গুলশানের একটি হোটেলে গবেষণা প্রতিবেদনটির প্রকাশনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিকবিষয়ক বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী
গুলশানের একটি হোটেলে গবেষণা প্রতিবেদনটির প্রকাশনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিকবিষয়ক বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী

যুক্তরাজ্যে পোশাক, ওষুধ ও জুতা রপ্তানি বাড়ানোর সুযোগ আছে

যুক্তরাজ্য ২০২২ সালে ১ হাজার ৪১০ কোটি মার্কিন ডলার মূল্যের নিট পোশাক আমদানি করে। এর মধ্যে বাংলাদেশের বাজার হিস্যা ছিল প্রায় ২০ শতাংশ বা ২৮১ কোটি ডলার। সর্বশেষ ২০২৩-২৪ অর্থবছরে দেশটি ১ হাজার ১৩০ কোটি ডলারের ওভেন পোশাক আমদানি করেছে। এর মধ্যে বাংলাদেশের রপ্তানির পরিমাণ ১৭০ কোটি ডলার। অর্থাৎ যুক্তরাজ্যে নিট ও ওভেন পোশাক রপ্তানি আরও বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে বাংলাদেশের।

দ্য হংকং অ্যান্ড সাংহাই ব্যাংকিং করপোরেশন (এইচএসবিসি) বাংলাদেশের এক গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে। এইচএসবিসির পৃষ্ঠপোষকতায় আর্নস্ট অ্যান্ড ইয়াং এবং কে এশিয়া যুক্তরাজ্য-বাংলাদেশের বাজারভিত্তিক এই গবেষণা করেছে। গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাজ্যে উচ্চমূল্যের পোশাক, ওষুধ, কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্য, চামড়া পণ্য ও জুতা এবং হোম টেক্সটাইলের রপ্তানি বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে। অন্যদিকে যুক্তরাজ্য থেকে বাংলাদেশে যন্ত্রপাতি, তথ্যপ্রযুক্তি সেবা ও সফটওয়্যার, নবায়নযোগ্য জ্বালানি প্রযুক্তি, স্বাস্থ্যসেবা এবং শিক্ষা খাতে বিনিয়োগের সুযোগ আছে।

গবেষণা প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত অর্থবছরে ৬১২ কোটি ডলারের জুতা আমদানি করে যুক্তরাজ্য। এর মধ্যে চীন থেকেই নিয়েছে ২০০ কোটি ডলারের জুতা। এর আগের ২০২২-২৩ অর্থবছরে বাংলাদেশ থেকে ১১৮ কোটি ডলারের জুতা রপ্তানি হয়। বাংলাদেশ থেকে সবচেয়ে বেশি জুতা রপ্তানি হয় যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, জার্মানি, নেদারল্যান্ডস ও জাপানে। যুক্তরাজ্যেও জুতা রপ্তানির বড় সুযোগ আছে।

অন্যদিকে যুক্তরাজ্য ২০২২–২৩ সালে ৩১৪ কোটি ডলারের হোম টেক্সটাইল পণ্য আমদানি করে। সেবার চীন থেকেই নেয় ১২৩ কোটি ডলারের হোম টেক্সটাইল পণ্য। যুক্তরাজ্যে হোম টেক্সটাইল পণ্য রপ্তানিতে অন্য বড় নামগুলো হচ্ছে পাকিস্তান, ভারত, জার্মানি ও তুরস্ক। বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাজ্যে ২০২২-২৩ অর্থবছরে ১২১ কোটি ডলারের হোম টেক্সটাইল পণ্য রপ্তানি হয়। যদিও বাংলাদেশের টেক্সটাইল পণ্যের শীর্ষ পাঁচ গন্তব্যের মধ্যে যুক্তরাজ্য নেই।

গত বুধবার রাতে ঢাকার গুলশানের একটি হোটেলে গবেষণা প্রতিবেদনটির প্রকাশনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিকবিষয়ক বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক, ব্রিটিশ হাইকমিশনের বাণিজ্য ও বিনিয়োগ পরিচালক ড্যান পাশা, এইচএসবিসি বাংলাদেশের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মো. মাহবুব উর রহমান প্রমুখ।

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী বলেন, ‘বাংলাদেশ বিনিয়োগের উপযোগী পরিবেশ গড়ে তোলার লক্ষ্যে সংস্কারের পথে রয়েছে। যারা বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে এবং পণ্য রপ্তানিতে আগ্রহী আমাদের সরকার সব সময় তাদের পাশে থাকবে।’

যুক্তরাজ্যের হাইকমিশনার সারাহ কুক বলেন, ‘বাংলাদেশ এলডিসি থেকে উত্তরণের পথে এগোচ্ছে। এ সময় কৌশলগত সুযোগগুলো কাজে লাগানো গুরুত্বপূর্ণ। যুক্তরাজ্যের ডেভেলপিং কান্ট্রিস ট্রেডিং স্কিম (ডিসিটিএস) বাংলাদেশের জন্য সে দেশের বাজারে প্রবেশাধিকার ধরে রাখতে সহায়ক হবে। একই সঙ্গে এটি ইলেকট্রনিকস, ওষুধ, চামড়াজাত পণ্য ও কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্যের মতো উচ্চমূল্যের শিল্পগুলোর বিকাশকে উৎসাহিত করবে।’