এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম
এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম

কালোটাকা দেশের বাইরে বেশি চলে যায়: এনবিআর চেয়ারম্যান

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম বলেছেন, কালোটাকা দেশের বাইরেই বেশি চলে যায় এবং তা বিভিন্ন ভোগবিলাসের কাজে ব্যয় হয়। দেশের অর্থনীতির কাজে কালোটাকা ব্যবহৃত হয় না।

আজ শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন এনবিআর চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, কথায় কথায় বলা হয়, কালোটাকাকে প্রশ্রয় দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু কালোটাকা যাঁরা তৈরি করেন, তাঁরা দেশের অভ্যন্তরের অর্থনীতিতে ব্যবহার করার জন্য করেন না। কালোটাকা মূলত দেশের বাইরেই বেশি চলে যায় এবং বিভিন্ন ভোগবিলাসের কাজে ব্যয় হয়ে থাকে। দেশের অর্থনীতির কাজে কালোটাকা ব্যবহৃত হয় না।

গতকাল বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাব উপস্থাপন করেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। রীতি অনুযায়ী বাজেট ঘোষণার পরদিন এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর নেতৃত্বে ১০ জন মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপদেষ্টা উপস্থিত ছিলেন।

গতকাল বাজেট প্রস্তাবে আগামী জুলাই মাস থেকে এক বছরের জন্য কালোটাকা সাদা করার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। নগদ টাকা ১৫ শতাংশ কর দিয়ে বিনা প্রশ্নে বৈধ বা সাদা করা যাবে। একইভাবে জমি, ফ্ল্যাট, অ্যাপার্টমেন্ট কিনেও এলাকা ভেদে নির্দিষ্ট হারে কর দিয়ে টাকা সাদা করা যাবে। একেক এলাকার জন্য বর্গমিটার অনুসারে নির্দিষ্ট কর দিতে হবে।

এ প্রসঙ্গে বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলনে একাধিক প্রশ্ন করেন সাংবাদিকেরা। এনবিআর চেয়ারম্যানকে এসব প্রশ্নের জবাব দেওয়ার সুযোগ দেন অর্থমন্ত্রী। তখন এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম বলেন, ‘বাজেটে প্রস্তাব আনার পর একটা কথা আসছে যে কালোটাকা সাদা করার জন্য এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে আমরা এভাবে দেখছি না।’

বাজেট–উত্তর সংবাদ সম্মেলনে বক্তৃতা দেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী

এনবিআরের চেয়ারম্যান জানান, বিভিন্ন কারণে অপ্রদর্শিত কিছু সম্পদ থাকতে পারে। অসতর্কতার জন্য, অজ্ঞতার কারণে অথবা অন্যের মাধ্যমে আয়কর রিটার্ন দেওয়ার কারণে অনেকের সম্পদের তথ্য অপ্রদর্শিত থেকে যায়। এ ধরনের অপ্রদর্শিত অর্থ দেখানো নিয়ে সমস্যায় পড়েছেন বলে দেশের বিভিন্ন ব্যবসায়ীর কাছ থেকে আবেদন এসেছে। এসব ব্যবসায়ী অপ্রদর্শিত সম্পদ দেখাতে চান, তবে এসব সম্পদের উৎসের জবাব তাঁরা দিতে পারছেন না।

আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম বলেন, ‘আমাদের কাছে তথ্য ছিল যে সম্পদ প্রদর্শনের ক্ষেত্রে বেশ কিছু জায়গায় বৈধ আয় নিয়ে ব্যবসায়ীরা বেকায়দায় আছেন। এ কারণে আমরা এ প্রস্তাব দিয়েছি।’

সংবাদ সম্মেলনে এনবিআর চেয়ারম্যান আরও বলেন, ‘আরও একটি বিষয় আছে যা আপনারা সবাই স্বীকার করবেন। সেটা হলো, জমি ক্রয়-বিক্রয়ের ক্ষেত্রে কিছু টাকা আমাদের অজ্ঞাতেই কালো হয়ে যায় বা অপ্রদর্শিত হয়ে যায়। অপ্রিয় হলেও সত্য যে এখান থেকে আমরা এখনো মুক্তি পাইনি। এ ধরনের কিছু অনিবার্য কারণে যাঁরা সম্পদ দেখাতে পারেননি, সে সম্পদ দেখানোর জন্য আমরা সুযোগ দিয়েছি। পৃথিবীর অনেক দেশেই এমন সুযোগ দেওয়া হয়।’