বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কারণ দর্শানোর নোটিশের পরিপূর্ণ জবাব যথাসময়ে দাখিল করতে পারেনি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালি। প্রতিষ্ঠানটির ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে রোববার ৯ সদস্যের আন্তমন্ত্রণালয় কমিটি গঠন করেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। কমিটির প্রধান বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ডব্লিউটিও সেলের মহাপরিচালক মো. হাফিজুর রহমান। এ কমিটির প্রথম বৈঠক বসছে আগামী বুধবার। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পাশাপাশি বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, তথ্যপ্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগ, বাংলাদেশ ব্যাংক, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর), জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিরা কমিটিতে থাকছেন। এ ছাড়া থাকছেন কোম্পানি আইন নিয়ে কাজ করা সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী তানজীব উল আলম। কমিটির কার্যপরিধির মধ্যে রয়েছে ইভ্যালির ব্যাপারে পরবর্তী সিদ্ধান্ত গ্রহণ, অন্যান্য ই–কমার্স প্রতিষ্ঠান নিয়ে আলোচনা এবং বিবিধ।
ইভ্যালিকে গত ১৯ জুলাই কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বলেছিল, গত ১৪ মার্চ পর্যন্ত গ্রাহক ও মার্চেন্টদের কাছে মোট ৪০৭ কোটি টাকা দায়ের বিপরীতে ইভ্যালির কাছে মাত্র ৬৫ কোটি টাকা চলতি সম্পদ কেন? বাকি টাকা ইভ্যালির কাছে থাকলে বিস্তারিত তথ্য দিতে হবে, না থাকলে দিতে হবে পরিপূর্ণ ব্যাখ্যা।
ইভ্যালি কারণ দর্শানোর নোটিশের পরিপূর্ণ জবাব দিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কাছে ছয় মাস সময় চেয়ে ১ আগস্ট আবেদন করে। ওই দিন বাণিজ্যসচিব ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রে। দেশে ফিরে আজই প্রথম অফিস করেন বাণিজ্যসচিব।
জানতে চাইলে বাণিজ্যসচিব তপন কান্তি ঘোষ আজ রাতে মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘সবাইকে নিয়ে আমরা বৈঠকে বসছি। ওখান থেকেই সিদ্ধান্ত আসবে, নোটিশের পরিপূর্ণ জবাব দিতে ইভ্যালিকে কত দিন সময় দেওয়া যায়।’
গ্রাহক ও মার্চেন্টদের সুরক্ষা এবং ডিজিটাল কমার্স খাতের ওপর নেতিবাচক প্রভাব প্রতিরোধের লক্ষ্যে ইভ্যালির বিরুদ্ধে কেন আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, তা–ও জানতে চাওয়া হয়েছিল নোটিশে। কোম্পানিটির ব্যবসাপদ্ধতিও জানতে চাওয়া হয়েছিল।
আরও বলা হয়েছিল, ১৫ জুলাই পর্যন্ত গ্রাহক ও মার্চেন্টদের কাছে দায় এবং তা পরিশোধের বর্তমান অবস্থা ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা, ব্যবসা শুরুর পর থেকে গ্রাহকদের কাছ থেকে ইভ্যালি কত টাকা নিয়েছে, মার্চেন্টদের কত টাকা পরিশোধ করেছে এবং প্রশাসনিক ও অন্যান্য খাতে কত ব্যয় করেছে, তার পূর্ণাঙ্গ বিবরণ জানাতে হবে।
ছয় মাস সময় চাওয়ার যৌক্তিকতা সম্পর্কে ইভ্যালির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মোহাম্মদ রাসেল আজ রাতে মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘জবাবগুলো যাতে ভালোভাবে দিতে পারি, সে জন্যই সময়টা দরকার।’ বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের একজন শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তা অবশ্য ইভ্যালির এমডির বক্তব্যে বিশ্বাস রাখতে পারছেন না বলে জানান।