শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংঘর্ষের পর ক্রেতাদের আস্থা ধরে রাখতে তৎপর এখন নিউমার্কেট ও চন্দ্রিমা মার্কেটের ব্যবসায়ীরা। এ জন্য চলছে প্রচারণা বা মাইকিং। ব্যবসায়ী সমিতির পক্ষ থেকে বারবার বিক্রেতাদের প্রতি আহ্বান জানানো হচ্ছে, কোনোভাবেই যেন বিক্রেতাদের আচরণে ক্রেতারা বিরক্ত না হন।
গত সোমবার রাতে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংঘর্ষের জেরে তিন দিন বন্ধের পর আজ বৃহস্পতিবার সকাল থেকে খুলেছে ঢাকা নিউমার্কেট ও চন্দ্রিমা সুপারমার্কেট। তবে ক্রেতাদের উপস্থিতি খুব বেশি ছিল না। এর মধ্যেও কেন্দ্রীয় শব্দযন্ত্রের মাধ্যমে বারবার ক্রমাগত বেজে চলছিল একটি ঘোষণা। যেখানে ক্রেতাদের সঙ্গে ‘শোভন’ আচরণের জন্য দোকানিদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছিল মার্কেট কর্তৃপক্ষ। ঘোষণায় বলা হয়, ‘কোনো কর্মচারী বা ব্যবসায়ী ক্রেতা সাধারণের সঙ্গে অশোভন আচরণ করতে পারবেন না। ক্রেতাদের কেনাকাটা করতে বাধ্য করা যাবে না। হাত ধরে টানাটানি, ডাকাডাকি বা কাঁধে হাত রেখে ক্রেতাদের দোকানে নেওয়ার চেষ্টা করা যাবে না। ক্রেতারা যেন বিক্রেতাদের আচরণে বিরক্ত বোধ না করেন, সে বিষয়ে সজাগ থাকতে হবে।’ এদিকে এই দুই মার্কেটে আজ দুপুরে সরেজমিনে দেখা যায়, বিক্রেতারা ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলার ক্ষেত্রে বেশ নমনীয়।
এদিকে মার্কেট কর্তৃপক্ষের ঘোষণায় বলা হয়, কারও বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ পেলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অভিযোগ সত্য প্রমাণিত হলে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে মার্কেট বা কাজ থেকে বহিষ্কার এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছেও সোপর্দ করতে পিছপা হবে না ব্যবসায়ী সমিতি।
ঘোষণায় দোকানমালিকদের উদ্দেশে বলা হয়, এই ব্যবসা আমাদের রুটিরুজির উৎস। তাই এমন কিছু করা যাবে না, যাতে এই উৎস ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কর্মচারীদের কারণে যেন আপনার ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সে জন্য সব সময় সজাগ দৃষ্টি রাখবেন।
এসব ঘোষণায় কিছুটা স্বস্তি পাচ্ছেন বলে জানান নিউমার্কেটে কেনাকাটা করতে আসা ক্রেতারা। মিরপুর থেকে আসা ফারজানা ইসলাম বলেন, ‘আজ বেশ ভালোই মনে হচ্ছে। ক্রেতার সংখ্যা কম, আর বিক্রেতারাও তুলনামূলক ভালো আচরণ করছেন। আসার আগে যতটা শঙ্কায় ছিলাম, আসার পরে সে রকমটা আর মনে হয়নি।’
এ বিষয়ে ঢাকা নিউমার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি দেওয়ান আমিনুল ইসলাম বলেন, ক্রেতাদের তরফ থেকে কোনো অভিযোগ এলে সমিতি তা খতিয়ে দেখবে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে কর্মচারী ও এমনকি দোকানমালিকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নিউমার্কেটের পাশে চন্দ্রিমা সুপারমার্কেটও নিয়েছে একই ব্যবস্থা। চন্দ্রিমা সুপারমার্কেট মালিক সমিতির সভাপতি মনজুর আহমেদ বলেন, ‘আমরা ক্রেতাদের বিশ্বস্ততা অর্জনের চেষ্টা করে যাচ্ছি। শিগগিরই মার্কেটের সব বিক্রয়কর্মীর পরিচয়পত্র দিয়ে দেওয়া হবে, যাতে কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ পেলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া যায়।’