সরকারি পরিসংখ্যানে কোভিডের মধ্যেও বাংলাদেশের মানুষের মাথাপিছু আয় বেড়েছে। অথচ সব ধরনের জরিপেই আছে আয় কমার চিত্র। তাহলে মাথাপিছু আয় কার বেড়েছে? প্রশ্নটা এখানেই।
২০২১ সালের ২৩ মে সকালে উঠে বাংলাদেশ একটা ‘দারুণ’ সংবাদ শুনল। বাংলাদেশ মাথাপিছু আয়ে ভারতকে ছাড়িয়ে গেছে। গত বছর আমাদের মাথাপিছু আয় ছিল ২০৬৪ ডলার। এখন হয়েছে ২ হাজার ২২৭ ডলার। আর এদিকে ভারতের মাথাপিছু আয় মাত্র ১ হাজার ৯৪৭ ডলার। কী আনন্দ!
পরদিন দেশের শীর্ষস্থানীয় পত্রিকাগুলোতে কেউ লিখেছে, বাংলাদেশ ভারত থেকে এগিয়ে গেল। কেউ লিখেছে, ভারত বাংলাদেশ থেকে পিছিয়ে পড়ল। তো এই ‘এগিয়ে যাওয়া’ বা এই ‘পিছিয়ে পড়া’র আসলেও কোনো আগামাথা আছে কি না, তা নিয়ে খুব বেশি কাউকে চিন্তিত মনে হলো না।
এর ঠিক দুই দিন পর পাকিস্তানের বিশ্বব্যাংক পরামর্শক আবিদ হাসান লিখলেন: ২০৩০ সালের মধ্যে পাকিস্তানকে হয়তো বাংলাদেশ থেকে সাহায্য নিতে হবে। যদিও পাকিস্তান সরকারকে লজ্জা দিতেই এমনটি লেখা হয়েছে, তবে এই খবরে আমাদের জাতীয়তাবাদী চেতনা খুব আরাম পেল। এর ঠিক ১০ দিনের মাথায় ব্লুমবার্গে কলাম লিখলেন ভারতীয় অর্থনীতিবিদ মিহির শর্মা। কলামের শিরোনাম, সাউথ এশিয়া শুড পে অ্যাটেনশন টু ইটজ স্ট্যান্ডআউট স্টার। আবারও উত্তেজনা। শীর্ষস্থানীয় বেশ কিছু পত্রিকা কলামটি হুবহু অনুবাদ করে ছাপিয়ে দিল। যেন ভারতীয় অর্থনীতিবিদ প্রশংসা করেছেন, এর আগে-পিছে আর কোনো বিশ্লেষণের প্রয়োজন নেই। এরই মধ্যে আমাদের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সর্বকালের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গেল। আবার রিজার্ভ থেকে শ্রীলঙ্কাকে ২০ কোটি ডলার ঋণ দিয়ে বসল বাংলাদেশ। এ নিয়েও গর্বের শেষ নেই। কেউ অবশ্য প্রশ্ন করল না, ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে, কম কম খেয়ে দেশে টাকা পাঠানো আমাদের প্রবাসী শ্রমিকেরা এই মহামারির মধ্যে আসলেই কেমন আছেন? তাঁরা নিজেরা তিন বেলা খেতে পাচ্ছেন তো?
কোভিডে মাথাপিছু আয় বাড়ল কী করে?
এক বছর ধরে মহামারিতে দারিদ্র্য বেড়ে যাওয়া নিয়ে অনেকগুলো জরিপ প্রকাশিত হয়। প্রতিটা জরিপই বলছে, কোভিডের মধ্যে বেকারত্ব
বেড়েছে, দারিদ্র্য বেড়েছে এবং আয় কমেছে। গত বছরের জুন মাসে প্রকাশিত ব্র্যাকের জরিপে দেখা যায়, সোয়া পাঁচ কোটি মানুষের দৈনিক আয় ২ ডলারের নিচে নেমে এসেছে। অক্টোবরে প্রকাশিত বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) জরিপ বলছে, করোনায় সারা দেশের মানুষের আয় কমেছে ২০ শতাংশ। এ বছরের এপ্রিলে প্রকাশিত বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) জরিপ অনুযায়ী, পোশাক, চামড়া, নির্মাণ ও চা—এই চার খাতের ৮০ শতাংশ শ্রমিকেরই মজুরি কমেছে। এপ্রিলেই প্রকাশিত পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টার (পিপিআরসি) এবং ব্র্যাকের জরিপ বলছে, গত এক বছরে দেশের আড়াই কোটি মানুষ নতুন করে দরিদ্র হয়েছে। একই সময়ে প্রকাশিত বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজের ফলাফল হচ্ছে, মহামারির মধ্যে দেশের ৫০ শতাংশ শিল্পপ্রতিষ্ঠানই ৭৬ শতাংশের ওপরে শ্রমিক ছাঁটাই করতে বাধ্য হয়েছে। এত কিছুর পরও আমাদের অর্থ মন্ত্রণালয় অনড়। তারা বলছে, মাথাপিছু আয় নাকি ১৭ হাজার টাকা করে বেড়েছে!
বলা হচ্ছে, রেমিট্যান্স বেড়েছে, তাই বহু পরিবারের আয় বেড়েছে। আসলেও কি রেমিট্যান্স বেড়েছে? মধ্যপ্রাচ্যে প্রবাসী শ্রমিকদের অবস্থা ভয়াবহ। বহু ছোট-বড় ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান এবং নির্মাণ কোম্পানি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিপুলসংখ্যক শ্রমিক কাজ হারিয়ে বিদেশেই আটকে আছেন। ব্র্যাকের সমীক্ষা বলছে, ১৪ লাখ প্রবাসী শ্রমিক ইতিমধ্যে ছাঁটাই হয়েছেন। রামরুর সমীক্ষা অনুযায়ী, এর মধ্যে সোয়া তিন লাখ শ্রমিক দেশে ফেরত এসেছেন। এই অবস্থায় প্রবাসী শ্রমিক রেমিট্যান্স পাঠিয়ে রেকর্ড ভেঙে ফেলেছেন, এ-ও কি সম্ভব?
সংবাদপত্রের প্রতিবেদন কিন্তু বলছে, সার্বিকভাবে রেমিট্যান্স বাড়েনি, বরং মহামারির মধ্যে হুন্ডির আদান-প্রদান প্রায় পুরোটাই বন্ধ হয়ে যাওয়ায় হুট করেই বেড়ে গেছে সরকারি চ্যানেলে টাকা পাঠানোর পরিমাণ। তার মানে এই নয় যে দেশের মানুষের হাতে এখন আগের চেয়ে বেশি টাকা আছে। রামরু বলছে, প্রায় ৭০ ভাগ অভিবাসী পুরুষ কর্মীর পরিবার এ সময় ধারদেনা করতে বাধ্য হয়েছে। অর্থাৎ আনুষ্ঠানিক চ্যানেলে রেমিট্যান্স আসার পরিমাণ বেড়েছে, কিন্তু সামগ্রিকভাবে প্রবাসী শ্রমিকের টাকা পাঠানো বাড়েনি, বরং কমেছে এবং সেটাই স্বাভাবিক। তাহলে আয়টা বাড়ল কার?
আয়টা বাড়ল কার?
বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান হচ্ছে, ঠিক করোনার বছরেই মোট ১০ হাজার নতুন কোটিপতি যুক্ত হয়েছেন ব্যাংক ব্যবস্থায়। আর ৫০ কোটি টাকার ওপরে আমানত রেখেছে, এমন হিসাবের সংখ্যাই বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৩৯০-তে। উল্লেখ্য, ২০১৮ সালে ওয়েলথ-এক্সের প্রতিবেদন থেকে আমরা জানতে পেরেছিলাম, আড়াই শ কোটি টাকার বেশি সম্পদের মালিকদের সংখ্যা বিশ্বের মধ্যে বাংলাদেশেই সবচেয়ে বেশি হারে বাড়ছে। এদিকে মহামারির মধ্যেও অবিশ্বাস্য খরুচে সব প্রকল্পের কাজও থেমে নেই। তার মানে আয়রোজগার কাদের বাড়ছে, কিছুটা আন্দাজ করাই যায়।
গোঁজামিলের পরিসংখ্যান: ভারত ও বাংলাদেশের অভিজ্ঞতা
জিডিপি, মাথাপিছু আয় বা দারিদ্র্যসীমার মতো সূচকগুলো আপাতদৃষ্টে নির্মোহ ইকোনমিক মডেলিংয়ের ফসল। সূচক বা পরিসংখ্যান দেখেই নীতি তৈরি হয়। তাই নিয়ত ভালো থাকলে সঠিক পরিসংখ্যান দিয়েই সঠিক নীতি তৈরি হয়। কিন্তু ‘অ্যাজেন্ডা’ যদি হয় সরকারকে ভালো দেখানো বা গরিবি কম করে দেখানো, পরিসংখ্যান সেখানে গোয়েবলসের মতোই কাজ করে।
যেমন দারিদ্র্যসীমা নিয়ে ভারতে বহু বছর ধরে তুমুল বিতর্ক চলেছে। কোন পদ্ধতিতে মাপা হবে দারিদ্র্য, দৈনিক কত রুপি, কত ক্যালরি গ্রহণ করলে দারিদ্র্যসীমার ওপরে উঠতে পারবে দরিদ্র মানুষ? এসব তর্কাতর্কির মধ্যেই দারিদ্র্য পরিমাপে একেক সময় একেক কমিটি গঠিত হয়েছে ভারতে। ২০০৭ সালে সেনগুপ্তের রিপোর্ট দেখিয়েছিল, ভারতে দরিদ্রের সংখ্যা প্রায় ৮০ কোটি, যা মোট জনসংখ্যার প্রায় ৭৭ ভাগ। বিব্রত সরকার নতুন কমিটি তৈরি করে। ২০০৯ সালে সাক্সেনা কমিটি দেখায়, ৭৭ শতাংশ নয়, ভারতের ৫০ শতাংশ মানুষ গরিব। ২০১১ সালে তেন্ডুলকার কমিটি দৈনিক ন্যূনতম আয়ের শর্ত মাত্র ৩২ রুপিতে নামিয়ে এনে ঘোষণা দেয়, ভারতের মাত্র ২২ ভাগ মানুষ গরিব। অর্থাৎ একেক কমিটি এসে দারিদ্র্যসীমার লাইন টেনে টেনে নামাতে থাকে আর রাতারাতি ২৫-৩০ কোটি ভারতীয়ের গরিবি দূর হয়ে যায়। অর্থাৎ সরকারি অর্থনীতিবিদদের দারিদ্র্য কম করে দেখানোর অ্যাজেন্ডা থেকে দারিদ্র্যসীমার সংজ্ঞাও পাল্টাতে থাকে। কিন্তু দারিদ্র্যসীমার এই দড়ি-টানাটানিতে গরিবের অবস্থার কি পরিবর্তন হয়?
ভারতের প্রবৃদ্ধি যখন নিয়মিত ৭-৮ শতাংশ, তখনো বিশ্বের ক্ষুধার্ত মানুষের তালিকায় ভারত ছিল শীর্ষে। ভারতকে যখন বলা হচ্ছে ‘সুপারপাওয়ার’, ঠিক তখনই ১৯ কোটি ভারতীয় নিয়মিত অপুষ্টিতে ভুগেছে, আর প্রতি আধা ঘণ্টায় আত্মহত্যা করেছেন একজন করে ভারতীয় কৃষক। ৮ শতাংশ জিডিপির দিনেই ভারতীয় অর্থনীতিবিদ উৎসা পাটনায়েক লিখেছিলেন তাঁর বিখ্যাত বই রিপাবলিক অব হাঙ্গার। দেখিয়েছিলেন, বেঁধে দেওয়া দারিদ্র্যসীমা ৩২ রুপিতে মানবদেহের জন্য প্রয়োজনীয় ২ হাজার ৪০০ ক্যালরির খাদ্য কেনা কোনোভাবেই সম্ভব নয়, বরং কিছু কিছু রাজ্যে এই দারিদ্র্যসীমায় ১ হাজার ৫০০ ক্যালরির খাদ্যও মিলবে না। কৃষিবিদ বন্দনা শিবা বলেছিলেন, মিস ইন্ডিয়ার মতো ‘জিরো ফিগার’ হতে চাইলে দৈনিক ১ হাজার ৫০০ ক্যালরি ঠিক আছে, কিন্তু ভারতের কোটি কোটি কৃষক মাঠে কাজ করেন, ফসল বোনেন, ফসল কাটেন। কৃষকের শরীরে দৈনিক ২ হাজার ৪০০ ক্যালরি অপরিহার্য। অর্থাৎ দারিদ্র্যসীমা কোনো খেলার দড়ি নয় যে ইচ্ছেমতো কমাবেন। এদিকে আমাদের দেশের স্বয়ং বিবিএস বলছে, গত এক দশকে সামগ্রিকভাবে মানুষের ক্যালরি গ্রহণের পরিমাণ কমেছে (বিবিএস, খানা আয় ও ব্যয় জরিপ, ২০১৬) কিন্তু তাতে কী। আমরা তো ভারতকে ছাড়িয়েই গেছি। আর কী লাগে?
ভারতে কৃষকের আত্মহত্যার পরিসংখ্যানগুলোও শেষ পর্যন্ত রাজনৈতিক কারণেই লুকোচুরির বিষয়ে পরিণত হয়। যেমন এক দশক আগেও ভারতের অনেকগুলো রাজ্যে কৃষকের আত্মহত্যার সংখ্যা বাড়তে থাকলে রাজ্য সরকারগুলো চাপের মধ্যে পড়ে। দারিদ্র্য লুকানো যায়, কিন্তু মৃত্যু লুকানোর কী উপায়। অদ্ভুত হলেও সত্যি, ২০১৩ সাল পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গসহ ভারতের ১২টি রাজ্যে প্রতিবছর কৃষকের নিয়মিত আত্মহত্যার রেকর্ড থাকলেও ২০১৪ সালে হঠাৎ সেই সংখ্যা শূন্যে নেমে আসে। পরে দেখা যায়, ভারতের ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ড ব্যুরো আত্মহত্যা নির্ণয়ের ‘প্যারামিটার’ই বদলে ফেলেছে। পরবর্তী সময়ে সাংবাদিক পি সাইনাথ খোঁজ নিয়ে দেখলেন, রাজনৈতিক চাপ থাকায় আত্মহত্যার এফআইআর লেখার সময় পুলিশ লিখছে অসহনীয় পেটের ব্যথায় মৃত্যু। কথা তো সত্য। এক বোতল কীটনাশক গিলে ফেললে পেটের ব্যথা হওয়ারই কথা। রাষ্ট্রের চরম ব্যর্থতায় যে আত্মহনন, তাকে ‘পেটের ব্যথা বাড়ছে’ বলে চালিয়ে দেওয়াটাও একধরনের পরিসংখ্যান তো বটেই!
ঘটনা এখানেই শেষ নয়। ভারতে বিভিন্ন সময়ে কৃষকের আত্মহত্যা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে কয়েকটি প্রদেশে গৃহবধূদের আত্মহত্যার সংখ্যাও বাড়তে থাকে। হঠাৎ গৃহবধূরা এত বেশি সংখ্যায় আত্মহত্যা করছেন কেন, এই খবর নিতে গেলে দেখা যায়, আত্মহত্যা করা এসব ‘গৃহবধূ’র একটি বড় অংশই আসলে কৃষক। কিন্তু জমির নিবন্ধন বাড়ির পুরুষ সদস্যটির নামে। কৃষি খাতের চরম বাজারীকরণের ফলে আত্মহত্যা করতে বাধ্য হওয়া এসব নারী মৃত্যুর পরও কৃষকের টাইটেল পাননি। এভাবে গত ২০ বছরে হাজার হাজার কৃষক নারীর আত্মহত্যাকে ‘পারিবারিক কারণে’ গৃহবধূর আত্মহত্যা হিসাব দেখানোর সুযোগ পেয়েছে প্রশাসন।
এ তো গেল ভারতের কথা। আমাদের দেশের পরিসংখ্যানগুলো ঠিক কীভাবে তৈরি হয়? জিডিপির হিসাব নিয়ে আমাদের অর্থনীতিবিদের অভিযোগগুলো শুনে দেখুন। সবাই একবাক্যে বলছেন, সরকারি জিডিপি হিসাবের আগামাথা তাঁরা নিজেরাও ধরতে পারেন না। জিডিপির হিসাব নিয়ে স্বয়ং পরিসংখ্যান বিভাগের একজন সাবেক সচিব প্রথম আলোকে বলেছিলেন, ‘জিডিপি কত হবে, তা আগে ঠিক করা হয়। পরে “ব্যাক ক্যালকুলেশন” করে হিসাব মেলানো হয়।’ ২০১৯ সালে দৈনিক কালের কণ্ঠ বিবিএসের খানা জরিপের গোঁজামিল নিয়ে একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন ছাপে। প্রতিবেদকের ভাষায়, ‘মাঠপর্যায়ে যখন খানা আয়-ব্যয় জরিপের কাজ চলছিল, তখন...প্রকল্পসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা কেউ নিয়মমতো তদারকিতে যাননি। এই সুযোগে ৬৪ জেলার পরিসংখ্যান কর্মকর্তারাও গণনাকারীদের কাছে যাননি। ফলে গণনাকারীরাও বাড়ি বাড়ি না গিয়েই নিজেদের খেয়ালখুশিমতো তথ্য জুড়ে দিয়েছেন ফরমে।’ এ প্রতিবেদনে গোপালগঞ্জ পৌরসভার এক পরিসংখ্যান কর্মকর্তার ভাষ্য ছিল এ রকম, ‘আমরা করবটা কী? গণনাকারী নিয়োগেও চেয়ারম্যান-মেম্বাররা নিজের লোক ঢুকিয়ে দেন। ওরা সব আনাড়ি, পরিসংখ্যানের কাজ কিচ্ছু জানে না...এভাবে রাজনৈতিক নিয়োগের লোকজন দিয়ে কোনো দিন সঠিক তথ্য-উপাত্ত মিলবে না’ (কালের কণ্ঠ, ২০১৯)।
কিন্তু গত এক বছরে দারিদ্র্য যে বেড়েছে, সেটা বুঝতে কি আসলেও পরিসংখ্যানের দিকে তাকাতে হয়? আমাদের কাণ্ডজ্ঞান কী বলে? গত এক বছরে ঢাকার ১০ লাখ রিকশাওয়ালার আয় ঠিক কোন সময়টাতে বাড়ল? ঢাকার পাঁচ লাখ ঠিকা বুয়ার আয় ঠিক কোন সময়টাতে বাড়ল? গত এক বছরে প্রায় সোয়া তিন লাখ পোশাকশ্রমিক ছাঁটাই হয়েছেন। বন্ধ বা লে-অফ ঘোষণা হয়েছে প্রায় ১ হাজার ৯০০ কারখানা। বন্ধ হয়ে যাওয়া পাটকলগুলোর ৪০ হাজার শ্রমিক এখনো তাঁদের পাওনা টাকা পাননি। হোটেল-রেস্টুরেন্টে কাজ করা ২০ লাখ কর্মী গত বছর প্রায় পুরো সময়টাতেই বেকার বসে ছিলেন। পরিবহনশ্রমিকদের একটা বড় অংশও মাসের পর মাস ধারকর্জ করে চলেছেন। ঢাকার রাস্তায় শার্ট-প্যান্ট পরা ভিখারির সংখ্যাও ক্রমাগত বাড়ছে। তাহলে বলুন, আয়টা বাড়ল কার?