বাজারদর

তেতে উঠেছে মসলার বাজার 

আমদানি ঋণপত্র কম খোলার প্রভাবে বাজারে আদা-রসুনের সরবরাহ কম। অন্যান্য মসলায়ও টান।

মাঘের মাঝামাঝি বাজারে নতুন রসুন আসতে শুরু করে। মৌসুম শুরুর আগেই তাতিয়ে উঠেছে রসুনের বাজার। এক মাসের ব্যবধানে দেশি রসুন ৬০ শতাংশ ও আমদানি করা রসুনের দাম ২৭ শতাংশের বেশি বেড়েছে।

বেড়েছে আদার দামও। আমদানি ঋণপত্র কম খোলার প্রভাবে বাজারে আদা-রসুনের সরবরাহ কম। তাতে দেশি ও আমদানি করা রসুনের দাম বেড়েছে। জিরা, দারুচিনি, লবঙ্গ, ধনে ও তেজপাতার দামও বেড়েছে।

সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) গতকাল বৃহস্পতিবারের বাজারদরের তালিকার তথ্যমতে, দেশি ও আমদানি করা আদার দাম বেড়েছে যথাক্রমে ৩০ ও ৫৪ শতাংশ।

টিসিবির হিসাবে বাজারে এখন দেশি রসুনের দাম প্রতি কেজি ১০০ থেকে ১৪০ টাকা এবং আমদানি করা রসুনের দাম ১২০ থেকে ১৬০ টাকা। এক মাস আগে দেশি রসুনের কেজি ছিল ৭০ থেকে ৮০ টাকা। আর আমদানি করা রসুনের দাম ছিল ১০০ থেকে ১২০ টাকা। এদিকে দেশি আদার দাম এক মাস আগের তুলনায় ৫০ টাকা বেড়ে প্রতি কেজি সর্বোচ্চ ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর আমদানি করা আদা ১৪০ টাকা বেড়ে সর্বোচ্চ ৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

শ্যামবাজারের রাজবাড়ী ভান্ডারের স্বত্বাধিকারী আবদুল মাজেদ গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, ঋণপত্র খুলতে না পারার জটিলতার কারণে আমদানি কম হচ্ছে। তাতে মসলাজাতীয় পণ্যের বাজারের ওপর প্রভাব পড়েছে। ব্যাংকগুলো যাতে এসব পণ্যের ঋণপত্র খোলা নিয়মিত চালু রাখে, সরকারের কাছে সেই দাবি জানান এই ব্যবসায়ী।

টিসিবির হিসেবে গত এক মাসে বাজারে জিরার দাম ১৭ শতাংশ বেড়ে এখন ৬০০ থেকে ৬৫০ টাকা প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে। অন্যান্য মসলার মধ্যে লবঙ্গ ১০ শতাংশ, তেজপাতা ১৯ শতাংশ, ধনে ৪ শতাংশ ও দারুচিনির ১ শতাংশ দাম বেড়েছে। তবে টিসিবির হিসাবের চেয়ে বাজারের প্রকৃত দাম আরও বেশি। যেমন গতকাল মহাখালী বাজারের প্রতি কেজি জিরা বিক্রি হয়েছে ৭০০ থেকে ৮০০ টাকায়; যা টিসিবির দেখানো সর্বোচ্চ দাম থেকে আরও ১০০ টাকা বেশি।

গতকাল মহাখালী বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ভরা মৌসুমে সবজির দামের উত্তাপ এখনো কমেনি। বেগুন, শিম, টমেটোর মতো শীতকালীন সবজির দাম পড়ছে প্রতি কেজি ৫০ থেকে ৭০ টাকার মধ্যে। প্রতিটি লাউয়ের দাম পড়ছে ৭০ থেকে ১০০ টাকা। তবে ফুলকপি ও বাঁধাকপির দাম অবশ্য কিছুটা নেমেছে। প্রতিটি ৩০ থেকে ৪০ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে।

 এদিকে চালের বাজারে বড় কোনো সুখবর নেই। মোটা চাল প্রতি কেজি ৫০ টাকার আশপাশে বিক্রি হচ্ছে। বিআর২৮ বিক্রি হচ্ছে কেজি ৬০ টাকার মধ্যে। মিনিকেটের দাম প্রতি কেজি ৬৮ থেকে ৭৫ টাকা। নাজিরশাইলের দাম প্রতি কেজি ৭৫ থেকে ৮৫ টাকা।

 ডিম-মুরগির দাম আরেকটু বেড়েছে। প্রতি ডজন ডিমের দাম রাখা হচ্ছে ১২০ থেকে ১২৫ টাকা। গত সপ্তাহের চেয়ে ডজনে ৫ টাকা বেড়েছে। প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগির দাম পড়ছে ১৬০ টাকার ওপরে। ২৭০ থেকে ২৮০ টাকা কেজি কিনতে হচ্ছে সোনালি মুরগি। প্রতি কেজি গরুর মাংসের দাম ৬৮০ থেকে ৭০০ টাকা। তেলাপিয়া ও পাঙাশ মাছের কেজি আগের মতোই—২০০ টাকার মধ্যে।