দেশে ব্যবসায় বড় বাধা দুর্নীতি। তার সঙ্গে বড় দুশ্চিন্তা হয়ে দাঁড়িয়েছে অপর্যাপ্ত অবকাঠামো, ঋণপ্রাপ্তির অপর্যাপ্ততা ও অদক্ষ প্রশাসন। এসব সমস্যার সঙ্গে সাম্প্রতিককালের উচ্চ মূল্যস্ফীতি, বৈদেশিক মুদ্রার সংকট ও অস্থায়ী নীতি ব্যবসার পরিবেশকে আরও জটিল করে তুলেছে।
বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বাংলাদেশ ব্যবসায় পরিবেশ ২০২২: উদ্যোক্তা জরিপে এমন তথ্যই উঠে এসেছে। জরিপে উঠে এসেছে, ২০২১ সালের তুলনায় ২০২২ সালে ব্যবসার পরিবেশের অবনতি হয়েছে।
আজ রোববার রাজধানীর ধানমন্ডিতে সিপিডির কার্যালয়ে মিডিয়া ব্রিফিংয়ে জরিপের তথ্য তুলে ধরেন সংস্থাটির গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন।
ঢাকা, চট্টগ্রাম, নারায়ণগঞ্জ ও গাজীপুরের কৃষি, উৎপাদন ও সেবা খাতে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ৭৪ জন পদস্থ কর্মকর্তা গত বছরের এপ্রিল থেকে জুলাইয়ে করা এ মতামত জরিপে অংশ নেন। সেই হিসাবে এটি জাতীয় প্রতিনিধিত্বশীল জরিপ নয়।
জরিপের অংশ নেওয়া দুই-তৃতীয়াংশ বা ৪৭ দশমিক ৮ শতাংশ কর্মকর্তা দুর্নীতিকে ব্যবসার বড় বাধা হিসেবে উল্লেখ করেন। কোন কোন জায়গায় দুর্নীতি হচ্ছে, সেটিও জরিপে উঠে এসেছে। ৬৪ শতাংশ কর্মকর্তা কর প্রদানে, ৫৪ শতাংশ ব্যবসায়িক লাইসেন্স নিতে, ৪৯ শতাংশ গ্যাস-বিদ্যুৎ-পানির সংযোগ নিতে এবং ৭৫ শতাংশ কর্মকর্তা আমদানি-রপ্তানিতে দুর্নীতির কথা বলেছেন।
এ ছাড়া ৪৪ দশমিক ৬ শতাংশ দুর্নীতির পাশাপাশি ব্যবসার জন্য দুর্বল অবকাঠামো, ৪৩ দশমিক ১ শতাংশ ব্যাংকঋণের অপর্যাপ্ততা ও অদক্ষ প্রশাসন, ৩৮ দশমিক ৫ শতাংশ মূল্যস্ফীতি ও বৈদেশিক মুদ্রার অস্থিরতা, ৩৫ দশমিক ৪ শতাংশ নীতি ধারাবাহিকতার অভাব, ২৬ দশমিক ২ শতাংশ জটিল করব্যবস্থা ও উচ্চ করহার, ১৬ দশমিক ৯ শতাংশ দুর্বল নীতি-নৈতিকতা ও সরকারে স্থিতিশীলতার অভাব, ১৫ দশমিক ৪ শতাংশ অপরাধ ও উদ্ভাবনে অপর্যাপ্ত সক্ষমতা এবং ১০ দশমিক ৮ শতাংশ কর্মকর্তা শ্রমসংক্রান্ত নিয়মনীতির সীমাবদ্ধতাকে সমস্যা হিসেবে উল্লেখ করেন।
জরিপের ফলাফল প্রকাশ অনুষ্ঠানে ফাহমিদা খাতুন বলেন, দুর্নীতির কারণে পণ্যের উৎপাদন খরচ বাড়ছে। সেবার মূল্যও বাড়ছে। এই বাড়তি মূল্যের ঘানি সাধারণ মানুষকেই টানতে হয়। নানা স্তরের দুর্নীতি ব্যবসার পরিবেশ ও অর্থনীতিকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে।