে বিভিন্ন বিভাগীয় দপ্তর নির্মাণসহ নতুন শহর গড়ে তোলার কথা জানতে পারছি। তবে এ প্রক্রিয়া এগোচ্ছে না। ময়মনসিংহের সব স্তরের মানুষ চায় এটি বাস্তবায়িত হোক।
ঢাকার সঙ্গে ময়মনসিংহের যোগাযোগব্যবস্থা আরও সহজ করা দরকার। এখানকার নাগরিক সমাজের দাবি, যাতায়াতসুবিধার জন্য ময়মনসিংহ থেকে ঢাকা রুটে প্রতিদিন দুই জোড়া আন্তনগর ট্রেন চালু করা হোক। আমাদের প্রত্যাশা, আগামী বাজেটে এ ব্যাপারে সরকারব্যবস্থা নেবে।
ময়মনসিংহে ব্রহ্মপুত্র নদের চরাঞ্চলে প্রচুর টমেটোর উৎপাদন হয়। কিন্তু কৃষক পর্যায়ে ওই টমেটো সংরক্ষণ করা যায় না। ফলে উৎপাদন মৌসুমেই কৃষককে কম দামে টমেটো বিক্রি করে দিতে হয়। চরাঞ্চলের টমেটোসহ বিভিন্ন সবজি সংরক্ষণের জন্য হিমাগার তৈরি করা হলে কৃষক আর্থিকভাবে লাভবান হবে।
ময়মনসিংহে ব্রহ্মপুত্র নদের খননকাজ চলছে চার বছর ধরে। আমাদের প্রত্যাশা এ খনন যেন মানুষের অর্থনৈতিক উন্নয়নে ভূমিকা পালন করে। সার্বিকভাবে আগামী বাজেটের মাধ্যমে ময়মনসিংহ জেলার ব্যবসা–বাণিজ্য, যোগাযোগব্যবস্থার সার্বিক উন্নয়ন আমাদের প্রত্যাশা।
অনুলিখন: কামরান পারভেজ, জেলা প্রতিনিধি, ময়মনসিংহ