সয়াবিন তেলের দামে অস্থিরতা কাটছে না। কয়েক দফা দাম বাড়ার পর এবার কমল লিটারে ৪ টাকা। তাতে বোতলজাত এক লিটার সয়াবিন তেল কিনতে লাগবে ১৪৯ টাকা। খোলা কিনলে দাম পড়বে ১২৫ টাকা। নতুন দাম আগামীকাল বৃহস্পতিবার থেকে সারা দেশে কার্যকর হবে।
এর আগে গত ২৭ মে সয়াবিন তেলের দাম এক লাফে ৯ টাকা বাড়ানো হয়েছিল। তাতে বোতলজাত এক লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম ১৪৪ টাকা থেকে বেড়ে ১৫৩ টাকা হয়। সেই হিসাবে কাল থেকে দাম লিটারে ৪ টাকা কমলেও গত মাসের চেয়ে বেশি দামেই কিনতে হবে ভোক্তাদের।
ভোজ্যতেল পরিশোধন ও বিপণনকারীদের সংগঠন বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন সয়াবিন তেলের দাম ৪ টাকা কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সংগঠনের সচিব মো. নূরুল ইসলাম মোল্লার স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আজ বুধবার বিষয়টি জানানো হয়।
এদিকে লিটারে ৪ টাকা কমানোর ঘোষণা দেওয়া হলেও ৫ লিটারের এক বোতল সয়াবিন তেলের দাম কমছে ১৬ টাকা। ৭২৮ টাকার পরিবর্তে বর্তমানে কেনা যাবে ৭১২ টাকায়। অন্যদিকে, প্রতি লিটার খোলা পাম অয়েলের দাম ১১২ টাকা থেকে কমে ১০৮ টাকা হচ্ছে।
ভোজ্যতেলের দাম কমানোর বিষয়ে সংগঠনটি জানিয়েছে, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে পবিত্র ঈদুল আজহা, করোনাভাইরাস পরিস্থিতি ও ভোক্তার ক্রয়ক্ষমতা বিবেচনা করে সয়াবিন, পাম ও অন্যান্য ভোজ্যতেলের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে।
বর্তমানে বাজারে সয়াবিন তেলের দাম নয় বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। তাঁরা জানান, গত এক দশকের মধ্যে ভোজ্যতেলের সর্বোচ্চ দাম ছিল ২০১২ সালের মাঝামাঝি। ওই বছর বোতলজাত সয়াবিনের দাম লিটারপ্রতি ১৩৫ টাকায় বিক্রি হয়েছিল।
ভোজ্যতেলের দাম বাড়ার জন্য আন্তর্জাতিক বাজারকে দায়ী করছেন ব্যবসায়ীরা। তাঁদের দাবি, দেশের সয়াবিনের উৎস ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা ও প্যারাগুয়েতে প্রতি টন অপরিশোধিত সয়াবিনের দাম ১ হাজার ৩০০ মার্কিন ডলার ছাড়িয়েছে। এর আগে ২০১২ সালে সর্বোচ্চ ১ হাজার ৩০০ ডলারে উঠেছিল। এবার দাম বাড়ার কারণ চীনের আগ্রাসী কেনা এবং সরবরাহে টান।
ভোজ্যতেলের দাম কমাতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় কর ছাড়ের অনুরোধ জানিয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) চিঠি দিয়েছিল। তবে সরকার অগ্রিম মূল্য সংযোজন কর (মূসক/ভ্যাট) আদায় থেকে অব্যাহতি দেয়। ব্যবসায়ীরা বলছেন, এতে দামে প্রভাব পড়ার সুযোগ কম। পার্থক্য এটুকুই যে এখন ভ্যাট পরে দিতে হচ্ছে, আগে অগ্রিম নেওয়া হতো। কোম্পানিগুলো ভ্যাট ছাড়ের দাবি করে বলছে, এখন এক লিটার তেলে ভ্যাট ২০ টাকার মতো। পাঁচ লিটারে তা ১০০ টাকা দাঁড়ায়। বিশ্ববাজারে দাম যত বাড়ে, সরকারের করের পরিমাণও বাড়ে।