স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম বাজেট দিয়েছিলেন দেশের প্রথম অর্থমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ। একসঙ্গে তিনি দুই অর্থবছরের বাজেট দিয়েছিলেন। এর আগে মুজিবনগর সরকার ১৯৭১ সালের ১৯ জুলাই দৈনন্দিন ও অপরিহার্য ব্যয় নির্বাহে একটি বাজেট পেশ করেছিল। সব মিলিয়ে এ পর্যন্ত ১৩ জন অর্থমন্ত্রী বা অর্থ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা বাজেট দিয়েছেন।
প্রথম বাজেট ছিল ছোট আকারের। আর ৫২ বছর পর সেই বাজেটের কলেবর বড় হয়েছে, বেড়েছে প্রবৃদ্ধি। যত বাজেট দেওয়া হয়েছে, তার আকার কত ছিল, কে কবে তা উপস্থাপন করেছিলেন, পেশ করার সময় কী বলেছিলেন, তারই একটি বিবরণ দেওয়া হলো এখানে।
১. মুজিবনগর সরকার, ১৯ জুলাই ১৯৭১
রাজস্ব আয় ৭,৭৪,১৮,৯৯৮ টাকা, ব্যয় ৮,৬২,৪৮,২০৪ টাকা।
প্রথম বাজেটটি দিয়েছিল মুজিবনগর সরকার। স্বাধীনতাযুদ্ধের জন্য দরকারি, অপরিহার্য ব্যয় মেটাতেই এ বাজেট। জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর সময়ের জন্য তৈরি।
২. তাজউদ্দীন আহমদ, ১৯৭১-৭২ ও ১৯৭২-৭৩ অর্থবছর, ৩০ জুন ১৯৭২
একসঙ্গে দুই অর্থবছরের বাজেট পেশ করা হয়েছিল। ১৯৭১-৭২ অর্থবছরের বাজেটকাল ছিল ১৬ ডিসেম্বর ১৯৭১ থেকে ৩০ জুন ১৯৭২।
ক. ১৯৭১-৭২ অর্থবছর: রাজস্ব আয় ৪৮.৫২ কোটি টাকা, ব্যয় ৯৯.১৩ কোটি টাকা ও এডিপি ৫১.৪৬ কোটি টাকা।
খ. ১৯৭২-৭৩ অর্থবছর: রাজস্ব আয় ২৮৫.৩৮ কোটি, রাজস্ব ব্যয় ২১৮.৪৩ কোটি টাকা, উদ্বৃত্ত ৭৩.১৫ কোটি, উন্নয়ন, পুনর্নির্মাণ ও পুনর্বাসন ব্যয় ৫০১ কোটি টাকা, এর মধ্যে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) ৩১৮.৩০ কোটি টাকা।
এ বাজেটকে বলা হয়েছিল পুনর্বাসন ও পুনর্গঠনধর্মী। লক্ষ্য ছিল ভবিষ্যৎ শোষণহীন, সমাজতান্ত্রিক সমাজের ভিত্তি স্থাপন। বক্তৃতার শুরুতেই অর্থমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘বেতার ও টেলিভিশনের মাধ্যমে এ বাজেট প্রচার না করে নির্বাচিত গণপ্রতিনিধিদের সামনে উপস্থাপিত করতে পারলে আমি সুখী হতাম। তবে আমি আশা করি যে এরপরে আর কোনো দিন এভাবে আমাদের বাজেট প্রচার করতে হবে না।’
৩. তাজউদ্দীন আহমদ, ১৯৭৩-৭৪ অর্থবছর, ১৪ জুন ১৯৭৩
রাজস্ব আয় ৩৭৪.৩২ কোটি টাকা, রাজস্ব ব্যয় ২৯৫.৩০ কোটি টাকা, উদ্বৃত্ত ৭৯.০২ কোটি টাকা, উন্নয়ন ও পুনর্নির্মাণ ব্যয় ৫২৫.৩৫ কোটি টাকা, এর মধ্যে এডিপি ৪৪৯.৯৭ কোটি টাকা।
বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী বৈদেশিক নির্ভরশীলতা ঘুচিয়ে অভ্যন্তরীণ সম্পদের সদ্ব্যবহার করার মতো প্রকল্প ও নীতি গ্রহণের কথা বলেছিলেন। তাজউদ্দীন আহমদ বলেছিলেন, ‘আমাদের উন্নয়নের প্রথম বৎসরে অর্থব্যবস্থার পুনরুজ্জীবন, জাতীয় পুনর্গঠন এবং খাদ্য ও অন্যান্য দ্রব্য সংগ্রহের জরুরি তাগাদায় আমরা বৃহৎ পরিমাণে বৈদেশিক সাহায্য নিতে বাধ্য হয়েছিলাম। সাহায্যকারী দেশসমূহের কাছে আমরা ঋণী। কিন্তু তাদের প্রতি এবং নিজেদের প্রতি আমাদের দায়িত্ব হলো এ কথা প্রতিপন্ন করা যে আন্তর্জাতিক সাহায্যের স্থায়ী প্রার্থী আমরা নই, প্রয়োজনীয় কষ্ট স্বীকার আমরা করতে প্রস্তুত এবং বৈদেশিক সাহায্যকে আমরা উৎপাদন ক্ষেত্রে বিনিয়োগ করতে প্রয়াসী। সকল স্তরে আমরা আয়ত্তাধীন ক্ষমতায় পূর্ণ সদ্ব্যবহার করেছি, এ বিষয়ে নিশ্চিত হওয়ার পরই শুধু নতুন বৈদেশিক সাহায্য সন্ধান করতে পারি, যাতে বৈদেশিক নির্ভরশীলতা ঘুচিয়ে আমরা অভ্যন্তরীণ সম্পদের সদ্ব্যবহার করতে পারি, তেমন বিনিয়োগ প্রকল্প ও নীতি আমাদের গ্রহণ করা উচিত। সেই সঙ্গে রপ্তানি বৃদ্ধি করতে হবে এবং আমদানি বিকল্পের বিকাশ সাধন করতে হবে।’
৪. তাজউদ্দীন আহমদ, ১৯৭৪-৭৫ অর্থবছর, ১৯ জুন ১৯৭৪
রাজস্ব আয় ৪৭০.২৩ কোটি টাকা, রাজস্ব ব্যয় ৪৭০.২৩ কোটি টাকা ও এডিপি ৫২৫ কোটি টাকা।
অর্থমন্ত্রী বাজেট বক্তৃতায় বলেছিলেন, ‘অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে প্রত্যাশিত প্রবৃদ্ধি না ঘটলেও ১৯৭৩-৭৪ অর্থবৎসর জাতির জন্য বাস্তবানুগ অভিজ্ঞতার কাল। উন্নয়নের উদ্দেশ্যে সর্বাত্মক প্রয়াসে জাতি সর্ব পর্যায়ে অগ্রণী হয়েছিল কি না, তা তলিয়ে দেখা দরকার। সততা, নিয়মানুবর্তিতা, বাস্তবানুগ উন্নয়ন নীতি প্রণয়ন ও কঠোর পরিশ্রমের আজ বড় প্রয়োজন। এ কথা মনে রাখা দরকার যে স্লোগান দিয়ে সমাজতন্ত্র কায়েম হয় না, দুর্নীতি দূর হয় না, বুলি আউড়িয়ে প্রবৃদ্ধি আনা যায় না, জনসাধারণকে সর্বকালের জন্য ধোঁকা দেওয়া চলে না।’
৫. এ আর মল্লিক, ১৯৭৫-৭৬ অর্থবছর, ২৩ জুন ১৯৭৫
রাজস্ব আয় ৭৫৫.৩৮ কোটি টাকা, ব্যয় ৫৯৯.১৯ কোটি টাকা, উদ্বৃত্ত ১৫৬.১৯ কোটি টাকা ও এডিপি ৯৫০.২৯ কোটি টাকা।
বেসরকারি পুঁজি বিনিয়োগের ঊর্ধ্বসীমা ২৫ লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩ কোটি টাকায় উন্নীত করার ঘোষণা ছিল বাজেটে। বাজেটের উপসংহারে অর্থমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘এই বাজেট সর্বপ্রকার জাতীয় সমস্যার সমাধান করিবে—এই প্রতিশ্রুতি আমি দিতেছি না, তবে এই কথা আমি দৃঢ়প্রত্যয়ের সহিত বলিতে পারি যে আমরা উন্নয়ন কার্যক্রমের সর্বাঙ্গীন সফলতার জন্য যে পদক্ষেপ গ্রহণে সচেষ্ট হইয়াছি, তাহা জাতিকে সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছাইতে সাহায্য করিবে।’
৬. মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান, ১৯৭৬-৭৭ অর্থবছর, ২৬ জুন ১৯৭৬
রাজস্ব আয় ৯৬৬.৩৮ কোটি টাকা, রাজস্ব ব্যয় ৭৬৮ কোটি টাকা, উদ্বৃত্ত ১৯৮.৫০ কোটি টাকা ও এডিপি ১১০০ কোটি টাকা।
জাতীয় সংসদের বাইরে আবার বাজেট উপস্থাপন। বাজেট দেওয়া হয় রেডিও-টেলিভিশনের মাধ্যমে বঙ্গভবন থেকে। জিয়াউর রহমান তখন সেনাবাহিনীর প্রধান উপপ্রধান সামরিক আইন প্রশাসক এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপদেষ্টা। বাজেটে রাষ্ট্রায়ত্ত খাতের দক্ষতা বাড়ানোর পাশাপাশি বেসরকারি খাতের বৃহত্তর ভূমিকাকে শিল্পায়নের জন্য গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করা হয়। বাজেটে ব্যক্তিশ্রেণির করদাতার ন্যূনতম আয়করের সীমা ৮ হাজার ৪০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১০ হাজার টাকা করা হয়।
৭. মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান, ১৯৭৭-৭৮ অর্থবছর, ২৫ জুন ১৯৭৭
রাজস্ব আয় ১,১৫৬ কোটি টাকা, ব্যয় ৯০৬ কোটি টাকা, উদ্বৃত্ত ২৫০ কোটি ও এডিপি ১,১৫০ কোটি টাকা।
প্রেসিডেন্ট ও প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক জিয়াউর রহমান তখনো অর্থ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে। এ বাজেটেই ইতিহাসে প্রথমবারের মতো কোনো জরিমানা ছাড়াই কালোটাকা সাদা করার সুযোগের কথা বলা হয়, নইলে কঠোর ব্যবস্থা।
৮. মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান, ১৯৭৮-৭৯ অর্থবছর, ৩০ জুন ১৯৭৮
রাজস্ব আয় ১,৩৭৬ কোটি টাকা, ব্যয় ১,০৫৩ কোটি টাকা, উদ্বৃত্ত ৩২৩ কোটি টাকা ও এডিপি ১,৩৯০ কোটি টাকা।
জিয়াউর রহমান তখন রাষ্ট্রপতি ও প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক। বাজেটে জানানো হয়, আগের অর্থবছরে নতুন বেতন স্কেল কার্যকর করার কারণে অতিরিক্ত অর্থের প্রয়োজন দেখা দেয়। আর এ কারণেই বাজেটে ব্যয় বেড়ে যায়।
৯. মীর্জা নুরুল হুদা, ১৯৭৯-৮০ অর্থবছর, ২ জুন ১৯৭৯
রাজস্ব আয় ১,৮১২.০৬ কোটি টাকা, ব্যয় ১,১৯৩. ৯৬ কোটি টাকা, উদ্বৃত্ত ৬০৮.০৬ কোটি ও এডিপি ২০৭০ কোটি টাকা।
তিন অর্থবছর পর বাজেট উপস্থাপন করা হয় জাতীয় সংসদে। এ সময় কর তদন্ত কমিশনের চূড়ান্ত রিপোর্ট অনুযায়ী বাজেটের মাধ্যমেই তা কার্যকর করার প্রস্তাব করা হয়। গুরুত্ব দেওয়া হয় প্রত্যক্ষ করকে।
১০. মো. সাইফুর রহমান, ১৯৮০-৮১, ৭ জুন ১৯৮০
রাজস্ব আয় ২,১৯৩ কোটি টাকা, ব্যয় ১,৪০৮ কোটি টাকা, উদ্বৃত্ত ৭৮৫ কোটি ও এডিপি ২,৭০০ কোটি টাকা।
আয় ২০ হাজার টাকার বেশি হলে সম্পদ ও দায় বিবরণী বাধ্যতামূলক এবং সময়মতো রিটার্ন দাখিল না করলে জরিমানা ধার্য করা হয়।
১১. মো. সাইফুর রহমান, ১৯৮১-৮২ অর্থবছর, ৬ জুন ১৯৮১
রাজস্ব আয় ২,৭৬৭ কোটি টাকা, ব্যয় ১,৬৬২ কোটি টাকা, উদ্বৃত্ত ১,১০৫ কোটি টাকা ও এডিপি ৩,০১৫ কোটি টাকা।
কম্পিউটারের ওপর শুল্ক ১০০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫০ শতাংশ ও সব আমদানির ওপর ১ শতাংশ হারে উন্নয়ন সারচার্জ বসানো হয়।
১২. আবুল মাল আবদুল মুহিত, ১৯৮২-৮৩ অর্থবছর, ৩০ জুন ১৯৮২
রাজস্ব আয় ২,৬৬৭.৮২ কোটি টাকা, ব্যয় ২,০৩৭.৬৩ কোটি টাকা, উদ্বৃত্ত ৭৩০.১৯ কোটি টাকা ও এডিপি ২,৭০০ কোটি টাকা।
জেনারেল এইচ এম এরশাদ তখন প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক। বাজেট দেওয়া হয় তারই সচিবালয়ে। এ সময় করমুক্ত আয়ের সীমা ১৫ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ২০ হাজার টাকা করা হয়। সরকারি কর্মচারী-কর্মকর্তাদের জন্য মহার্ঘ ভাতার ঘোষণা দেওয়া হয়।
১৩. আবুল মাল আবদুল মুহিত, ১৯৮৩-৮৪ অর্থবছর, ৩০ জুন ১৯৮৩
রাজস্ব আয় ৩,৩৯৬.৭৬ কোটি টাকা, ব্যয় ২,৪১৩.৫৪ কোটি টাকা, উদ্বৃত্ত ৯৮৩.২২ কোটি টাকা ও এডিপি ৩,৪৮৩.৮৬ কোটি টাকা।
প্রথমবারের শুল্কায়নের জন্য আমদানি পণ্যকে তিন ভাগে ভাগ করা হয়েছিল। যেমন কাঁচামাল, শিল্পের রসদ হিসেবে ব্যবহৃত প্রক্রিয়াজাত সামগ্রী ও প্রস্তুত পণ্য।
১৪. এম সাইদুজ্জামান, ১৯৮৪-৮৫, ২৭ জুন ১৯৮৪
রাজস্ব আয় ৩,৪৬৫ কোটি টাকা, ব্যয় ২,৮০২.৮০ কোটি টাকা, উদ্বৃত্ত ৬৬২.২০ কোটি টাকা ও এডিপি ৩,৮৯৬ কোটি টাকা।
নতুন আয়কর আইন চালুর ঘোষণা, নতুন আইনে স্বনির্ধারণী পদ্ধতিতে আয়করের সীমা ৭৫ হাজার থেকে বাড়িয়ে ১ লাখ টাকা করা হয়।
১৫. এম সাইদুজ্জামান, ১৯৮৫-৮৬ অর্থবছর, ৩০ জুন ১৯৮৫
রাজস্ব আয় ৩,৭৫৪ কোটি টাকা, ব্যয় ৩,৩১৩ কোটি টাকা, উদ্বৃত্ত ৪৪১ কোটি টাকা ও এডিপি ৩,৮২৫.৭২ কোটি টাকা।
নতুন আয়করদাতাদের ক্ষেত্রে এক লাখ টাকা পর্যন্ত মূলধন বিনা প্রশ্নে মেনে নেওয়া ও নতুন শিল্প স্থাপনে করছাড় দেওয়া হয়।
১৬. এম সাইদুজ্জামান, ১৯৮৬-৮৭ অর্থবছর, ২৭ জুন ১৯৮৬
রাজস্ব আয় ৪, ৪৬৮ কোটি টাকা, ব্যয় ৩,৭৪০ কোটি টাকা, উদ্বৃত্ত ৭২৮ কোটি টাকা ও এডিপি ৪,৭৬৪ কোটি টাকা।
বিনিয়োগ বাড়াতে দীর্ঘমেয়াদি শিল্পঋণের সুদহার কমানো হয়। গ্যাস ও টেলিফোন চার্জ বাড়ানো হয়, কমানো হয় কেরোসিন, ডিজেল ও পেট্রলের দাম।
১৭. এম সাইদুজ্জামান, ১৯৮৭-৮৮ অর্থবছর, ১৮ জুন ১৯৮৭
রাজস্ব আয় ৪,৯১৫ কোটি টাকা, ব্যয় ৪,৪৮১ কোটি টাকা, উদ্বৃত্ত ৪৩৪ কোটি টাকা ও এডিপি ৫,০৪৬ কোটি টাকা।
আবারও কালোটাকা সাদা করার সুযোগ। যেকোনো আয়কে অন্যান্য সূত্র হিসেবে দেখিয়ে ২০ শতাংশ কর দিলেই বিনা প্রশ্নে মেনে নেওয়া হবে।
১৮. মেজর জেনারেল (অব.) আবদুল মুনএম, ১৯৮৮-৮৯ অর্থবছর, ১৬ জুন ১৯৮৮
রাজস্ব আয় ৫,৫৬৯ কোটি টাকা, ব্যয় ৫,২৫০ কোটি টাকা, উদ্বৃত্ত ৩১৯ কোটি টাকা ও এডিপি ৫,৩১৫ কোটি।
এডিপির আকার ৫ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যায়, আবারও ২০ শতাংশ হারে আয়কর দিয়ে কালোটাকা সাদা করার সুযোগ রাখা হয়।
১৯. ওয়াহিদুল হক, ১৯৮৯-৯০ অর্থবছর, ১৫ জুন ১৯৮৯
রাজস্ব আয় ৭,১৮০.৫৩ কোটি টাকা, ব্যয় ৬,৯০০ কোটি টাকা, উদ্বৃত্ত ২৮০.৫৩ কোটি টাকা, এডিপি ৫,৮০৩.০২ কোটি টাকা।
অর্থমন্ত্রী বাজেট বক্তৃতায় বলেছিলেন, গত কয়েক বছরের অভিজ্ঞতা থেকে দেখা যায়, ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা ক্রমান্বয়ে দুর্বল হয়ে পড়েছে, আদায়যোগ্য ঋণের পরিমাণ বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং খেলাপি ঋণের অঙ্ক অসহনীয় পর্যায়ে উপনীত হয়েছে। এই পরিস্থিতি শিল্প ও কৃষি খাতে ঋণের ক্ষেত্রে বিরাজমান। ঋণ আদায়ের পরিমাণ পর্যাপ্ত না হলে আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পক্ষে নিজস্ব সম্পদ থেকে পুনরায় ঋণ দেওয়া অসম্ভব হয়ে পড়ে। অপর দিকে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও অর্থনীতির বিকাশের ফলে ঋণের প্রয়োজন ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পায়। ঋণ বিতরণ ও আদায়ের ক্ষেত্রে শৃঙ্খলার অবনতি একটি দুঃসহ অবস্থা সৃষ্টি করে। আপাতদৃষ্টে এ অবস্থার একটি সহজ পরিত্রাণ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মাধ্যমে অর্থলগ্নি প্রতিষ্ঠানের পুনঃঅর্থায়ন বৃদ্ধি। কিন্তু এর পরিণাম মুদ্রা সরবরাহ ও মূল্যস্ফীতি, ফলে অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ও বিকাশের গতিধারা বিপর্যস্ত ও বাধাগ্রস্ত হয়।
২০. মেজর জেনারেল (অব.) আবদুল মুনএম, ১৯৯০-৯১ অর্থবছর, ১৪ জুন ১৯৯০
রাজস্ব আয় ৭,৫৬২.৭৮ কোটি টাকা, রাজস্ব ব্যয় ৭,৩০০ কোটি টাকা, উদ্বৃত্ত ২৬২.৭৮ কোটি টাকা ও এডিপি ৫,৬৬৮ কোটি টাকা।
জাতীয়ভিত্তিক ন্যাশনাল ট্যাক্স পেয়ারস নম্বর বণ্টন শুরু হয়। সরকারি কর্মকর্তাদেরও প্রথমবারের মতো আয়করের আওতায় আনা হয়।
২১. মো. সাইফুর রহমান, ১৯৯১-৯২ অর্থবছর, ১২ জুন ১৯৯১
রাজস্ব আয় ৮,৫০৩.০৯ কোটি টাকা, ব্যয় ৮,০৮৩.২৫ কোটি টাকা, উদ্বৃত্ত ৪১০.৮৪ কোটি টাকা ও এডিপি ৭,৫০০ কোটি টাকা।
আবগারি শুল্ক অংশে জানানো হয় যে এর বিকল্প হিসেবে ১৯৯১ সালের ১ জুলাই থেকে মূল্য সংযোজন করব্যবস্থা প্রবর্তিত হবে।
২২. মো. সাইফুর রহমান, ১৯৯২-৯৩ অর্থবছর, ১৮ জুন ১৯৯২
রাজস্ব আয় ১০,৫৫৪ কোটি টাকা, ব্যয় ৮,৫৫০ কোটি টাকা, উদ্বৃত্ত ২,০০৪ কোটি টাকা, এডিপি ৮,৬৫০ কোটি টাকা।
কাঠামোগত সংস্কারের ওপর গুরুত্ব। বাণিজ্য উদার করার দিকেই ছিল বেশি মনোযোগ। নেওয়া হয় নমনীয় বিনিময় হার নীতি।
২৩. মো. সাইফুর রহমান, ১৯৯৩-৯৪ অর্থবছর, ১০ জুন ১৯৯৩
রাজস্ব আয় ১২,৩৩৫ কোটি টাকা, ব্যয় ৯,৩০০ কোটি টাকা, উদ্বৃত্ত ৩,০৩৫ কোটি টাকা ও এডিপি ৯,৭৫০ কোটি টাকা।
বাজেটকে ব্যাপক সংস্কার কর্মসূচির অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে উল্লেখ করা হয়, যার উদ্দেশ্য মধ্যম থেকে দীর্ঘমেয়াদি টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির স্থায়ী ভিত্তি রচনা।
২৪. মো. সাইফুর রহমান, ১৯৯৪-৯৫ অর্থবছর, ৯ জুন ১৯৯৪
রাজস্ব আয় ১৩,৬৩৭ কোটি টাকা, ব্যয় ৯,৯৪৮ কোটি টাকা, উদ্বৃত্ত ৩,৬৮৯ কোটি ও এডিপি ১১,০০০ কোটি টাকা।
যমুনা সেতুর জন্য আরোপিত সব সারচার্জ ও লেভি তুলে নেওয়া হয়। ১৯৮৫ সাল থেকে এই কর চালু হলেও আগের সরকার অর্থ অন্য খাতে ব্যয় করেছিল।
২৫. মো. সাইফুর রহমান, ১৯৯৫-৯৬ অর্থবছর, ১৫ জুন ১৯৯৫
রাজস্ব আয় ১৫,৪৫০ কোটি টাকা, ব্যয় ১১,০৭০ কোটি টাকা, উদ্বৃত্ত ৪,৩৮০ কোটি টাকা ও এডিপি ১২,১০০ কোটি টাকা।
সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতাকে প্রবৃদ্ধি অর্জনের চাবিকাঠি উল্লেখ করা হয়। কেননা, বিনিয়োগের পরিবেশ সৃষ্টি ও সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য এর গুরুত্ব অপরিসীম।
২৬. শাহ এ এম এস কিবরিয়া, ১৯৯৬-৯৭, ২৮ জুলাই ১৯৯৬
রাজস্ব আয় ১৭,১২০ কোটি টাকা, ব্যয় ১২,১০৩ কোটি টাকা, উদ্বৃত্ত ৫,০১৭ কোটি টাকা, এডিপি ১২,৫০০ কোটি টাকা।
বাজেটে পাঁচ বছরের মধ্যে ৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন এবং ১০ বছরের মধ্যে দারিদ্র্য বিমোচনের জাতীয় লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়।
২৭. শাহ এ এম এস কিবরিয়া, ১৯৯৭-৯৮, ১২ জুন ১৯৯৭
রাজস্ব আয় ১৯,৬২৪ কোটি টাকা, ব্যয় ১৪,৫৪৪ কোটি টাকা, উদ্বৃত্ত ৫,০৮০ কোটি টাকা ও এডিপি ১২,৮০০ কোটি।
দেশে প্রথমবারের মতো সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি চালু করা হয়, বয়স্ক ভাতা দিতে ৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ।
২৮. শাহ এ এম এস কিবরিয়া, ১৯৯৮-৯৯ অর্থবছর, ১১ জুন ১৯৯৮
রাজস্ব আয় ২০,৭৭৬ কোটি টাকা, ব্যয় ১৫,৯৩৭ কোটি টাকা, উদ্বৃত্ত ৪,৮৪৯ কোটি টাকা, এডিপি ১৩,৬০০ কোটি টাকা।
মোট ব্যয় ৩১,৫৭১ কোটি টাকা।
শিল্প খাতে ও শেয়ারবাজারে কালোটাকা বিনিয়োগের সুবিধা দেওয়া হয়। এ জন্য কর দিতে হয় সাড়ে ৭ শতাংশ।
২৯. শাহ এ এম এস কিবরিয়া, ১৯৯৯-২০০০ অর্থবছর, ১০ জুন ১৯৯৯
রাজস্ব আয় ২৪,১৫১ কোটি টাকা, ব্যয় ১৭,৮০০ কোটি টাকা, উদ্বৃত্ত ৬,৩৫১ কোটি টাকা, এডিপি ১৫,৫০০ কোটি টাকা।
মোট ব্যয় ৩৬,১৭৮ কোটি টাকা।
অভিনব কিছু উপায়ে কালোটাকা সাদা করার সুযোগ। বিলাসবহুল গাড়ি কিনে ৫ শতাংশ কর দিলেই কোনো প্রশ্ন নয়।
৩০. শাহ এ এম এস কিবরিয়া, ২০০০-০১ অর্থবছর, ৮ জুন ২০০০
রাজস্ব আয় ২৪,১৯৮ কোটি টাকা, ব্যয় ১৯,৬৩৩ কোটি টাকা, এডিপি ১৭,৫০০ কোটি টাকা।
মোট ব্যয় ৪১,০৫৯ কোটি টাকা।
সফটওয়্যার শিল্প, কৃষিপণ্য ও খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্পের জন্য ১০০ কোটি টাকার সমমূলধনি উন্নয়ন তহবিল গঠন, আবারও কালোটাকা সাদা করার সুযোগ দেওয়া হয়।
৩১. শাহ এ এম এস কিবরিয়া, ২০০১-০২ অর্থবছর, ৭ জুন ২০০১
রাজস্ব আয় ২৭,২৩৯ কোটি টাকা, ব্যয় ২২,০৩৮ কোটি টাকা, এডিপি ১৯,০০০ কোটি টাকা।
মোট ব্যয় ৪৩,৩৬৩ কোটি টাকা।
শুল্কায়নে প্রাক্-জাহাজীকরণ পরিদর্শন (পিএসআই) তিন বছরের জন্য বাধ্যতামূলক রাখা হয় এবং লাভ বা লোকসান যা-ই হোক, কর রিটার্ন বাধ্যতামূলক করা হয়।
৩২. মো. সাইফুর রহমান, ২০০২-০৩ অর্থবছর, ৬ জুন ২০০২
রাজস্ব আয় ৩৩,০৮৪ কোটি টাকা, ব্যয় ২৩,৯৭২ কোটি টাকা, এডিপি ১৯,২০০ কোটি টাকা।
মোট ব্যয় ৪৪,৮৫৪ কোটি টাকা।
আগের মেয়াদে কালোটাকা সাদা করা সুযোগকে ‘গণতান্ত্রিক ও গোষ্ঠীস্বার্থপ্রসূত বৈষম্যমূলক করনীতি’ বলা হলেও এবার শুরু থেকেই কালোটাকা সাদার সুযোগ দেওয়া হয়।
৩৩. মো. সাইফুর রহমান, ২০০৩-০৪ অর্থবছর, ১২ জুন ২০০৩
রাজস্ব আয় ৩৬,১৭১ কোটি টাকা, ব্যয় ২৮,৯৬৯ কোটি টাকা, এডিপি ২০,৩০০ কোটি টাকা।
মোট ব্যয় ৫১,৯৮০ কোটি টাকা।
কয়েকটি ক্ষেত্রে আয়কর রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক করা হয়। নির্বাচনে প্রার্থী হলে বা সরকারি দরপত্রে অংশ নিলে রিটার্ন দিতেই হবে।
৩৪. মো. সাইফুর রহমান, ২০০৪-০৫ অর্থবছর, ১০ জুন ২০০৪
রাজস্ব আয় ৪১,৩০০ কোটি টাকা, ব্যয় ৩৪,৫৬৫ কোটি টাকা ও এডিপি ২২,০০০ কোটি টাকা।
মোট ব্যয় ৫৭,২৪৮ কোটি টাকা।
টিআইএন থাকলেই যথাসময়ে রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক করা হয়। পাশাপাশি জীবনযাত্রার মান–সম্পর্কিত তথ্য দেওয়াও বাধ্যতামূলক করা হয়।
৩৫. মো. সাইফুর রহমান, ২০০৫-০৬ অর্থবছর, ৯ জুন ২০০৫
আয় ৪৫,৭২২ কোটি টাকা, ব্যয় ৩৫,৫২৩ কোটি টাকা, এডিপি ২৪,৫০০ কোটি টাকা।
মোট ব্যয় ৬৪,৩৮৩ কোটি টাকা।
কালোটাকা সাদা করার মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও তা আবার অব্যাহত রাখা হয়। এ জন্য দিতে হবে সাড়ে ৭ শতাংশ হারে কর।
৩৬. মো. সাইফুর রহমান, ২০০৬-০৭ অর্থবছর, ৮ জুন ২০০৬
রাজস্ব আয় ৫২, ৫৪২ কোটি টাকা, ব্যয় ৪২,২৮৬ কোটি টাকা ও এডিপি ২৬,০০০ কোটি টাকা।
মোট ব্যয় ৬৯,৭৪০ কোটি টাকা।
সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা অর্জনে ‘বিশৃঙ্খল অর্থনীতিকে সুশৃঙ্খল অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে’ সরকারের নেওয়া বিভিন্ন কর্মসূচির কথা উল্লেখ করা হয়।
৩৭. এ বি মির্জ্জা মো. আজিজুল ইসলাম, ২০০৭-০৮, ৭ জুন ২০০৭
রাজস্ব আয় ৫৭,৩০১ কোটি টাকা, ব্যয় ৫২,৯২৮ কোটি টাকা ও এডিপি ২৬,৫০০ কোটি টাকা।
মোট ব্যয় ৭৯,৬১৪ কোটি টাকা।
বাজেটে ভ্যাটের আওতা বাড়ানো হয়, করমুক্ত আয়ের সীমা বাড়িয়ে দেড় লাখ টাকা করা হয়। বাতিল করা হয় ৪ শতাংশ হারের অবকাঠামো উন্নয়ন সারচার্জ।
৩৮. এ বি মির্জ্জা মো. আজিজুল ইসলাম, ২০০৮-০৯ অর্থবছর, ৯ জুন ২০০৮
রাজস্ব আয় ৬৯,৩৮২ কোটি টাকা, রাজস্ব ব্যয় ৬০,৭৪৫ কোটি টাকা ও এডিপি ২৫,৬০০ কোটি টাকা।
মোট ব্যয় ৯৯,৯৬২ কোটি টাকা
স্থানীয় শিল্প সংরক্ষণে শুল্ককাঠামোয় পরিবর্তন আনা হয়, নতুন পদ্ধতির কর অবকাশসুবিধা দেওয়া হয়, কমানো হয় করপোরেট করহার।
৩৯. আবুল মাল আবদুল মুহিত, ২০০৯-২০ অর্থবছর, ১১ জুন ২০০৯
রাজস্ব আয় ৭৯,৪৬১ কোটি টাকা, ব্যয় ৬৯,৫০৪ কোটি টাকা ও এডিপি ৩০,৫০০ কোটি টাকা।
মোট ব্যয় ১,১৩,৮১৯ কোটি টাকা
১০ শতাংশ হারে কর দিয়ে পুঁজিবাজার, বেশ কিছু শিল্প ও ভৌত অবকাঠামো খাতে অপ্রদর্শিত আয় বিনিয়োগের সুযোগ এবং ফ্ল্যাট ক্রয় ও নিজের বাড়ি তৈরির ক্ষেত্রে আয়ের উৎস বিনা প্রশ্নে মেনে নেওয়ার কথা বলা হয়।
৪০. আবুল মাল আবদুল মুহিত, ২০১০-১১ অর্থবছর, ১০ জুন ২০১০
রাজস্ব আয় ৯২,৮৪৭ কোটি টাকা, ব্যয় ৭৫,২৩০ কোটি টাকা ও এডিপি ৩৮,৫০০ কোটি টাকা।
মোট ব্যয় ১,৩২,১৭০ কোটি টাকা।
বহুল আলোচিত সরকারি-বেসরকারি অংশীদারত্ব (পিপিপি) শুরু করা হয়। নতুন করে ৩ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ, সঞ্চয়পত্রের সুদের ওপরও কর বসানো হয়।
৪১. আবুল মাল আবদুল মুহিত, ২০১১-১২ অর্থবছর, ৯ জুন ২০১১
রাজস্ব আয় ১,১৮,৩৭৫ কোটি টাকা, ব্যয় ৮৭,৮৫১ কোটি টাকা ও এডিপি ৪৬,০০০ কোটি টাকা।
মোট ব্যয় ১,৬৩,৫৮৯ কোটি টাকা।
নতুন মূল্য সংযোজন কর (মূসক) ও আয়কর আইনের খসড়া অনুমোদন এবং সড়ক, সেতু, ইত্যাদি অবকাঠামোর ক্ষেত্রে কর অবকাশ সুবিধা ১০ বছর করার প্রস্তাব।
৪২. আবুল মাল আবদুল মুহিত, ২০১২-১৩ অর্থবছর, ৭ জুন ২০১২
রাজস্ব আয় ১,৩৯,৬৭০ কোটি টাকা, ব্যয় ৯৯,৪৯৬ কোটি টাকা, এডিপি ৫৫,০০০ কোটি টাকা।
মোট ব্যয় ১,৯১,৭৩৮ কোটি টাকা।
কথা বলার ওপর করারোপ। নতুন অর্থবছর থেকে মুঠোফোনের বিলের ওপর ২ শতাংশ হারে সারচার্য দেওয়ার প্রস্তাব।
৪৩. আবুল মাল আবদুল মুহিত, ২০১৩-১৪ অর্থবছর, ৬ জুন ২০১৩
রাজস্ব আয় ১,৬৭,৪৫৯ কোটি টাকা, ব্যয় ১,১৩,৪৭১ কোটি টাকা, এডিপি ৬৫,৮৭০ কোটি টাকা।
মোট ব্যয় ২,২২,৪৯১ কোটি টাকা।
করমুক্ত আয়ের সীমা ২ লাখ টাকা থেকে বৃদ্ধি করে ২ লাখ ২০ হাজার টাকায় উন্নীত, কর অবকাশ সুবিধাও দুই বছর বৃদ্ধি করা হয়।
৪৪. আবুল মাল আবদুল মুহিত, ২০১৪-১৫ অর্থবছর, ৫ জুন ২০১৪
রাজস্ব আয় ১,৮২,৯৫৪ কোটি টাকা, ব্যয় ১,২৮,২৩১ কোটি টাকা, এডিপি ৮০,৩১৫ কোটি টাকা।
মোট ব্যয়-২,৫০,৫০৬ কোটি টাকা।
৪৪ লাখ ২০ হাজার টাকার বেশি আয় থাকলে আয়কর দিতে হবে ৩০ শতাংশ, আগে ছিল ২৫ শতাংশ; ২৫ হাজার টাকার বেশি বাড়িভাড়া দিতে হবে ব্যাংকের মাধ্যমে।
৪৫. আবুল মাল আবদুল মুহিত, ২০১৫-১৬ অর্থবছর, ৪ জুন ২০১৫
রাজস্ব আয় ২,০৮,৪৪৩ কোটি টাকা, ব্যয় ১,৬৪,৫৭১ কোটি টাকা ও এডিপি ৯৭,০০০ কোটি টাকা।
মোট ব্যয় ২,৯৫,১০০ কোটি টাকা।
করমুক্ত আয়ের সীমা ৩০ হাজার টাকা বাড়িয়ে আড়াই লাখ টাকা, ধনীদের সারচার্জ দিতে হবে সোয়া দুই কোটি টাকার সম্পদ থাকলে, পোশাক খাতে ১ শতাংশ হারে উৎসে কর আরোপ হয়।
৪৬. আবুল মাল আবদুল মুহিত, ২০১৬-১৭ অর্থবছর, ২ জুন ২০১৬
রাজস্ব আয় ২,৪২,৭৫২ কোটি টাকা, ব্যয় ১,৮৮,৯৬৬ কোটি টাকা ও এডিপি ১,১০,০২৭ কোটি টাকা।
মোট ব্যয় ৩,৪০,৬০৫ কোটি টাকা।
আয়কর দাখিলের জন্য একটি অপরিবর্তনীয় সময়সীমা ঠিক করা হয় ৩০ অক্টোবর। এদিন কর দিবস পালনের সিদ্ধান্ত হয়।
৪৭. আবুল মাল আবদুল মুহিত, ২০১৭-১৮ অর্থবছর, ১ জুন ২০১৭
রাজস্ব আয় ২,৮৭,৯৯১ কোটি টাকা, ব্যয় ২,০৭,১৩৮ কোটি টাকা ও এডিপি ১,৫৩,৩৩১ কোটি টাকা।
মোট ব্যয় ৪,০০,২৬৬ কোটি টাকা।
নতুন মূল্য সংযোজন কর আইন দুই বছরের জন্য স্থগিত, এক লাখ টাকা পর্যন্ত ব্যাংক আমানতের ওপর আবগারি শুল্ক ছাড় বহাল রাখা হয়।
৪৮. আবুল মাল আবদুল মুহিত, ২০১৮-১৯ অর্থবছর, ৭ জুন ২০১৮
রাজস্ব আয় ৩,৩৯,২৮০ কোটি, ব্যয় ২,৫১,৬৬৮ কোটি টাকা ও এডিপি ১,৭৩,০০০ কোটি টাকা।
মোট ব্যয় ৪,৬৪,৫৭৩ কোটি টাকা।
ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের করপোরেট কর আড়াই শতাংশ কমিয়ে সাড়ে ৩৭ শতাংশে নির্ধারণ, দুটি গাড়ি ও ৮ হাজার বর্গফুট আয়তনের গৃহ-সম্পত্তি থাকলে সারচার্জ প্রযোজ্য।
৪৯. আ হ ম মুস্তফা কামাল, ২০১৯-২০ অর্থবছর, ১৩ জুন ২০১৯
রাজস্ব আয় ৩,৭৭,৮১০ কোটি টাকা, ব্যয় ২,৭৭,৯৩৪ কোটি টাকা, এডিপি ২,০২,৭২১ কোটি টাকা।
মোট ব্যয় ৫,২৩,১৯০ কোটি টাকা।
তরুণ উদ্যোক্তাদের জন্য স্টার্টআপ তহবিলে ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ, প্রবাসী আয়ে ২ শতাংশ হারে প্রণোদনা দিতে ৩ হাজার ২০ কোটি টাকা বরাদ্দ।
৫০. আ হ ম মুস্তফা কামাল, ২০২০-২১ অর্থবছর, ১১ জুন ২০২০
রাজস্ব আয় ৩,৭৮,০০০ কোটি টাকা, ব্যয় ৩,০২,৫৪৭ কোটি টাকা, এডিপি ২,০৫,১৪৫ কোটি টাকা।
মোট ব্যয় ৫,৬৮,০০০ কোটি টাকা।
করোনার প্রাদুর্ভাবের কারণে জরুরি স্বাস্থ্যসেবার পাশাপাশি কর্মসংস্থান টিকিয়ে রাখা ও অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে ১,০৩,১১৭ কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজের উল্লেখ করা হয়।
৫১. আ হ ম মুস্তফা কামাল, ২০২১-২২ অর্থবছর, ৩ জুন ২০২১
রাজস্ব আয় ৩,৮৯,০০০ কোটি টাকা, ব্যয় ৩,২৮,৮৪০ কোটি টাকা, এডিপি ২,২৫,৩২৪ কোটি টাকা।
মোট ব্যয় ৬,০৩,৬৮১ কোটি টাকা।
২ লাখ টাকার বেশি সঞ্চয়পত্র কিনলে টিআইএন বাধ্যতামূলক, বাড়ির নকশা অনুমোদন করতেও লাগবে টিআইএন, ন্যূনতম সারচার্জ প্রথার বিলোপ।
৫২. আ হ ম মুস্তফা কামাল, ২০২২-২৩ অর্থবছর, ৯ জুন ২০২২
রাজস্ব আয় ৪,৩৩,০০০ কোটি টাকা, ব্যয় ৪,৩১,৯৯৮ কোটি ও এডিপি ২,৪৬,০৬৬ কোটি টাকা।
মোট ব্যয় ৬,৭৮,০৬৪ কোটি টাকা।
ইতিহাসে প্রথম পাচার করা অর্থ বা সম্পদের ঘোষণা দিয়ে তা সাদা করার সুযোগ দেওয়া হয়। ঘোষণা অনুযায়ী, কেউ যদি বিদেশ থেকে অর্থ আনেন, তাহলে তাঁকে ৭ শতাংশ কর দিলেই হবে। আর বিদেশে অবস্থিত স্থাবর সম্পত্তি বাংলাদেশে না আনা হলে ওই সম্পদের মূল্যের ওপর ১৫ শতাংশ এবং বিদেশে অবস্থিত অস্থাবর সম্পত্তি বাংলাদেশে না আনা হলে এর ওপর ১০ শতাংশ হারে করারোপ হয়।