গতকাল শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির দ্বিতীয় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় কমিটির প্রধান দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য সভাপতিত্ব করেন।
বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও অর্থনীতি নিয়ে শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির প্রধান দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেছেন, বিভিন্ন ধরনের বিদেশি ঋণচুক্তিগুলো পর্যালোচনা করা হবে। বিশেষ করে পর্যালোচনা করা হবে জ্বালানি খাতের চুক্তিগুলো, যদি তা লভ্য হয় (পাওয়া যায়)।
গতকাল মঙ্গলবার শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির দ্বিতীয় সভার পর সাংবাদিকদের এ কথাগুলো বলেন তিনি। ঢাকার শেরেবাংলা নগরের পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে কমিটির প্রধানের কার্যালয়ে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে কমিটির অন্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘আজকের (গতকাল) বৈঠকে আমরা কী কী বিষয়ে মনোযোগ দেব এবং সদস্যদের মধ্যে কারা কোন দায়িত্ব পালন করবেন, তা ঠিক করেছি। তথ্যের সঠিকতা, আন্তর্জাতিক মান যাচাই করা হবে এবং বিশ্লেষণ করা হবে।’ তিনি বলেন, ‘এই শ্বেতপত্র প্রণয়নে সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার সঙ্গে আলোচনা করা হবে। এ জন্য আমরা ঢাকার বাইরে যাব। এমনকি দেশের বাইরে থাকা সমাজবিজ্ঞানী, রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ও অর্থনীতিবিদদের সঙ্গে পরশু দিন সন্ধ্যায় (বৃহস্পতিবার) আলোচনা করা হবে।’
শ্বেতপত্রে সামষ্টিক অর্থনীতি নিয়ে যেমন আলোচনা হবে, তেমনি খাতওয়ারি আলোচনাও আসবে। যেসব খাতকে প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে, সেগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো অর্থনীতি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, জ্বালানি, ব্যাংকিং, কর আহরণ, অর্থ পাচার, মেগা প্রকল্প, দারিদ্র্য ও বৈষম্য।দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য, প্রধান, শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটি
দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য আরও বলেন, শ্বেতপত্রে সামষ্টিক অর্থনীতি নিয়ে যেমন আলোচনা হবে, তেমনি খাতওয়ারি আলোচনাও আসবে। যেসব খাতকে প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে, সেগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো অর্থনীতি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, জ্বালানি, ব্যাংকিং, কর আহরণ, অর্থ পাচার, মেগা প্রকল্প, দারিদ্র্য ও বৈষম্য। তিনি আরও জানান, তিন মাস সময়ের মধ্যে যদি কোনো খাতের প্রতিবেদন আগে তৈরি হয়ে যায়, তা অন্তর্বর্তীকালীন প্রতিবেদন হিসেবে প্রকাশ করা হবে।
দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক অবস্থা তুলে ধরতে বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও বেসরকারি গবেষণাপ্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মাননীয় ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে ১২ সদস্যের শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটি গঠন করে অন্তর্বর্তী সরকার। এ কমিটি ৯০ দিনের মধ্যে সুপারিশসহ প্রতিবেদন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার কাছে হস্তান্তর করবে।
শ্বেতপত্রে ছয়টি ক্ষেত্রে আলোকপাত করা হবে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো সরকারি আর্থিক ব্যবস্থাপনা। সেই সঙ্গে অভ্যন্তরীণ সম্পদ, সরকারি ব্যয় (সরকারি বিনিয়োগ, এডিপি, ভর্তুকি ও ঋণ) ঘাটতি বাজেট অর্থায়ন বিষয়াদি থাকবে।
গত ২১ আগস্ট দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যকে প্রধান করে শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটি গঠনের ঘোষণা দেয় প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়। শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির বাকি ১১ সদস্য হলেন বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন, বেসরকারি গবেষণাপ্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মাননীয় ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান, বেসরকারি গবেষণাপ্রতিষ্ঠান সানেমের নির্বাহী পরিচালক সেলিম রায়হান, ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক এ কে এনামুল হক, বিজনেস ইনিশিয়েটিভ লিডিং ডেভেলপমেন্টের (বিল্ড) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফেরদৌস আরা বেগম, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভর্ন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (বিআইজিডি) নির্বাহী পরিচালক ইমরান মতিন, বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণাপ্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) সিনিয়র রিসার্চ ফেলো কাজী ইকবাল, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) অধ্যাপক ম. তামিম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ আবু ইউসুফ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক শরমিন্দ নীলোর্মি ও বেসরকারি গবেষণাপ্রতিষ্ঠান রিফিউজি অ্যান্ড মাইগ্রেটরি মুভমেন্টস রিসার্চ ইউনিটের (রামরু) প্রতিষ্ঠাতা চেয়ার তাসনিম সিদ্দিকী।