ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে নিজেদের আয়কর রিটার্ন দেওয়ার সনদ ঝুলিয়ে না রাখলে সর্বনিম্ন ২০ হাজার থেকে সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করতে পারবেন কর কর্মকর্তারা। বাজেটে এমন প্রস্তাব দিতে পারেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী।
আজ বৃহস্পতিবার অর্থমন্ত্রী জাতীয় সংসদে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট দেবেন। সেখানে এই প্রস্তাব করা হতে পারে।
বর্তমানে সারা দেশে আড়াই লাখের বেশি প্রতিষ্ঠানের কর শনাক্তকরণ নম্বর (টিআইএন) আছে। তাদের প্রতিবছর রিটার্ন দেওয়ার কথা। কিন্তু বছরে গড়ে ৫০ হাজারের মতো কোম্পানি রিটার্ন দেয়।
আবার প্রতিটি কোম্পানি নিজেদের আর্থিক প্রতিবেদন দ্য ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস অব বাংলাদেশের (আইসিএবি) ডকুমেন্ট ভেরিফিকেশন সিস্টেমে (ডিভিএস) জমা দেয়। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কর্মকর্তারা কোম্পানির দেওয়া রিটার্নের তথ্যের সঙ্গে যাচাই করতে ডিভিএসে প্রবেশ করতে পারেন। অনেক ক্ষেত্রে কোম্পানির কিছু অপ্রদর্শিত আয় ও পরিসম্পদ প্রদর্শনে জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে বলে জানা গেছে। এমন ক্ষেত্রে কোম্পানিগুলোর নিজেদের এই অপ্রদর্শিত অর্থ ১৫ শতাংশ কর দিয়ে বৈধ করার ঘোষণা আসতে পারে বাজেটে। পাশাপাশি কোম্পানির অপ্রদর্শিত সম্পদ নির্দিষ্ট হারে কর দিয়েও বৈধ করার সুযোগ দিতে পারেন অর্থমন্ত্রী।
রেস্তোরাঁমালিকেরা আয়কর রিটার্ন জমা না দিলে তাঁদের ব্যবসার লাইসেন্স নবায়ন করা হবে না, এমন ঘোষণাও আসতে পারে বাজেটে। এর মানে, রেস্তোরাঁর লাইসেন্স গ্রহণ ও নবায়নকালে ওই প্রতিষ্ঠানের মালিকের রিটার্ন জমার অনুলিপি লাগবে।
বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির তথ্যমতে, দেশে বর্তমানে সাড়ে চার লাখের মতো ছোট-বড় রেস্তোরাঁ আছে।
এদিকে বর্তমানে ৩০ নভেম্বর কর দিবস পালিত হয়। ১ জুলাই থেকে ৩০ নভেম্বরের মধ্যে ব্যক্তিশ্রেণির রিটার্ন জমা দিতে হয়। প্রায়ই নানা কারণ দেখিয়ে একাধিক দফায় দুই-তিন মাস সময় বাড়ায় এনবিআর। অর্থমন্ত্রী এবার এনবিআরের এই ক্ষমতা কমিয়ে দিতে পারেন। প্রস্তাব আসতে পারে, ব্যক্তিশ্রেণির করদাতাদের রিটার্ন জমার জন্য এনবিআর সর্বোচ্চ এক মাস সময় বাড়াতে পারবে।
এ ছাড়া এনবিআর সূত্রে জানা গেছে, মিষ্টি পানীয় (সুইটেনড বেভারেজ) উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের মোট আয়ের ওপর ৩ শতাংশ হারে টার্নওভার কর বসানোর প্রস্তাব আসতে পারে নতুন অর্থবছরের বাজেটে। বর্তমানে এ ধরনের প্রতিষ্ঠানের ওপর দশমিক ৬ শতাংশ হারে কর বসে। মূলত জনস্বার্থের জন্য ক্ষতিকর খাতে করভার আরোপ এবং পরোক্ষভাবে উদ্ভূত স্বাস্থ্য ব্যয় হ্রাস করার জন্য অর্থমন্ত্রী এই প্রস্তাব করতে পারেন বলে জানা গেছে।
এদিকে যেকোনো ধরনের ট্রাস্টের লেনদেন বা টার্নওভারের ওপর ৩ শতাংশ কর বসানোর প্রস্তাব করতে পারেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী।