বিভিন্ন সেবায় অগ্রিম কর হার পুনর্বিন্যাস

বাজেট ২০২২–২৩
বাজেট ২০২২–২৩

বিভিন্ন ধরনের সেবার বিলের ওপর অগ্রিম আয়কর আরোপ হয়। এবার এ ধরনের আয়করে বড় পরিবর্তন এসেছে। এত দিন কোনো সেবা মাশুল বা সম্মানী ২৫ লাখ টাকার কম হলে ১০ শতাংশ এবং ২৫ লাখ টাকার বেশি হলে ১২ শতাংশ উৎসে অগ্রিম আয়কর কেটে রাখা হতো। ২০২২–২৩ অর্থবছরের বাজেটে এ সীমা উঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। ফলে এখন থেকে সব ধরনের সেবায় একই হারে অগ্রিম কর বসবে। এতে অবশ্য কিছু সেবায় উৎসে কর যেমন বেড়েছে, তেমনি কমেছেও।

এবার দেখা যাক, পুনর্বিন্যাসের পর কোন সেবায় উৎসে কর কত হলো। পরামর্শ সেবা দিলে যে সম্মানী পান করদাতারা, সেখান থেকে এত দিন বিলের টাকার সীমা অনুযায়ী ১০ ও ১২ শতাংশ হারে কর বসত। এখন তা ১০ শতাংশ করা হয়েছে। একইভাবে জনসংযোগ, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট তথা অনুষ্ঠান আয়োজন, ক্যাটারিং—এ ধরনের ১২টি সেবার বিল পরিশোধের সময় ১০ শতাংশ উৎসে কর কেটে রাখা হবে। আগে এ হার বিলের সীমা অনুযায়ী ১০ ও ১২ শতাংশ ছিল।

এখন থেকে সভায় অংশ নিলে কিংবা প্রশিক্ষণে অংশ নিলে সম্মানীর ওপর ১০ শতাংশ হারে উৎসে কর কেটে রাখা হবে। এ ছাড়া ইনডেন্টিং, ক্রেডিট রেটিং, ইন্টারনেটের মতো সেবার ওপরও উৎসে কর ১০ শতাংশ বসবে।

উৎসে কর পুনর্বিন্যাসের ফলে কিছু ক্ষেত্রে আবার কর বেড়েছে। যেমন মোটর গ্যারেজ বা ওয়ার্কশপে গাড়ি মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণ সেবার ওপর আগে বিলের সীমা অনুযায়ী (২৫ লাখ টাকার কম ও ২৫ লাখ টাকার বেশি) যথাক্রমে ৬ ও ৮ শতাংশ হারে উৎসে কর দিতে হতো। এখন এ সীমা সব সেবার জন্যই ৮ শতাংশ করা হয়েছে। প্রাইভেট কনটেইনার পোর্ট বা ডকইয়ার্ড সেবা, শিপিং এজেন্সি কমিশনের ওপরও ৮ শতাংশ হারে অগ্রিম কর আরোপ হবে।

একইভাবে গাড়ি ভাড়া, মেরামত ও সংরক্ষণ মাশুলের পাশাপাশি রাইড শেয়ারিং সেবার ওপর উৎসে কর বেড়েছে। আগে এ হার আগে ৪ শতাংশ ছিল। নতুন বাজেটে তা বাড়িয়ে ৫ শতাংশ করা হয়েছে।

মূলত উৎসে করের ওপর ভরসা করেই আয়কর আদায় হয়।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সূত্রে জানা গেছে, আয়করের প্রায় ৬০ শতাংশ আসে উৎসে কর থেকে। গত ২০১৯-২০ অর্থবছরে এ খাত থেকে প্রায় ৪২ হাজার কোটি টাকা এসেছে। সেবা প্রদানের বিপরীতে বিলের ওপর উৎসে কর কত আদায় হয়, তা অবশ্য আলাদা করে দেখানো হয় না। তবে উপখাতভিত্তিক কিছু হিসাব থাকে। যেমন ২০১৯-২০ অর্থবছরে অভিনেতা-অভিনেত্রীদের সম্মানীর বিপরীতে ১৭ কোটি ৪০ লাখ টাকা উৎসে অগ্রিম কর মিলেছে। আবার বাস-ট্রাকভাড়ার বিপরীতে অগ্রিম কর পাওয়া গেছে ৭৩ কোটি টাকা। এভাবে প্রতিটি সেবার বিপরীতে উৎসে কর পায় এনবিআর।