আইএমএফের ঋণের চতুর্থ কিস্তিতে ১১০ কোটি ডলার আসছে

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সঙ্গে চলমান ৪৭০ কোটি মার্কিন ডলারের ঋণ কর্মসূচি থেকে পরের, অর্থাৎ চতুর্থ কিস্তিতে ১১০ কোটি ডলার পাওয়ার আশা করছে বাংলাদেশ। আজ মঙ্গলবার আইএমএফের সফররত প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক করার পর অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, আগামী জুন মাস নাগাদ আইএমএফ ও বিশ্বব্যাংকসহ উন্নয়ন–সহযোগী সংস্থাগুলোর কাছ থেকে বাড়তি ৬০০ কোটি ডলার পাওয়া যাবে।

সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, আইএমএফের দলটি রাজস্ব আহরণ, বাজেট ঘাটতি ও ব্যাংক খাতের ঝুঁকিপূর্ণ সম্পদসহ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বাংলাদেশের বর্তমান ও ভবিষ্যৎ কৌশল সম্পর্কে জানতে চেয়েছে। এসব বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডসহ (এনবিআর) অন্যান্য দপ্তরের সঙ্গেও তারা আলাদা বৈঠক করবে। সবকিছু বিবেচনা করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে আইএমএফের নির্বাহী পর্ষদ।

অর্থ উপদেষ্টা আইএমএফকে কী বলেছেন, তা সাংবাদিকদের জানান। বলেন, ‘আমরা তাদের আশ্বস্ত করেছি যে এসব বিষয়ে বর্তমান সরকার যথাযথ পদক্ষেপ নিচ্ছে, যার সুফল পাওয়া যাবে ভবিষ্যতে।’

সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আমরা তাদের জানিয়েছি, অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা পুরোপুরি না হলেও অনেকটা ফিরে এসেছে। বর্তমানে মুদ্রা বিনিময় হার আগের মতো ওঠানামা করছে না। বেশ কয়েকটি ব্যাংকে কিছুটা তারল্য সহায়তা লাগলেও ভালোর দিকে ফিরে এসেছে বেসরকারি খাতের সবচেয়ে বড় ব্যাংক ইসলামী ব্যাংক।’

খারাপ অবস্থায় থাকা অন্য ব্যাংকগুলোর অবস্থাও ভালো হবে বলে আশাবাদী সালেহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, প্রবাসী আয়ের (রেমিট্যান্স) প্রবৃদ্ধি খুবই ভালো। রপ্তানিও কম নয়। যদিও মূলধনি যন্ত্রপাতিসহ সার্বিক আমদানি কিছুটা কম, তবে আগের চেয়ে বেড়েছে।

অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘আইএমএফের দলকে বলা হয়েছে, অন্তর্বর্তী সরকার এমন সব পদক্ষেপ নেবে, যা ভবিষ্যতের বাংলাদেশের জন্য মঙ্গলজনক হয়। সার্বিকভাবে ভেবেচিন্তে এমনভাবে কার্যক্রম নেওয়া হবে, যাতে সেগুলো আগামী সরকারও অব্যাহত রাখে। এসব বিষয়ে তারাও সম্মত হয়েছে। তারা যতগুলো লক্ষ্যমাত্রা দেবে, তার সবই বাস্তবায়ন করা যাবে কি না সেটা অন্য ব্যাপার। কিন্তু বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে তারা সহায়তা করবে বলে আমি আশা করি।’

সাংবাদিকেরা জানতে চান, চলমান ঋণ কর্মসূচির বাইরে ৩০০ কোটি ডলার ঋণ চাওয়ার বিষয়টির কী হলো। জবাবে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, সরকার ব্যাংকসহ রাজস্ব ও অন্যান্য খাতে যে সংস্কার করতে যাচ্ছে, সে জন্য আরও কিছু অর্থ দরকার হবে। পরের কিস্তি ছাড়ের পর আগামী মার্চে আবার পর্যালোচনা করতে আসবে। আলাপ-আলোচনার পর তা চূড়ান্ত হবে। বিশ্বব্যাংকের কাছেও অর্থ চাওয়া হয়েছে। সরকার আশা করছে, বিভিন্ন দাতা সংস্থার কাছে আগামী জুন নাগাদ বাড়তি ৬০০ কোটি ডলার পাওয়া যাবে।

এক প্রশ্নের জবাবে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, অর্থনীতি নিয়ে প্রকাশিত শ্বেতপত্র নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি।