বিগত কয়েক বছরের মূল্যস্ফীতি ও প্রবৃদ্ধির হিসাব খতিয়ে দেখা হবে

গত কয়েক বছরের মূল্যস্ফীতি ও জাতীয় আয়ের হিসাব-নিকাশ খতিয়ে দেখবে অর্থনীতি বিষয়ে গঠিত শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটি। এ তথ্য জানিয়েছেন শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির প্রধান দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। এ দুটি খাতের গভীরে গিয়ে দেখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানান বিশিষ্ট এই অর্থনীতিবিদ।

আজ মঙ্গলবার শ্বেতপত্র কমিটির সভা শেষে সাংবাদিকদের দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘জিডিপি, জাতীয় আয়, মূল্যস্ফীতি এবং এডিপি (বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি) প্রাক্কলন করা হয় এগুলোর বস্তুগত ভিত্তিতে, যা অত্যন্ত দুর্বল। এগুলো কীভাবে হয়, তা খতিয়ে দেখা হবে। যাঁরা প্রাক্কলন করেছেন, অসহায় ছিলেন। তাঁরা বাধ্য হয়েছেন। বৈঠকে তাঁদের অসহায়ত্ব প্রকাশ করেছেন। এ ছাড়া আমরা আলাদাভাবে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সঙ্গে বসব।’

রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে পরিকল্পনা কমিশনের নাজিয়া সালমা সম্মেলনকক্ষে সরকারি ২৪টি প্রতিষ্ঠান ও সংস্থার প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক হয় শ্বেতপত্র কমিটির। এই সংস্থাগুলো তথ্য-উপাত্ত, পরিসংখ্যান সংগ্রহ করে প্রক্রিয়াকরণ করে।

দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে আমরা কী ধরনের হালনাগাদ তথ্য-উপাত্ত আছে তা জানতে চেয়েছি। এ ছাড়া এমন কোনো তথ্য-উপাত্ত আছে কি না, যা তাঁরা আগে প্রকাশ করতে পারেননি, তা-ও জানতে চাওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘ওনাদের আমরা বুঝিয়েছি, ভয়ে বা চাপে এত দিন সঠিক তথ্য দিতে পারেননি, এখন সময় এসেছে, সে সুযোগ কাজে লাগান।’

বিশিষ্ট এই অর্থনীতিবিদ আরও বলেন, জ্বালানিসহ বিভিন্ন বিষয়ে যেসব চুক্তি হয়েছে, সেগুলোর মূল চুক্তির কাগজ চাওয়া হবে এবং খতিয়ে দেখা হবে।

এক প্রশ্নের জবাবে শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির প্রধান বলেন, ‘আমরা তথ্য-উপাত্ত পেয়েছি। লেখার কাজ কীভাবে শুরু হবে, সেটি নিয়ে পরবর্তী সভায় আলোচনা হবে। আমরা উন্মুক্ত তথ্য-উপাত্ত চেয়েছিলাম, তাতে ব্যাপক সাড়া পড়েছে। দ্রুত ঢাকার বাইরে বৈঠক করব। আমরা কী পেয়েছি, তার ভেতরের তথ্য এখন বলার সময় নয়, সময় এলে বলা হবে।’

দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক অবস্থা তুলে ধরতে বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও বেসরকারি গবেষণাপ্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মাননীয় ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে ১২ সদস্যের শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটি গঠন করে অন্তর্বর্তী সরকার।

শ্বেতপত্রে ছয়টি ক্ষেত্রে আলোকপাত করা হবে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে সরকারি আর্থিক ব্যবস্থাপনা, অভ্যন্তরীণ সম্পদ, সরকারি ব্যয় (সরকারি বিনিয়োগ, এডিপি, ভর্তুকি ও ঋণ) ঘাটতি বাজেট অর্থায়ন। এ ছাড়া মূল্যস্ফীতি ও খাদ্য ব্যবস্থাপনার মধ্যে থাকবে উৎপাদন, সরকারি কেনাকাটা ও খাদ্য বিতরণ এবং বাহ্যিক ভারসাম্যের মধ্যে থাকবে রপ্তানি, আমদানি, প্রবাসী আয়, সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই), বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ, বিদেশি অর্থায়নের প্রভাব ও ঋণ।

শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটি ৯০ দিনের মধ্যে সুপারিশসহ প্রতিবেদন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার কাছে হস্তান্তর করবে।