বিশ্বব্যাংকের সহযোগী সংস্থা আইএফসি ও নরওয়ের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাম্প্রতিক এক সমীক্ষায় উঠে এসেছে, দেশের ক্ষুদ্র ও মাঝারি (এসএমই) প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৬০ ভাগের বেশি নারী উদ্যোক্তা প্রয়োজনীয় আর্থিক সেবা পাচ্ছেন না। বর্তমানে দেশের এসএমই প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে নারীর উদ্যোগের হার মাত্র ৬ দশমিক ২৩ শতাংশ। ফলে এসএমই খাতের প্রবৃদ্ধি ও নারী উদ্যোগকে এগিয়ে নিতে সহজ শর্তে অর্থায়ন বৃদ্ধির বিকল্প নেই। তাই আমি নতুন বাজেটে এ বিষয়ে বিশেষ ঘোষণা আশা করছি।
করোনা মহামারির পর ৯১ শতাংশ এসএমই প্রতিষ্ঠান নগদ অর্থপ্রবাহের সংকটে ছিল। তখন তারল্যসংকটের কারণে ৪৩ শতাংশ এসএমই তিন মাসের বেশি ব্যবসায় টিকে থাকতে পারেনি। আর ৪১ শতাংশ নারী মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান তখন বন্ধ হয়ে যায়। তাই নারী উদ্যোক্তাদের জন্য অর্থায়ন বৃদ্ধি ও ঋণ প্রদানে উদ্ভাবনী চিন্তাভাবনা গ্রহণ করা না হলে বিদ্যমান ঝুঁকির কোনো উন্নতি হবে না।
দেশের ব্যাংকগুলোর সিএমএসএমই ঋণ বিতরণের ব্যবস্থাপনায় গুণগত কোনো পরিবর্তন আসেনি। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো এখনো স্থায়ী জামানতের মধ্যেই আটকে আছে। অন্যদিকে বেসরকারি সংস্থার ঋণের সুদ ২৫-৩০ শতাংশ। ফলে বাধ্য হয়ে অনেক উদ্যোক্তাকে চড়া সুদে ঋণ নিতে হচ্ছে।
২০২৩ সালের অক্টোবরে সংসদে সিকিউরড ট্রানজেকশন রেজিস্ট্রি বা এসআরটি বিল পাস হয়, যেখানে অস্থাবর সম্পত্তিকে জামানত হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। এই বিল বাস্তবায়ন করা জরুরি। পাশাপাশি কোনো ব্যবসার ক্যাশ ফ্লো বা নগদ প্রবাহকেও জামানত হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার নীতি গ্রহণের বিষয়টি বিবেচনা করা যায়। এ বিষয়ে বাজেটে ঘোষণা থাকতে পারে।
উদ্যোক্তাদের জন্য, বিশেষ করে নারীদের জন্য এখন ডিজিটাল বিপণনের প্রশিক্ষণ নেওয়া আবশ্যক হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু প্রশিক্ষণ কর্মসূচিগুলো এখন গতানুগতিক সনদ প্রদানের কর্মসূচিতে পরিণত হয়েছে। এ ক্ষেত্রে কাঠামোগত ও অর্থ বরাদ্দের ঘাটতি রয়েছে। তাই বাজেটে আধুনিক প্রশিক্ষণের জন্য আলাদা বরাদ্দ রাখা প্রয়োজন।
তাহমীনা খান, সিইও,
শৈলী ক্রিয়েটিভ স্টুডিও